আবারও ডলারের দরবৃদ্ধি: রেমিট্যান্সে ৫০ পয়সা, রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ১ টাকা করে বাড়ল
রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় — উভয় ক্ষেত্রে ডলারের দাম নতুন করে বেড়েছে। রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ১০৮.৫০ টাকা ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ১০৭ টাকা করা হয়েছে নতুন দামে।
অ্যাসোসিয়েশন অভ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)-এর চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আরএফ হোসেন টিবিএসকে জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১ জুন) থেকে নতুই এই দাম কার্যকর করবে ব্যাংকগুলো।
এবিবি ও বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)-এর এক অনলাইন সভায় বুধবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় দেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা অংশ নেন।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম এক টাকা করে বাড়িয়ে যথাক্রমে ১০৮ ও ১০৬ টাকা করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, মে মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে ১.৪২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
গত দুইমাস ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাফেদা নির্ধারিত ডলারের দামেই রেমিট্যান্স আনার জন্য চাপ দেওয়ায় রেমিট্যান্স কমছে বলে দাবি করেছেন ব্যাংকারেরা।
কিন্তু দর বেশি হলে রেমিট্যান্স মাসে ২.৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতো বলে জানান তারা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাফেদা ও এবিবি এক যৌথ সভায় ডলারের দাম রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ১০৮ টাকা ও রপ্তানি আয়ের জন্য ৯৯ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর নভেম্বরে রেমিট্যান্সের ডলারদর এক টাকা কমিয়ে ১০৭ টাকা করা হয়েছিল।
কিন্তু রপ্তানিয়ের আয়ের ডলারমূল্য ধীরে ধীরে বাড়ানো হয়। কিন্তু গত ছয়মাসে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম বাড়ানো হয়নি।
তবে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে রেমিট্যান্স এনেছিল ব্যাংকগুলো।
মার্চ মাসে এক ডলারের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১১৪ টাকা পর্যন্ত দিয়েছিল অনেক ব্যাংক।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এ বিষয়টি নিয়ে 'বৈদেশিক মুদ্রা আনতে রেমিট্যান্স প্রেরকদের নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দাম দিচ্ছে ব্যাংকগুলো' শিরোনামে খবর প্রকাশিত হলে টনক নড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ব্যাংকারদের এক সভায় বাফেদার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম না দেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কড়া নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাফেদার নির্ধারিত দর না মানা ১০টি ব্যাংকের সঙ্গে আলাদাভাবেও আলোচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
উচ্চ দাম দেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা ২০টির বেশি থাকলেও ওই সভার পর বেশিরভাগ ব্যাংক ডলারে দাম ১০৭ টাকা করে ফেলে। এরপর থেকেই তার প্রভাব পড়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর।
গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ডলারে দাম বাড়ানো হলো।
একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিবিএসকে বলেন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ডলারের দরবৃদ্ধির ফলে ডলারের জন্য ব্যাংকগুলোকেও এখন বেশি খরচ করতে হবে। ফলে আমাদানি বিলের ক্ষেত্রে ডলারের দাম অল্প বাড়বে।