অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসেই লক্ষ্যমাত্রার ৫৪% ঋণ বিতরণ কৃষি খাতে
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কৃষিখাতে ১৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যা পুরো অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৫৪%। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য কৃষিখাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। কৃষি ঋণ বিতরণে ব্যাংক খাতের সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম হলেও পিছিয়ে আছে ২৫টি ব্যাংক। এদের মধ্যে কিছু ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার কাছে। আবার কিছু ব্যাংকের অবস্থা একেবারেই নাজুক।
যদিও ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮৩৯১ কোটি টাকা, সেই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার পুরোটাই বিতরণ হয়েছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে সকল পণ্যের দাম ব্যাপক বেড়েছে। আমাদের দেশের খাদ্যজাত পণ্য আমদানির চেয়ে দেশে উৎপাদনের প্রতি সরকার বেশি মনোযোগী। তাই কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে, এ কারণে ঋণের প্রবৃদ্ধি ভালো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে শস্য খাতে বিতরণ করা হয়েছে সাত হাজার ৯১৫ কোটি টাকা, সেচ সরঞ্জাম কিনতে দেয়া হয়েছে ১৪৯ কোটি, কৃষি সরঞ্জাম কিনতে ১১৩ কোটি, গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগির খামারে ৩ হাজার ৪৮৫ কোটি, মৎস্য খাতে ২ হাজার ১৮ কোটি, শস্য গুদামজাত এবং বিপণনে ৮৭ কোটি, ব্যক্তিগত খাতে এক হাজার ১৪ কোটি এবং অন্যান্য খাতে এক হাজার ৯০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) কৃষকদের কাছ থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ১৬৪২৯ কোটি টাকা। যা কেন্দ্রীয় এই সময়ে বিতরণকৃত ঋণের প্রায় সমান। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে এই খাত থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ১৩৫৯৩ কোটি টাকা।
দেশে প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি কৃষি ঋণ বিতরণ করে কিছু ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক আছে যারা প্রতিবছরই ব্যর্থ হয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে।
সম্প্রতি কৃষিখাতে ব্যাংকগুলোর লক্ষ্যমাত্রা ব্যর্থ হলে সেই অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণের জন্য অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ) গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সই নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষি ও পল্লী ঋণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণ করতে না পারলে অবশিষ্ট অর্থ এই ফান্ডে জমা রাখতে হবে। কৃষি খাতে অধিক ঋণ দিতে সক্ষম ব্যাংকগুলোকে এই তহবিল থেকে অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এছাড়া কৃষিখাতে ঋণ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের নভেম্বরে বোরো মৌসুমের আগে ৪% সুদে কৃষি ঋণের জন্য ৫,০০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প ঘোষণা করে। কিন্তু আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কৃষকেরা সেভাবে সাড়া দেন নি।