রিজার্ভ কমে দাঁড়াল ১৯.৯৪ বিলিয়ন ডলারে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস (মোট) রিজার্ভ আরো কমে আজ বৃহস্পতিবার ১৯.৯৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আইএমএফ নির্দেশিত বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে এই হিসাব করা হয়েছে। অর্থাৎ, এক সপ্তাহের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভ ২০.০২ বিলিয়ন ডলার থেকে ০.০৮ বিলিয়ন ডলার কমেছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, দেশের গ্রস রিজার্ভ ২৫.০৯ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২.২২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ ৩৮.১১ শতাংশ কমে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মিত ডলার বিক্রির কারণে ক্রমাগত রিজার্ভ কমছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ টিবিএসকে বলেন, "একদিকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে, বৈদেশিক মুদ্রার দেশে আসা (ইনফ্লো) কমে গেছে। একারণেই রিজার্ভ কমছে। বাংলাদেশে ডলার সমস্যার প্রধান কারণ ইনফ্লো কমে যাওয়া। যতদিন ডলার ইনফ্লো না বাড়বে, ততোদিন সংকট কাটবে না।"
বাংলাদেশ থেকে ডলার বাইরে চলে যাওয়া (আউট ফ্লো) কমাতে সরকার আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। এই উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বলেন, "এভাবে কতদিন চলবে! দেশের প্রয়োজনেই একটা সময় এই সীমা তুলে দিতে হবে। কারণ বিদেশে থেকে ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি না করলে দেশের উৎপাদন ব্যহত হবে। কমে যাবে কর্মসংস্থান। তার সাথে কমে যাবে জাতীয় প্রবৃদ্ধি। তাই এসব বিধিনিষেধ একটা সময় উঠিয়ে দিতে হবে।"
রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণে ডলার সংকট তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধান করতে হলে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
"অন্য পদ্ধতিও চিন্তা করতে হবে। যেমন- রপ্তানি বহুমুখীকরণ। আমাদের দেশের রপ্তানি খাত শুধু একটি পণ্যের (তৈরি পোশাক) ওপর নির্ভরশীল। তৈরি পোশাকের মতো অন্যান্য খাতেও প্রণোদনা দিয়ে রপ্তানিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরেও রপ্তানি বাজার তৈরি করা খুবই জরুরি"- বলেন এই অর্থনীতিবিদ।
সালেহ উদ্দিন আরও বলেন, ডলার সংকট নিরসনের আরেকটি উপায় হলো– বিদেশি বিনিয়োগ। "বাজার নিয়ন্ত্রণে ক্রলিং পেগ দিয়ে লাভ নাও হতে পারে। দেশকে বিনিয়োগ-বান্ধব করতে পারলে এমনিতেই ডলার ইনফ্লো বাড়বে।"