বাজেটে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা ও প্রকল্প অর্থায়নে অগ্রাধিকার
আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাজস্ব আয় বাড়ানো ও আমদানি-জনিত মূল্যস্ফীতির মতোন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এরমধ্যেই সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্পগুলোয় অর্থায়ন অব্যাহত রেখে- বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধিকে চাঙ্গা রাখার চ্যালেঞ্জও নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। এমনটাই জানা গেছে অর্থ বিভাগের একটি নথি সূত্রে।
অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, মন্ত্রিসভার জন্য প্রস্তুত করা অর্থ বিভাগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের সার-সংক্ষেপে চিহ্নিত আটটি মূল চ্যালেঞ্জের মধ্যে ভর্তুকির চাহিদা মেটানোর বিষয়টিও রয়েছে।
আরেকটি প্রতিবন্ধকতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি।
আগামী ১ জুন, জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসব চ্যালেঞ্জ নির্ধারণ এবং তা মোকাবিলা করতে আগামী বাজেটে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা-ও তুলে ধরা হয়েছে নথিতে।
'২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট এবং নির্দিষ্টকরণ বিল, ২০২৩ অনুমোদন' শিরোনামের সার-সংক্ষেপে রাজস্ব সংগ্রহের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে আগামী বছরের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
এছাড়া, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে অবকাঠামোগত সংস্কার অব্যাহত রাখা ও বিনিয়োগ পরিবেশ আরও ব্যবসাবান্ধব করে কোভিড-উত্তর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বেগবান করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখাকে আগামী অর্থবছরের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
চলতি অর্থবছরের বাজেটেও আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ নির্ধারণ করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে কয়েকটি আগামী অর্থবছরের জন্যেও থাকছে, আর অন্যগুলো নতুন। চলতি অর্থবছরের বাজেটে আমদানি-জনিত মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ; তেল, গ্যাস ও সারের বিপুল ভর্তুকি প্রদান, রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর মতো বিষয়গুলোকে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যা নতুন অর্থবছরেও থাকছে।
নিম্ন-অগ্রাধিকারের প্রকল্পগুলো পিছিয়ে দেওয়া চলতি অর্থবছরের জন্য একটি মূল চ্যালেঞ্জ ছিল, তারপরও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর জন্য অপর্যাপ্ত বরাদ্দ আগামী অর্থবছরের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে। অথচ বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পকে বড় বিনিয়োগের একটি অনুঘটক হিসাবে মনে করা হয়। এছাড়া, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রসারিত করা চলতি অর্থবছরের অগ্রাধিকার ছিল – মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের দুর্দশা অব্যাহত থাকায় সেটা আগামী অর্থবছরেও থাকবে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তিখাত শক্তিশালী করা, রপ্তানি বাজার প্রসার ও ব্যবসাবাণিজ্যের পরিবেশ উন্নতিকেও অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
আগামী ১ জুন, জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে এটি অনুমোদনের পর জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের জন্য ৭,৬১,৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান মেয়াদের পঞ্চম বাজেট।
কৃচ্ছ্রসাধনের পরও, ভর্তুকির চাপ বাড়ছে
ভর্তুকি, বেতন-ভাতা ও ঋণের সুদসহ সরকারের জরুরি অত্যাবশকীয় ব্যয় মেটাতে গিয়ে কোভিডকালীন সময় থেকেই বাজেট ঘোষণার পরপরই উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ ব্যয়ের ক্ষেত্রে শর্তারোপ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত তিন অর্থবছর ধরে বাজেটে অনেক প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হলেও- টাকার অভাবের কারণে সেসব প্রকল্পে কোন অর্থ ব্যয় করা যাবে না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ বিভাগ।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি হিসেবে ৭৪,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও আরও বেশি চাহিদার কারণে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ ও কৃষিখাতে প্রায় ৬০,০০০ কোটি টাকার ভর্তুকি বকেয়া থাকছে; যা আগামী অর্থবছরের বাজেট থেকে মেটাতে হবে। ফলে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ ১,১০,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হচ্ছে।
কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব নাহলে- আগামী অর্থবছরও সরকারের জরুরি ব্যয় মেটানোর পর উন্নয়ন প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ সঞ্চালন করাকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
নির্বাচনী বছরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা
নির্বাচনী বছরের বাজেটে ''ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগে ইতিবাচক পরিবর্তন, কৃষিখাতে সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো উন্নয়নে সমন্বিত কার্যক্রম এবং সরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এডিবির আকার ও এর বাস্তবায়ন বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে''- মনে করছে অর্থ বিভাগ।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো এবং বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে বলে মন্ত্রিসভার জন্য প্রস্তুত করা সার-সংক্ষেপে উল্লেখ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে গুরুত্ব
বাজেটের খসড়ায় আমদানি-জনিত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সুরক্ষা থেকে দিতে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ ও ভাতার হার বৃদ্ধি এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্প মূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি সম্প্রসারণের কথা বলা হয়েছে।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৭.৫% প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তিখাত শক্তিশালী করার উপর বাজেটে জোর দেওয়া হয়েছে এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের বকেয়া ভর্তুকি পরিশোধের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে যেকোন আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলায় অপ্রত্যাশিতখাতে ৪,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে অর্থ বিভাগ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এখাতে বরাদ্দ ছিল ৩,০০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ১,০০০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে।
একইসাথে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে রপ্তানি বৃদ্ধিকরণ ও বাজার সম্প্রসারণ, ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে অর্থ বিভাগ।
গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কমানোর ওপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে
মন্ত্রিসভার জন্য প্রস্তুত করা সার-সংক্ষেপে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন, গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ, বেকারদের কর্মসৃজন এবং পল্লী উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় উপযুক্ত কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা, কৃষি গবেষণা, যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন, এবং নারী বান্ধব কর্মপরিবেশ সৃজনে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে আগামী বাজেটে ।
২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল লক্ষ্যগুলো পূরণ নাহলেও উপেক্ষিত হয়েছে নতুন বাজেটে
চলতি অর্থবছরের বাজেটেও আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ নির্ধারণ করা হয়; যেগুলো কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জিত না হলেও এবার তা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে না অর্থ মন্ত্রণালয়। যেমন চলতি অর্থবছরের বাজেটে আমদানি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখার কথা বলা হয়েছিল।
গত মার্চ ও জুনের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের যে পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, তা থেকে রিজার্ভের পরিমাণ বেশ কম থাকলেও – আসন্ন বাজেটে রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখার বিষয়টিকে বাজেটে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেনি অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে আইএমএফ এর পরামর্শ মেনে রিজার্ভ বাড়াতে আমদানি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। গতবারের একই সময়ের তুলনায় এবার এপ্রিলে বেসরকারিখাতের ঋণ প্রবাহ কিছুটা বাড়লেও, মুদ্রানীতিতে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে পারেনি। আগামী বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেনি অর্থ মন্ত্রণালয়।
গত বাজেটে ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদ হার অপরিবর্তনীয় রাখাকে চ্যালেঞ্জ মনে করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। কিন্তু, আইএমএফ এর শর্তের কারণে জুলাই থেকে সুদ হারের সীমা তুলে নিতে হবে। তাই এ বিষয়টি এড়িয়ে গেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ টিবিএসকে বলেন, আগামী বাজেটের জন্য এক নম্বর চ্যালেঞ্জ হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। আর দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হবে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো।
'রাজস্ব আয় বাড়ানো গেলে বাকি চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা কোন কঠিন কাজ নয়। তাই রাজস্ব আয় বাড়ানোর দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতে হবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে'- জানান তিনি।
তিনি বলেন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা আগামী অর্থবছরের জন্য অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। এছাড়া, চলতি অর্থবছর প্রায় ১১ লাখ শ্রমিক নতুন করে বিদেশে গেলেও রেমিট্যান্স না বাড়াটাও সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। রেমিট্যান্স কেন বাড়ছে না, তা খতিয়ে দেখে সমাধানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
ব্যাংক ও আর্থিকখাতের ব্যবস্থাপনা উন্নয়নও নতুন অর্থবছরের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ বলে জানান তিনি।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান- পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ সৃষ্টির মূল কারণ রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি। টাকা থাকলে বাকি সমস্যাগুলো মোকাবেলা করা সহজ হত বা সমস্যাগুলো হতই না। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হওয়ায় এই চ্যালেঞ্জগুলো সৃষ্টি হয়েছে।
তার মতে, রাজস্ব বাড়ানো না গেলে এসব চ্যালেঞ্জ উৎরানো সম্ভব হবে না। সরকারকে বসে থাকলে হবে না। সংস্কার উদ্যোগ নিতে হবে এবং বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে।
তিনি বলেন, রাজস্ব খাতে সংস্কারের পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতিতে বিশেষ করে ব্যালান্স অব পেমেন্ট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো, মূল্যষ্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে হবে। ফরেন কারেন্সি রিজার্ভ লস বন্ধ করতে হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শুধু সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানো ও ভাতা বৃদ্ধি যথেষ্ঠ নয়। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা ও ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি রাজস্ব নীতির আওতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য সরকার শুল্ক ছাড় দিতে পারে। এছাড়া, মুদ্রানীতির আওতায় সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।
"এসব করেও বর্তমান পরিস্থিতিতে মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। এজন্য দরকার হবে বাজারে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কারণ, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেশন করে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে।"
রাজস্ব আহরণ বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, "সরকারের ফিসক্যাল স্পেস কমে গেছে। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে, যা মধ্যমেয়াদে ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হবে। কোথায় ভর্তুকি রাখবে, কোথায় রাখবে না, সে বিষয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। বর্তমানে সরকার জ্বালানি তেলে মুনাফা করছে। এর দামও কমানো উচিত।"