আলেশা মার্ট চলে অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তুকি নিয়ে: এমডি
ই-কমার্স ভেঞ্চার আলেশা মার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুল আলম শিকদার দাবি করেছেন কোম্পানিটি ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা এবং ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে তাদের মালিকানাধীন অন্যান্য লাভজনক অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তুকি নিয়েছে।
রোববার ঢাকার একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "সব ই-কমার্সের মতোই আলিশা মার্টের চেহারা এক হলেও এর পরিচালন প্যাটার্ন আলাদা।"
গত ২১ জানুয়ারি অপারেশন শুরু করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট। গত ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটির ১১শ কোটি টাকা টার্নওভারের বিপরীতে ৩৫০ কোটি টাকা সাবসিডি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, মোট ৩২ হাজার পণ্যের মধ্যে কেবলমাত্র মোটর সাইকেলে উচ্চ ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়, যাতে লস হয়েছে। তবে অন্য পণ্য থেকে ১৪০ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে। সব মিলিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটিতে সাবসিডি ২১০ কোটি টাকা।
বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংক বেশ কয়েকটি ই-কমার্স ভেঞ্চারের পেমেন্ট গেটওয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পর কোম্পানিগুলোর ব্যাংক স্টেটমেন্ট তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরবর্তীতে ই-কমার্স সাইটগুলোর পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সংবাদ সম্মেলনে মনজুল আলম শিকদার দাবি করেন, অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মতোই আলেশা মার্ট-কে জেনারালাইড করা হচ্ছে।
"ব্যাংকগুলোও গ্রাহককে সতর্ক না করে পেমেন্ট গেটওয়ে বন্ধ করে বিপদে ফেলেছে, ইমেজ ক্ষুন্ন করেছে। তারা অনুসন্ধান করার পর গ্রাহককে সতর্ক করতে পারতো কিন্তু তা করেনি।"
তিনি বলেন, "আলেশা মার্ট-এর ব্যবসা প্যাটার্ন অন্যদের মতো নয়। আমরা পাবলিক মানির উপর নির্ভর করে ব্যবসা করি না। ভেন্ডরকে আগে টাকা পরিশোধ করি। পণ্য ডেলেভারি ও রিফান্ড নিয়েও তেমন কোনো অভিযোগ নাই। ছয় মাসে সাড়ে তিন লাখ পণ্য ডেলিভারির বিপরীতে ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ মাত্র ১০টি।"
অল্পসময়ে ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আলেশা হোল্ডিংস একটা আম্ব্রেলা, যার ছায়াতলে ১৯টি প্রতিষ্ঠান আছে। ১১টি চলমান, যার চারটি লাভজনক। বাকি আটটি প্রতিষ্ঠান শিগরিই বাজারে আসবে।"
তার ভাষ্য অনুযায়ী, আলেশা ডেভেলপমেন্টস, আলেশা অ্যাগ্রো, আলেশা সল্যুশনস এবং আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড লাভজনক।
যার মধ্যে আলেশা অ্যাগ্রো ২০১৫ সাল থেকে ব্যবসা করছে। বাকিগুলো নতুন।
বিজনেস স্ট্যান্ডান্ডের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলেশা ডেভেলপমেন্টস রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এর সদস্য না।
আলিশা স্টীল নামে কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কিনা সে বিষয়ে জানেন না বাংলাদেশ স্টিল মিলস ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতারা।
এই সংগঠনটির সভাপতি মো: শহীদুল্লাহ টিবিএসকে বলেন, "এই নামে সংগঠনে কোনো সদস্য নেই। এই শিল্পখাতে তারা নতুন হলেও তাদের কার্যক্রম চোখে পড়েনি।"
আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিস লি. প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কেও তেমন তথ্য নেই খাত সংশ্লিষ্টদের।
মনজুল আলম শিকদার বলেন, "আমাদের ১৯টি প্রতিষ্ঠান, একেকটা প্রতিষ্ঠানকে ব্রান্ডিং করলে অনেক টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আলিশা মার্টে ভর্তুকি দিয়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ডিং করাই ছিল ব্যবসায়িক পলিসি। সারাদেশেই ভুর্তকি দিয়ে ব্রান্ড পরিচিত করার বহু উদহারণ আছে।"
তিনি বলেন, "আমাদের স্ট্রাকচার ছিল ভর্তুকি দিয়ে বাজার ধরা। এখানে একটা কোম্পানী ব্রান্ডিং করে অন্যগুলোর ব্রান্ডিং কস্ট বাঁচাতে পারছি। আমরা একটা শীট তৈরী করি, বিক্রি করতে পারছিলাম না। এখন পারছি। রিয়েল এস্টেটে আছি, নতুন প্রতিষ্ঠান বলে অনেকে জমি দিত না। এখন অনেক দিচ্ছে।"