খেলাপি ঋণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে ছাড়িয়ে গেল বেসরকারি ব্যাংক
খেলাপি ঋণের ভারে বেসরকারি ব্যাংকগুলো নুয়ে পড়ছে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে মার্চ শেষে এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর চেয়ে বেশি হয়েছে।
অবশ্য মোট বিতরণ করা ঋণের অনুপাতে খেলাপির হার সরকারি ব্যাংকগুলোতে অনেক বেশি। মার্চ শেষে সরকারি ব্যাংকে এই হার ২০.৯১ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ৫.১৩ শতাংশ।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫,০৯০ কোটি টাকা, অন্যদিকে সরকারি ব্যাংকগুলোতে ৪৩,৪৫০ কোটি টাকা।
যদিও গেল বছরের ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ সরকারি ব্যাংকগুলোর চেয়ে কম ছিল। ওই সময় বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপির পরিমাণ ছিল ৪০,৩৬১ কোটি টাকা এবং সরকারি ব্যাংকগুলোতে ৪২,২৭৩ কোটি টাকা।
এদিকে, তিন মাসের ব্যবধানে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪,৭২৮ কোটি টাকা এবং সরকারি ব্যাংকগুলোতে বেড়েছে ৩,০৮৯ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ-এবিবি'র সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, যেহেতু বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ সরকারি ব্যাংকের তুলনায় বেশি তাই এসব ব্যাংকের খেলাপির পরিমাণও বাড়ছে।
এদিকে, ডিসেম্বরের তুলনায় মার্চে এসে বিশেষায়িত তিনটি সরকারি ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের খেলাপির পরিমাণ খুব একটা বাড়েনি। তবে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ বেড়েছে ৪২০ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে বিদেশী ওরি ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক নিয়াজ উদ্দিন খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'কোভিডের প্রভাবেই খেলাপি বাড়ছে, এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, গেল বছর কোভিডের কারণে যে ক্ষতিটা হয়েছে তার প্রভাব এই বছর থেকে শুরু হয়েছে'।
একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, 'যে কোন প্রতিষ্ঠান যখন লভ্যাংশ ঘোষণা করে তখন আগের বছরের পারফরমেন্সের উপর তা দেয়া হয়। এক্ষেত্রেও করোনার প্রভাবটা চলতি বছরেই পড়ছে, হয়তো সামনের দিকে আরো বাড়বে'।
তিনি জানান, শুধুমাত্র ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ব্যবসায়ীরা উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সার্বিকভাবে চাহিদা মন্দা থাকায় পণ্য বিক্রি যেমন কমে গেছে, তেমনি বিক্রির টাকাও আদায় হচ্ছে কম। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধে সমস্যা হচ্ছে।