৩৫ বছর বয়সী মিলিয়নিয়ারের অভিযোগ 'জীবন একঘেয়ে'
বিটকয়েনে জীবনের সমস্ত সঞ্চয় বিনিয়োগ করে দ্রুতই বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছেন তিনি। মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই হয়েছেন মিলিয়নিয়ার। তবে এই সম্পদ থেকে এখন তিনি মুক্তি পেতে চাইছেন।
ব্রিটেনের ওই নাগরিক নিজের নাম গোপন রেখে রেডিট-এ তার এই উপলব্ধির কথা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, তার এখন এমন অনুভূতি হচ্ছে যে, তিনি 'চিট কোড' ব্যবহার করেছেন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে এতটা 'সৌভাগ্যবান' হওয়ার যোগ্য তিনি নন।
কনটেন্ট নির্মাতা হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানে মাসিক ২৫ হাজার পাউন্ড বেতনে কাজ করতেন তিনি। বেতনের বেশির ভাগই চলে যেতো সঞ্চয়ে। ১০ বছর কাজ করার পর তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। চাকরিজীবনে তিনি বিপুল পরিমণ অর্থ বিত্তের মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার পর, এখন তার কাছে এ জীবন একঘেয়ে লাগতে শুরু করেছে।
তিনি জানান, বেতনের বড় একটি অংশ সঞ্চয় করায় জীবনে কখনও 'দামি কোনো জিনিসের স্বাদ' তিনি পাননি।
২০১৪ সালে প্রথম ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েন সম্পর্কে তিনি ধারণা পেয়েছিলেন। এরপর থেকেই ডিজিটাল মুদ্রায় বিনিয়োগ করা শুরু করেন। দেড় বছরের মধ্যে তার সঞ্চয়ের পুরো টাকাটাই তিনি বিনিয়োগ করেছিলেন।
ডিজিটাল মুদ্রা বাজারের সীমাহীন ঝুঁকির মধ্যেও তিনি বড় অংকের বিনিয়োগ করে বসলেন। এ ব্যাপারে রেডিটে তিনি লিখেছেন, "আমি জানি এখানে অনেকেই মনে করেন, বিটকয়েন অনেকটাই জুয়া খেলার মত; যেকোনো সময় এর উত্থান পতন হতে পারে। তারপরেও আমি ঝুঁকি নিয়েছিলাম।"
২০১৭ সালে ট্যাক্স বাদ দিয়ে ২ মিলিয়ন বা ২০ লাখ পাউন্ড লাভ করেন তিনি। এরপর থেকেই 'অতিরিক্ত লাভ থেকে বাঁচার' চেষ্টা শুরু হয় তার।
২০১৯ সালে ডিজিটাল মুদ্রা থেকে ২৬ মিলিয়ন পাউন্ড অর্জনের পর, তিনি এইসব কিছু থেকে একটি বিরতি নিতে চেয়েছিলেন। চাকরি করা ছাড়াই জীবনের সব শখ স্বাচ্ছন্দ্য মিটিয়ে ফেলার সক্ষমতা হয়ে গিয়েছিল তার এরই মধ্যে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ এই টাকা সুখের বদলে বিরক্তি আর বিতৃষ্ণায় ভরে দিয়েছে তার জীবন।
যখন তিনি স্বপ্ন পূরণে বেতনের প্রায় পুরোটাই সঞ্চয় করতেন, তখন সম্পদের প্রতি তার যে আকর্ষণ, আগ্রহ আর উত্তেজনা ছিল এখন তার কিছুই নেই। বর্তমান জীবনের দুটি প্রধান সমস্যার কথা রেডিটে উল্লেখ করেছেন তিনি; অর্জিত এই সম্পদ দিয়ে এখন আর তিনি আগের সেই 'আগ্রহ বা উত্তেজনা' কিনতে পারবেন না এবং তার মধ্যে এই আত্মউপলব্ধি হয়েছে, তিনি এই বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার 'যোগ্য' নন।
ব্রিটিশ ওই নাগরিক মনে করেন, চাকরির সঞ্চয় দিয়েই এক সময় তিনি ধনী হতে পারতেন। সেভাবে ধনী হলে পরবর্তী জীবনে তার আত্মতৃপ্তি থাকতো যে, তিনি এই সম্পদ 'অর্জন' করেছেন। যেই তৃপ্তি এখন তার জীবনে নেই।
তিনি বলেন, "মনে হচ্ছে, জীবনে একটি চিট কোড ব্যবহার করে ফেলেছি; এবং আমি এখন জানিনা এই জীবনকে আবারও কীভাবে উপভোগ্য বানানো যায়।"
- সূত্র: ডেইলি স্টার ইউকে