চলতি অর্থবছরে বেড়েছে বিদেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়
চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) মাসে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় বেড়েছে। এ সময়ে প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৯০.৬০% এবং অর্থছাড় বেড়েছে ৩৯.৭০%। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, কোভিড-১৯ সম্পর্কিত বাজেট সহায়তা এবং টিকা কেনার জন্য ঋণের কারণেই চলতি অর্থবছরের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় বেড়েছে। হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৪.৬৯ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২.৪৬ বিলিয়ন ডলার। সেইসঙ্গে গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় ছিল ৩.৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা চলতি অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৬৯ বিলিয়ন ডলারে।
উন্নয়ন প্রকল্পে যে ঋণ দেওয়া হয়, তার ছাড় হয় মূলত প্রকল্প বাস্তবায়নের ভিত্তিতে। বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত হলে অর্থছাড়ও হয় দ্রুত। আবর প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হলে অর্থছাড়ও বিলম্বিত হয়। কিন্তু টিকা কেনার ঋণ এবং বাজেট সহায়তার ঋণ, চুক্তি হওয়ার বা প্রতিশ্রুতি পাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে ছাড় হয়। চলতি অর্থবছরের টিকা ক্রয় এবং বাজেট সহায়তা বাবদ ইতোমধ্যে দেড় বিলিয়ন ডলারের বেশি ছাড় হয়েছে।
অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে চীনের কাছ থেকে। এ সময়ে চীন ১.১২ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে। এই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ৮২২ মিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ৫১৫ মিলিয়ন এবং বিশ্বব্যাংক ৭৯৫ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর জাপানের কাছে থেকে পাওয়া গেছে ৩৮২ মিলিয়ন ডলারের।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, মহামারির কারণে রাজস্ব সংগ্রহ ধীর গতিতে হওয়ায় সরকারের এখন অর্থের প্রয়োজন।
তিনি মনে করেন, এ কারণেই সরকার আরও বেশি বাজেট সহায়তা নিচ্ছে এবং উন্নয়ন সহযোগীরা বাজেট সহায়তা ছাড়তে খুব বেশি সময় নিচ্ছে না।
তবে তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রকল্প সহায়তার প্রাপ্তি ততটা বাড়ছে না।
অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সবচেয়ে অর্থছাড় করেছে এডিবি। ম্যানিলা ভিত্তিক এই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ১.৭৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থছাড় করেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ বিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করেছে জাপান। এছাড়া বিশ্বব্যাংক ৪৬২ মিলিয়ন ডলার, চীন ৪৯৭ মিলিয়ন ডলার এবং রাশিয়া ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করেছে।
এদিকে, আলোচ্য সময়ে সরকারের ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধের হারও বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সরকার আসল ও সুদ বাবদ উন্নয়ন সহযোগীদের ১.২২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে এই পরিশোধের হার ছিল ৯০০ মিলিয়ন ডলার।