ট্রেজারি বিলের ইন্টারেস্ট রেট ১১% ছাড়িয়েছে
সরকারের স্বল্পমেয়াদে ঋণ নেওয়ার অন্যতম মাধ্যম ট্রেজারি বিলের ইন্টারেস্ট রেট ১১% ছাড়িয়েছে; এক সপ্তাহে বেড়েছে ৫০ বেসিস পয়েন্ট।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রোববার ১০.৮০% সুদে ৪২১৮ কোটি টাকার ৯১ দিন মেয়াদী ট্রেজারি বিল কিনেছে সরকার। একইদিনে ১১% সুদে ৫০১ কোটি টাকার ১৮২ দিন মেয়াদী ট্রেজারি বিল ও ১১.২০% সুদে ৪২২ কোটি টাকার ৩৬৪ দিন মেয়াদী ট্রেজারি বিল কিনেছে সরকার।
এর আগে সর্বশেষ ২৬ নভেম্বর ট্রেজারি বিলের অকশনে ১৮২ দিন মেয়াদী ট্রেজারি বিলের সুদ ধরা হয় ১০.৫০%।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেসরকারি ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দেওয়ার পরিবর্তে ট্রেজারি বিল এবং সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করে বেশ কিছু সুবিধা পায়।
সরকারি খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য কোন মূলধনের প্রয়োজন নেই। এ খাতের ঋণ নিরাপদ কারণ সরকার নিজেই এর গ্যারান্টার, এবং এক্ষেত্রে প্রদত্ত সুদের হারও বেশি। ফলে ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতের তুলনায় সরকারকেই ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়।
ব্যাংকিং কর্মকর্তারা বেসরকারি খাতের বদলে সরকারি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদের হার ৩৭৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে যাওয়ায় সরকারের কাছে ঋণ দেওয়া বেশি লাভজনক।
১৮২ দিনের এই ট্রেজারি বিলের ইন্টারেস্ট রেটের উপর ভিত্তি করে সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল (স্মার্ট) বের করা হয়। এই স্মার্টের উপর ভিত্তি করে লোনের ইন্টারেস্ট রেট নির্ধারিত হয়। এসব বিলের ইন্টারেস্ট বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো, সামনের দিনগুলোতে লোনের ইন্টারেস্ট রেট আরো বাড়বে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান টিবিএসকে বলেন, "সরকারের এখন অনেক বেশি লোন দরকার। ইন্টারেস্ট রেট এখানে কোনো ফ্যাক্টর না। ব্যাংক খাত থেকেই সরকার বেশি লোন নিতে চাওয়ায় সুদের হার বাড়ছে। এছাড়া ব্যাংকগুলো এখন লোন দেওয়ার তুলনায় ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী। এর অন্যতম কারণ এসব বিলের ইন্টারেস্ট রেট সাধারণ লোনের ইন্টারেস্ট রেটের প্রায় সমান। এছাড়া বিলে ইনভেস্ট করা লোন দেওয়ার চাইতে বেশি সিকিউরড। এসব কারণে ব্যাংকগুলোও ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।"
বেসরকারি ঋণগ্রহীতাদেরকে সর্বোচ্চ ১১.২২% সুদে ঋণ দিতে পারে ব্যাংক। কিন্তু খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি সহ কিছু জটিলতার কারণে ব্যাংকগুলোকে কম সুদ হারে ঋণ দিতে হয়।