তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য পরিশোধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের আহ্বান
মার্কিন পোশাক ব্র্যান্ড এবং খুচরা বিক্রেতাদের সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত গার্মেন্টস পণ্যের জন্য ন্যায্যমূল্য পরিশোধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর সভাপতি ফারুক হাসান ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে মার্কিন ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের গার্মেন্টস পণ্য বা পোশাকের দাম দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও যুক্তিসঙ্গত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, "আমাদের কারখানাগুলো নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। গত পাঁচ বছরে উৎপাদন খরচ ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। কিন্তু সেখানে আমাদের পোশাকের দাম প্রতি বছর কমছে। যদিও এটি সত্য, একটি মুক্তবাজার অর্থনীতিতে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া যায় না, কিন্তু তারপরেও ভালো মানের পণ্যের জন্য কেউ কম দামের যুক্তি দিতে পারে না"।
ফারুক হাসান আরও বলেন, "ব্র্যান্ড এবং আমাদের সরবরাহকারীদের মধ্যে সহযোগিতা এবং অংশীদারত্বের ফলে আমরা এখন পর্যন্ত অসাধারণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি এবং ভবিষ্যতে আরো সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সাহায্য করবে।"
বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার উইলসনসহ মার্কিন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন; ইউএসটিআর সহকারি উইলিয়াম জ্যাকসন, এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক জেনিফার লারসন; মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম বিভাগের পরিচালক মরিন হ্যাগার্ড; বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক ফারুক সোবহান, বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মিরন আলী, ম্যাকলার্টি অ্যাসোসিয়েটসের রাষ্ট্রদূত তেরেসিতা শ্যাফার, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন, ওয়ালমার্ট, টার্গেট এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।
ফারুক হাসান তার বক্তব্যে, মার্কিন সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের গত কয়েক বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা এবং ব্যাপক পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত করেন।
বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশের পোশাক শিল্প কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ শিল্পে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পোশাক কারখানা স্থাপন করেছে, তা বক্তব্যে তুলে ধরেন। শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং ব্যবস্থা সম্পর্কেও সংশ্লিষ্ট অংশগ্রহণকারীদের অবহিত করেন তিনি।
টেক্সটাইল শিল্পে বিনিয়োগের সুযোগ বাড়াতে তিনি মার্কিন সরকারকে বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের উপর শুল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
এছাড়া, তিনি একটি সমন্বিত আচরণবিধির প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন। তার মতে, একাধিক অডিট বা নিরীক্ষা, সময় এবং অর্থের অপচয় করার সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোক্তাদের জন্য বেশ জটিল পরিস্থিতি তৈরি করে, যা ব্যবসা বান্ধব নয়।
গত মাসে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী লাস ভেগাসে 'মেনস অ্যাপারেল গিল্ড ইন ক্যালিফোর্নিয়া' –তে অংশগ্রহণকারীদের বলেছিলেন, বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হল, মার্কিন বাজারের একটি বড় অংশের অংশীদারত্ব অর্জন করা। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রতিবছর ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করছে।
- সূত্র: জাস্ট স্টাইল