চট্টগ্রাম বন্দরে বেড়েছে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং, নভেম্বরে রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরুতে তিন মাস ক্রমাগত কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কমার পর নভেম্বর মাসে বেড়েছে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং। অক্টোবর মাসের তুলনায় নভেম্বরে আমদানি কন্টেইনার ৩,৯৭৩ টিইইউস এবং রপ্তানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে ৪২ টিইইউস।
এছাড়া চলতি অর্থবছরের মাস হিসেবে নভেম্বরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে রেকর্ড ৫,৫৫৮.৭২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী করোনা পরবর্তী উৎপাদন সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারা, ডলার সংকট ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের মধ্যেও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির এই চিত্র ইতিবাচক। এই ধারা অব্যাহত থাকলে সংকট ধীরে ধীরে কমে আসবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, "নভেম্বরে আমদানি-রপ্তানি এবং কাস্টমস রেভেনিউ বৃদ্ধিকে আমি ইতিবাচকভাবে দেখছি।"
তিনি টিবিএসকে বলেন, "আমদানি বাড়লে রপ্তানির পরিমাণও বাড়বে। তবে সামগ্রিক উৎপাদন এবং আমদানি-রপ্তানির স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও সময় লাগবে।"
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক অঞ্জন শেখর দাস টিবিএসকে বলেন, "নভেম্বরে আমদানি-রপ্তানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এবং রাজস্ব আয় বাড়লেও আমরা শীঘ্রই সংকট কাটিয়ে উঠার সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ এখনো ডলার সংকটে আমদানিকারকরা প্রয়োজন অনুযায়ী আমদানি করতে পারছেনা। তৈরী পোষাক কারখানাগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ অর্ডার কম। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হওয়া ছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের এই সংকটের আপাতত সমাধান দেখছি না।"
চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসের চেয়ে আগস্টে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ বাড়ে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবরে দুই মাস ক্রমাগত কমার পর নভেম্বরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং পরিমাণ বাড়ে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয় ২৫৮৬২.২৪ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ২২৪৫২.৮৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে ৩৪০৯.৩৭ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে তার আগের বছরের তুলনায় ২০ ধরনের পণ্যে ৬৫৮০৩৬ মেট্রিক টন আমদানি কমেছে, যা প্রায় ৫৪ শতাংশ। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে আখের চিনি, সুপারি, আপেল, ফ্রেশ ভেসেল, ভাসমান কাঠামো, মোটরগাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন, স্টিল, পেট্রোলিয়াম অয়েল, শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের অংশ, মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর এবং অন্যান্য বিভিন্ন কাঠামো।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের সকল সমুদ্রবন্দর দিয়ে পরিবহন হওয়া কন্টেইনারের ৯৮ শতাংশ পরিবহন হয়। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিইইউস কন্টেইনার। দেশের সমুদ্রবন্দর দিয়ে আসা আমদানি পণ্যের শুল্ক আদায় করে কাস্টম হাউস।