বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে সাংবাদিকদের ওপর বিধিনিষেধ
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি ঘোষণা করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে যখন আইএমএফ এর একটি টিম ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, "কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। তবে কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে আগের মতো তারা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।"
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে সাংবাদিকদের প্রবেশের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে দেখা করেছেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। গভর্নর বিষয়টি সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে সময়ক্ষেপণের পদ্ধতি নিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের না ঢুকতে দেয়ার প্রতিবাদে গভর্নর ভবনের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ব্যাংকখাত নিয়ে প্রতিবেদন করা সাংবাদিকরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন অর্থনীতি বিটের রিপোর্টাররা।
ব্যাংকিং খাতের রিপোর্টার ও দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিবেদক ওবায়দুল্লাহ রনি টিবিএসকে বলেন, "সাংবাদিকদের জন্য আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধ যাতায়াত ছিল। বর্তমানে সেখানে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন সাংবাদিকরা পাস ইস্যুর মাধ্যমে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। এর বাইরে অন্য কোথাও বা কোনো কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন না।"
তিনি জানান, "সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধ যাতায়াত বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। যদিও এর আগেও পাস ইস্যুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে হতো। তবে ভেতরে অবাধ যাতায়াত ছিল। বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।"
ব্যাংকিং খাতের সাংবাদিকদের অভিযোগ, "বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যোগদানের পর থেকে দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন – সেগুলো কার্যকর ভুমিকা রাখছে না, উল্টো দেশের মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এ ছাড়া তিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে এপর্যন্ত ডলার বাজারের অনিয়ম রোধে ব্যর্থ হয়েছেন। সেসব বিষয়গুলো গণমাধ্যমে চলে আসায় তিনি সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করছেন।"
তারা আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাংবাদিক প্রবেশে এমন ধরণের নিষেধাজ্ঞা কেউ আরোপ করেনি। গভর্নর নিজের দুর্বলতাকে ঢাকতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।