চীন ছেড়ে এশিয়ার অন্য দেশে যাচ্ছে জাপানের ৮৭টি কোম্পানি
মহামারি করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য। এরই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও দরকারি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের প্রশ্নে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে চাইছে জাপান। আর তাই জাপানি কারখানাগুলোকে চীন থেকে সরিয়ে দেশে কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্থানান্তরিত করতে ৮৭টি কোম্পানিকে বিশাল অর্থ সহায়তা দিচ্ছে জাপান। পণ্য সরবরাহের শৃঙ্খলা সুরক্ষিত করতে এবং চীনে উৎপাদনশীলতার ওপর নির্ভরতা হ্রাসের লক্ষ্যে নেওয়া সরকারি কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার।
লক্ষ্য বাস্তবায়নে গত মার্চ মাসে ২.২ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজেরও ঘোষণা দিয়েছেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) জানিয়েছে, কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫৭টির কারখানা জাপানে আর ৩০টি চীন ছেড়ে অন্য দেশে যাচ্ছে। জেট্রোর তালিকা অনুযায়ী, ১৫টি ভিয়েতনাম, ৬টি থাইল্যান্ড, ৪টি মালয়েশিয়া, ৩টি ফিলিপাইন, ২টি লাওস, ১টি ইন্দোনেশিয়া এবং ১টি মিয়ানমার যাচ্ছে।
শুক্রবার জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, বেসরকারি ফেস মাস্ক প্রস্তুতকারী আইরিস ওহাইয়ামা ও শার্প করপোরেশনসহ মোট ৫৭টি কোম্পানি তাদের কারখানাগুলো জাপানে স্থানান্তরে জন্য সরকারিভাবে ৫৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইয়েন (৫৩৬ মিলিয়ন ডলার) ভর্তুকি পাবে।
আরও ৩০টি কোম্পানিকে চীন থেকে ভিয়েতনাম, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কারখানা সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দেওয়া হবে। তবে এসব কোম্পানিকে কি পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তা জানানো হয়নি।
জাপান সরকার এই ৮৭ কোম্পানিকে যে ভর্তুকি দিচ্ছে তা বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কারখানা স্থানান্তর করে দেশে কিংবা অন্য দেশে স্থাপনের জন্য যে বিশেষ তহবিল গঠন করেছে দেশটির সরকার তা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
জাপানি কোম্পানিগুলো নানা পণ্যের ব্যাপারে চীনের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে, জাপানের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা এককভাবে চীনের ওপর নির্ভরশীল থাকা কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ। এ পরিস্থিতিতে চীনের ব্যাপারে একমুখীনতা কমাতে, বিভিন্ন জায়গায় লগ্নি করে ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতেই জাপানি কোম্পানিগুলোকে দেশে স্থিতিশীল করতে চাইছে দেশটি। বিশেষ করে জাপানের স্থিতি ও নিরাপত্তা নির্ভর করে এমন অতি জরুরি পণ্যের ক্ষেত্রে।
জাপানের এ সিদ্ধান্তে চীন উদ্বেগ বাড়ার কথা। কেননা জাপানের লগ্নি প্রত্যাহারের এ সিদ্ধান্ত চীনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।