আশুলিয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও অস্থিরতা কাটেনি, আজও বন্ধ ৪১টি কারখানা
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি আজ কিছুটা উন্নত হলেও অস্থিরতা এখনো পুরোপুরি কাটেনি। মালিকপক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় আজও ২১টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আজ মোট ৪২টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া কিছু শ্রমিক কারখানায় এলেও বিভিন্ন দাবিতে কাজ বন্ধ করে দিয়ে বসে আছেন বলে জানা গেছে। এসব কারখানার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
বিজিএমইএ সূত্র বলছে, বেলা ১২ টা পর্যন্ত তাদের কাছে মোট ৪২টি কারখানা আজ স্ব-বেতনে (লিভ উইথ পে) বন্ধ থাকার তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি কারখানা সাভার-আশুলিয়া, জিরানী এলাকায় অবস্থিত।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে, মাসকট, লুসাকা, জেনারেশন নেক্সট, রেডিয়েন্স নিটওয়্যার, টেক্স টাউন, ইউফোরিয়াসহ বিভিন্ন কারখানা। এছাড়া ১১টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আজ কারখানা খোলা থাকলেও কাজ না করে কারখানা থেকে বেরিয়ে গেছে।
অন্যদিকে শারমীন গ্রুপ, মন্ডল নিটওয়্যার, ক্রসওয়্যার লিমিটেড, ইয়াগি, গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ, প্রিন্স জ্যাকার্ড লিমিটেড, এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেডসহ অন্তত ২১টি কারখানার শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে অবস্থান করে বিভিন্ন দাবিতে বিশৃঙ্খলা করছে বলে জানা গেছে।
এর আগে গতকাল কারখানা মালিক, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে গতকাল এক বৈঠকের পর বিজিএমইএ'র পক্ষ থেকে আজ সকাল থেকে সব পোশাক কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে দেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ এর একজন পরিচালক আশিকুর রহমান দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে (টিবিএস) জানিয়েছিলেন, আজ থেকে সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে, এমনকি গতকাল সোমবার যেই ১১৯টি কারখানা বন্ধ ছিল, সেগুলোও খোলা থাকবে।
এছাড়াও তিনি জানান, ছয় ঘণ্টারও বেশি আলোচনার পর উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছিল যে নারী-পুরুষ পরিচয়ের ভিত্তিতে এবং নতুন নিয়োগ হবে যোগ্যতা ও কারখানার প্রয়োজনের ভিত্তিতে।
বেলা ১১টার দিকে শারমীন গ্রুপের এক নারী শ্রমিক টিবিএস'কে বলেন, "সকাল থেকে শ্রমিকরা কারখানায় এলেও বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে বসে আছে। মালিকপক্ষ উপস্থিত রয়েছে, শ্রমিকদের সাথে মালিকপক্ষ আলোচনা করছে।" তবে কারখানায় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রাখলেও কোন ঝামেলা করেনি বলেও জানান তিনি।
শিল্প পুলিশ-১'র পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম টিবিএসকে বলেন, "পরিস্থিতি আগের তুলনায় আজ অনেকটাই স্বাভাবিক। অধিকাংশ কারখানা আজ সকাল থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। কিছু কারখানা গতকাল থেকেই বন্ধ ছিল, আর কারখানার অভ্যন্তরে শ্রমিকদের সাথে মালিকপক্ষের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় ২১টির মত কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর বাহিরে কোথাও কোন সমস্যা হয়নি, সড়ক ও কারখানার বাহিরের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।"
তিনি আরো জানান, শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি, টহল ও অবস্থান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইন্ডাস্ট্রি সূত্র জানায়, সকাল থেকে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের উভয় পাশে অবস্থিত কারখানাগুলোর পরিবেশ ভালো থাকলেও অবনতি হয়েছে কাঠগড়া অঞ্চলে অবস্থিত কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ।
গত কয়েকদিন আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো এলাকা পর্যন্ত অঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ থাকলেও অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল কাঠগড়া এলাকায় অবস্থিত কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ।
বিচ্ছিন্ন দু'একটি ঘটনা ব্যতীত এই অঞ্চলে বড় কোন শ্রমিক অসন্তোষের সংবাদ পাওয়া যায়নি।