প্রতি টানে বাড়তি পয়সা: বাড়ছে সিগারেটের দাম
২০১৪–২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের আগে থেকেই সিগারেটের ওপর কর বাড়ানোর আহ্বান করা হচ্ছিল। প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের ওপর কর বাড়তে চলেছে।
সরকার আগামী অর্থবছরে বড় অঙ্কে রাজস্ব আয় করতে চায়। আর এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সিগারেট একটি বড় ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সরকারের বার্ষিক রাজস্বের প্রায় ১৩ শতাংশ আসে সিগারেট পণ্য থেকে।
আগামী বাজেটে সব ধরনের সিগারেট ও তামাকের ওপর করের হার বাড়িয়ে ৭০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে সরকার।
সিগারেটের দামের ওপর ভিত্তি করে চারটি স্তর রয়েছে: নিম্ন, মাঝারি, উচ্চ, ও প্রিমিয়াম। বর্তমানে ১০টি সিগারেট শলাকার একটি প্যাকেটের দাম যথাক্রমে ৪৫ টাকা, ৬৭ টাকা, ১১৩ টাকা এবং দেড়শ টাকা।
এই চারটি স্তরে সম্পূরক শুল্ক হচ্ছে ৫৮ শতাংশ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত।
প্রতিটি স্তরের জন্য সিগারেটের খুচরা মূল্য পাঁচ টাকা বা তার বেশি বাড়তে যাচ্ছে। এছাড়া কিছু স্তরে শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি মনে করে, ৭০ শতাংশ করের ফলে দেশে ধূমপান প্রায় ৬৬ শতাংশ কমে আসবে। প্রায় ৭০ লাখ ধূমপায়ী ধূমপান ত্যাগ করবেন এবং প্রায় ৭১ লাখ যুবক ধূমপানে অভ্যস্ত হওয়া বন্ধ করবেন।
পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য আয় হবে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকার রাজস্ব।
সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ তথা প্রায় তিন কোটি ৭৮ লাখ মানুষ ধূমপান করেন। তাছাড়া প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকজনিত রোগে ভুগছেন। তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় সরকারের ব্যয় তামাক শিল্প থেকে আয়ের চেয়ে অনেক বেশি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এবং প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশনের মতে, তামাকজনিত রোগে বছরে প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যান। এতে যথেষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।
কেবল ২০১৭–১৮ অর্থবছরেই তামাক ব্যবহারের ফলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যেখানে এ খাত থেকে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।