দেশে প্রতি মাসে ৭৫ লাখ রাইড সেবা নিচ্ছেন গ্রাহক
পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পড়েছে প্রযুক্তি বিপ্লবের ছোঁয়া। যার স্পর্শে পাল্টে যাচ্ছে আধুনিক জীবনযাপনের সংজ্ঞাটা। এই অবস্থায় দেশের কিছু উদ্যোক্তা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মোবাইল অ্যাপ নির্ভর রাইড শেয়ারিং ব্যবসা শুরু করলে যোগাযোগ ব্যবস্থার পুরো চিত্রটাই বদলাতে থাকে।
রাজধানী ঢাকায় এই পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি চোখে পরে। জনসংখ্যা ঘনত্বের এই শহরে ট্র্যাফিক জ্যাম এড়িয়ে সুলভমূল্যে পরিবহন সেবা পাওয়ার সুযোগ, ইন্টারনেট সংযোগের কল্যাণে রাইড শেয়ারিংকে বিপুল জনপ্রিয় করে তুলেছে ।
২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় প্রতি মাসে ৬০ লাখ রাইড বুক করেছেন গ্রাহকরা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এসে এ সংখ্যা মাসে ৭৫ লাখে উন্নীত হয়েছে।
শুধুমাত্র গত বছরের জুলাই নাগাদ দেশে মোট ১০টি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনার লাইসেন্স নিয়েছে। এরা হলো; পিকমি লিমিটেড, পাঠাও, ওভাই, চালডাল, আকাশ টেকনোলজি, এজ্জার টেকনোলজি লিমিটেড, সেজেস্টা লিমিটেড, সহজ লিমিটেড এবং উবার বাংলাদেশ।
তবে লাইসেন্স নিলেও অনেক কোম্পানি এখনও বাজারে তাদের সেবা চালু করেনি। ইতোমধ্যেই, চালু হওয়া কোম্পানিগুলোর মাঝে এখন সিংহভাগ বাজার অংশীদারিত্ব মূলত; উবার, সহজ এবং পাঠাও এই তিন কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে।
রাইড শেয়ারিং পরিষেবা ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন রাজধানী ঢাকাবাসী। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউডের এক গবেষণা বলছে, দেশের বাজারে এখন রাইড শেয়ারিং ব্যবসার আর্থিকমূল্য ২২শ' কোটি টাকা। এটা মোট পরিবহণ বাণিজ্যের ২৩ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির পরিচালক
এই পরিষেবা সাধারণ যাত্রীদের এমন কিছু সুবিধা দিচ্ছে যা প্রচলিত পরিবহন ব্যবস্থায় অনুপস্থিত । আর কোম্পানি ভেদে বা গ্রাহকের পছন্দানুসারে পরিষেবা প্রদানকারী যানবাহনের ভিন্নতাও আছে। গ্রাহকেরা চাইলেই তিন চাকার অটোরিক্সা বা সিএনজি থেকে শুরু করে মোটর সাইকেল, কারে রাইড বুকিং দিতে পারেন।
দূরত্ব অনুসারে ভাড়া অনলাইনেই জানার সুযোগ থাকায় পরবর্তী সময়ে এই নিয়ে চালকের সঙ্গে দর কষাকষি বা বিবাদেরও সুযোগ নেই। এই সুবিধা প্রচলিত পরিবহন ব্যবস্থায় অনুপস্থিত এবং ক্ষেত্র বিশেষে যাত্রীদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলে।
ঢাকায় সিএনজি ও ট্যাক্সি ক্যাব চালকেরা সুযোগ পেলেই যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়ার চেষ্টা করেন। একারণেই সাধারণ মানুষের কাছে দিনে দিনে রাইড শেয়ারিং অ্যাপের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সে ইতোপূর্বে প্রকাশিত এক সংবাদে জানানো হয়, বর্তমানে শুধুমাত্র পাঠাও'য়ের কাছেই প্রায় ২ লাখ নিবন্ধিত চালক আছেন। অর্থাৎ, রাইড শেয়ারিং ব্যবসাগুলো এখন প্রচুর মানুষের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের উৎস হয়ে উঠছে।