গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিতে পারবেন না ই-কর্মাস মার্চেন্টরা
ই-কমার্স থেকে কেনাকাটায় পণ্য ডেলিভারির পরই পেমেন্টের টাকা বিক্রেতা বা মার্চেন্টরা পাবে বলে জানিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে একটি থার্ড-পার্টি কোম্পানি যারা ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত পেমেন্ট স্থগিত রাখবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে 'ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা' বিষয়ক সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, ডাব্লিউটিও সেল) হাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, "কেবলমাত্র গ্রাহক পণ্য বুঝে পাওয়ার পর এই টাকা মার্চেন্ট বা ওই প্ল্যাটফর্মকে দেওয়া হবে।"
গত ২০ জুন ই-কমার্স নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের পর বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালীর দেনার পরিমাণ ৪০৩.৮০ কোটি টাকা যেখানে কোম্পানিটির চলতি সম্পদ মাত্র ৬৫.১৭ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৪ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত পণ্যমূল্য বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম ২১৩.৯৪ কোটি টাকা নিয়ে পণ্য সরবরাহ করেনি ইভ্যালী। অন্যদিকে, ইভ্যালী যেসব কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য কিনে ওই সব মার্চেন্টদের কাছে কোম্পানিটির বকেয়া ১৮৯.৮৫ কোটি টাকা।
এমন প্রেক্ষিতে ব্র্যাক ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার এবং ঢাকা ব্যাংক ইভ্যালিসহ দেশের ১০টি ই-কমার্স সাইটের সঙ্গে কার্ডে লেনদেন স্থগিত করেছে।
এগুলো হল- ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, কিউকম, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট এবং নিডস।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শমী কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল।
বৈঠকের বিষয়ে আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, "বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স সংক্রান্ত মিটিংয়ে আমরা ই-ক্যাব থেকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম এসওপি অর্থাৎ ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর জন্য পরিচালনা নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করার জন্য এবং ESCROW সার্ভিস চালু করার জন্য। আমাদের এই দুইটা প্রস্তাব গৃহীত হয়। আপাতত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর কাছে ইনস্ট্রাকশন পাঠানো হবে যাতে ক্রেতারা পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে যখন পেমেন্ট করবে তা ক্রেতার কাছে পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার পর ইকমার্স কোম্পানিগুলো টাকা পাবে। ক্যাশ অন ডেলিভারি আগের মতই থাকবে। আমার বিশ্বাস এ সিদ্ধান্তের ফলে লক্ষ লক্ষ উদ্যোক্তা এবং ক্রেতা অনিশ্চয়তায় হাত থেকে রেহাই পাবে।"
আরও পড়ুন:
- ইভ্যালিসহ ১০টি অনলাইন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কার্ডে লেনদেন স্থগিত করল ঢাকা ব্যাংক
- ইভ্যালীসহ ১০টি প্লাটফর্মের সঙ্গে কার্ডে লেনদেন স্থগিত করলো ব্র্যাক ব্যাংক
- ব্যাংক এশিয়াও ইভ্যালীসহ ১০টি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে কার্ডে লেনদেন স্থগিত করেছে
- ইভ্যালির প্রকৃত দায় আরও বেশি হতে পারে: বাংলাদেশ ব্যাংক
- ইভ্যালী: বেপরোয়া নাকি চালাক?
- অনলাইন কেনাকাটার রঙিন দুনিয়া: কেনো সাবধান হতে হবে?