মহামারির মধ্যেও এক বছরে স্কুল শিক্ষার্থীদের আমানত বেড়েছে ২০ শতাংশ
করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের মানসিকতা থেমে নেই। ব্যাংকে রাখা তাদের আমানতের পরিমাণ বাড়ছে।
চলতি বছরের এপ্রিল শেষে এর পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই করছে, যা গেল বছরের মার্চের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। একই সাথে গেল বছরের মার্চের চেয়েও এই হার বেশি।
গেল বছরের মার্চে স্কুল শিক্ষার্থীদের আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪.২৪ শতাংশ আর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এতে দেখা যায়, স্কুল শিক্ষার্থীদের আমানতের সিংহভাগই শহরাঞ্চলে। ১,৯৮৬ কোটি টাকা আমানতের মধ্যে শহরাঞ্চলে ১,৪৯৩ কোটি টাকা এবং গ্রামাঞ্চলে ৪৯৩ কোটি টাকা।
পাশাপাশি স্কুল শিক্ষার্থীদের একাউন্ট সংখ্যাও বাড়ছে। চলতি বছরের এপ্রিলে গেল বছরের এপ্রিলের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেড়ে একাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ৫১৩টি। এর মধ্যে ছাত্রদের একাউন্ট সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ এবং ছাত্রীদের প্রায় সাড়ে ১২ লাখ।
এদিকে গ্রামের তুলনায় শহরে একাউন্ট বৃদ্ধির হার বেশি। গ্রামাঞ্চলে গেল এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে মাত্র ৪.২৭ শতাংশ বেড়ে স্কুল ব্যাংকিং একাউন্ট এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৫৯ হাজারে। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে একই সময়ে ১১.৩২ শতাংশ বেড়ে একাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ লাখ ২৫ হাজারের বেশি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, সার্বিকভাবে অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায় স্কুল ব্যাংকিং এ আমানত ও একাউন্ট সংখ্যা বাড়ছে।
এছাড়া করোনায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্যাংকের মাধ্যমে টিউশন ফি দিতে হয়েছে। এই কারণেও একাউন্ট ও আমানত বেড়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র।
স্কুল ব্যাংকিং কে জনপ্রিয় করতে এসব একাউন্টের আমানতের মুনাফার ওপর উৎসে কর কমানোর জন্য গেল বছরের নভেম্বরে রাজস্ব বোর্ডের কাছে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
১৮ বছরের কম শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যেহেতু স্কুল ব্যাংকিং একাউন্টগুলো অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়, তাই যেসব অভিভাবকের ই-টিআইএন নাম্বার আছে সেই সব একাউন্টের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং যার ই-টিআইএন নাম্বার নেই সেক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কর কাটা যেতে পারে। তবে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, তার কাছে উৎসে কর ছাড়ের অনুরোধের বিষয়ে বিস্তারিত কোন তথ্য নেই। তবে এই ধরনের উদ্যোগ কার্যকর হলে স্কুল ব্যাংকিং এর জনপ্রিয়তা আরো বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।