তারল্য সংকটে থাকা সাত ব্যাংককে ২২ হাজার কোটি টাকা ধার দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
তারল্য সংকটে থাকা সাত ব্যাংককে ২২ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত ২৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক তিন দিনের জন্য 'লেন্ডার অব দি লাস্ট রিসোর্ট' হিসেবে সাত ব্যাংককে এই টাকা ধার দিয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত ব্যাংকগুলোকে ধার দিয়ে থাকে বলেও জানান তিনি।
মেজবাউল হক বলেন, 'ব্যাংক কোম্পানি অ্যাক্টের ক্ষমতাবলে ব্যাংকগুলো সিকিউরিটিজের পাশাপাশি ডিমান্ড প্রমিজরি নোটের [প্রতিশ্রুতিপত্র] মাধ্যমে টাকা ধার নিতে পারে।'
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নেওয়া সাত ব্যাংকের মধ্যে পাঁচটি ইসলামি ধারার ব্যাংক ও দুটি বেসরকারি তফসিলি ব্যাংক।
ব্যাংকাররা বলেন, খারাপ আর্থিক পরিস্থিতি কৃত্রিমভাবে ভালো দেখাতে এসব সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিতে হলে ব্যাংকগুলোকে বিল, বন্ড জমা রাখতে হয়। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ধার দিতে পারে না।
টাকা ধার নিতে এই সাত ব্যাংকের কাছে ব্যবহারযোগ্য বিল-বন্ডও নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, পাঁচ শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্টও দীর্ঘদিন ধরে ঘাটতিতে।
এ কারণে প্রতিশ্রুতিপত্র (ডিমান্ড প্রমিজারি নোট) দিয়ে টাকা ধার করতে হয়েছে সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংককে।
এই প্রতিশ্রুতিপত্রের মাধ্যমে যেকোনো উপায়ে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ব্যাংকগুলোকে মাত্র তিন দিনের জন্য এসব টাকা ধার দেওয়া হয়েছে। এই টাকা ব্যাংকগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা মতিঝিল অফিসের অ্যাকউন্টে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোর এই টাকা স্থান্তর করার সুযোগ নেই।
'১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফের এই ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে যাবে। মাঝখানে ব্যাংকগুলোর বছর শেষে ব্যালান্স শিট সুন্দর রইল। তবে জানুযারি থেকে ফের ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর) এবং স্ট্যাটুটরি লিকুইডিটি রেশিও-এর (এসএলআর) এর ঘাটতির জন্য জরিমানা গুনতে হবে,' বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, আমানতকারীদের সুরক্ষায় প্রতিটি ব্যাংকের মোট কারেন্ট ও টার্ম ডিপোজিটের একটি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। বর্তমানে প্রচলতি ধারার ব্যাংকের জন্য এ হার ১৭ শতাংশ, আর শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকের জন্য ৯.৫ শতাংশ। যথার্থ পরিমাণ জমা রাখতে না পারলে জরিমানা গুনতে হয়।