বৈশ্বিক মুদ্রা বাজারের অস্থিতিশীলতায় ডলারের বিপরীতে আরও মূল্য হারাচ্ছে টাকা
আরও শক্তিশালী হচ্ছে মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, বাংলাদেশের টাকার মতো বিশ্বের অন্যান্য দেশের ছোটখাট মুদ্রাগুলি বৈশ্বিক কাঁচামাল ও নিত্যপণ্যের অস্থিতিশীল মূল্যের শিকার হয়ে আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছে। এতে করে রেমিট্যান্স ও রপ্তানির মাধ্যমে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি চাহিদা দেখা যাচ্ছে।
চাহিদা বাড়তে থাকায় গতকাল আন্তঃব্যাংক পর্যায়ে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ২৫ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬.৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাত্র দুই মাসেরও কম সময়ে দ্বিতীয় বারের মতো এ হার বাড়ানো হয়। এই হারটি দুটি ব্যাংকের মধ্যকার লেনদেনের ক্ষেত্রে কার্যকর। সাধারণ বা ব্যক্তি ক্রেতাদের ডলার কিনতে আরও ৭ টাকা বেশি দিতে হবে।
এমনকি ব্যবসার তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটাতে ব্যাংকগুলোকেও অন্য ব্যাংক থেকে উল্লেখিত হারের চেয়ে বেশি মূল্য ডলার কিনতে হচ্ছে, কারণ তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে চাহিদা অনুসারে পর্যাপ্ত ডলারের সরবরাহ পাচ্ছে না।
ডলারের এই অতিরিক্ত মূল্যের কারণে ব্যবসা খরচও বাড়ছে।
জ্বালানি ক্রয় জাতীয়ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার। সেটিও এখন বিপাকে। রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল সরবরাহক- বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সময়মতো নির্ধারিত হারে ডলার না পাওয়ায় জ্বালানি আমদানির এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলতে ৫-১০ দিনের মতো দেরির মুখে পড়েছে। যদিও গত মাসেই প্রয়োজনে বাজার মূল্যে ডলার কিনতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায় সংস্থাটি।
বিশ্ববাণিজ্যের লেনদেনে বহুল প্রচলিত অন্যান্য প্রধান মুদ্রার চেয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ডলারের অবস্থান যখন আরও শক্তিশালী হচ্ছে। এরমধ্যেই মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক- ফেডারেল রিজার্ভের সাম্প্রতিক সুদহার বৃদ্ধি- এটিকে আরও শক্তিশালী করেছে।
তাই সকল মুদ্রার রাজাধিরাজ এখন ইউরোসহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য মুদ্রার চেয়ে গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। অথচ ইউরো বৈশ্বিক আর্থিক খাতে রিজার্ভ হিসাবে ব্যবহৃত প্রধান চারটি মুদ্রার একটি।
উল্লেখ্য, ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির সাথে সমন্বয় করতে গত সপ্তাহে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বেঞ্চমার্ক সুদহার বৃদ্ধি করে।
একদিনেই ডলারের বিপরীতে ২৫ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা
এক দিনের ব্যবধানেই মার্কিন ডলারের বিপরীতে ২৫ পয়সা দর হারিয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রা। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার (৯ মে) এক ডলারের জন্য ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। যা রবিবার লেগেছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা।
এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে বেসরকারি একটি ব্যাংকের ট্রেজারি হেড দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, অন্তমুখী প্রবাহের (ইন ফ্লো) চেয়ে সরবরাহ বহিঃমুখী প্রবাহ (আউট ফ্লো) বেশি হওয়ায় ডলারের বাজার এখন খুবই টান টান অবস্থার মধ্যে রয়েছে।
সার্বিক বাজার পর্যালোচনার পর সোমবার (৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের রেট ২৫ পয়সা বাড়িয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আন্তঃব্যাংকে যে দাম নির্ধারণ করে এ বাজারে সে দামে লেনদেন হয় না। কারণ মার্কেট রেট আরও বেশি বলে উল্লেখ করেন এ কর্মকর্তা।
তাছাড়া, ব্যাংকগুলো যে পরিমাণে এলসি খুলছে তার পুরোটা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাচ্ছে না, তাই তাদেরকে বাজার থেকে বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে।
"আমাদের এখন চরম ডলার সংকট। আমাদের বড় বড় পেমেন্টের জন্য পর্যাপ্ত ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাচ্ছি না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে যে পরিমাণে ডলারের চাহিদা দিচ্ছি তার অর্ধেক পরিমাণও পাওয়া যাচ্ছে না, এতে মার্কেট থেকে ডলার কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত পাঁচ/ছয় টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে। যার কারণে ব্যাংকগুলো আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে"- ওই কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন।
আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার (৯মে) টাকা দর হারালে ৮৬.৪৫ টাকায় প্রতিডলার কেনাবেচা চলে। ২০২১ সালের একইদিনে ডলারের যা ছিল ৮৪.৮০ টাকা।
২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছর প্রায় ৮৪-৮৫ টাকায় স্থিতিশীল অবস্থানে ছিল মুদ্রাবাজার। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৮৬ টাকার পৌঁছায় ডলারের দর। মার্চে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে দর ৮৬.২০ টাকা হয়, যা এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত বজায় ছিল।
আন্তঃব্যাংক বাজারে বিনিময় হার ৮৬.৭০ টাকা হলেও ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছে ৯০-৯২ টাকায় ডলার বিক্রি করে। আর সোমবার খোলাবাজারে ৯২-৯২ টাকায় ডলার বিক্রি হয়েছে।
মহামারির এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ বিচ্ছিন্নতার জেরে বিশ্ববাজারে পণ্য ও কাঁচামালের মূল্য এখন ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করছে, এতে করে আমদানি মূল্য বাড়ায় ডলারের বিপরীতে বিনিময় দর হারাচ্ছে টাকা।
তাছাড়া, মহামারির অভিঘাত থেকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, নিত্য খাদ্যপণ্য এবং শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের চাহিদাও বাড়তে থাকে। বিশ্ববাজারে প্রায় সবকিছুর আকাশছোঁয়া মূল্যের বাস্তবতায় গত মার্চ পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের নয় মাসে দেশের আমদানির মূল্য ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।
একইসময়ে, রপ্তানিতে ৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও তাতে করে ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক বাণিজ্যের ব্যালান্সের অবনতি রোধ করা যায়নি। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে এ ঘাটতির পরিমাণ ২৫ বিলিয়ন ডলার, যা কিনা আগের অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়েও ৯ শতাংশ বেশি।
বৈদেশিক বাণিজ্যের চলতি হিসাবও রয়েছে বিপদসীমায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রেমিট্যান্সে কিছুটা প্রবৃদ্ধির পরও এর ঘাটতি এখন ১৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এবং রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মতো বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি চড়া মূদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং আমদানি সীমিত করতে মূল সুদ হারগুলি বৃদ্ধি করছে।
মুদ্রাস্ফীতির আরও শোচনীয় অবস্থা রোধের লক্ষ্যে আমদানি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকও কি একই উপায় গ্রহণ করতে পারে? নাকি মুদ্রাবাজারকে স্বাভাবিক রাখতে রিজার্ভ থেকে আরও ডলার সরবরাহ করতে পারে?
মুদ্রাবাজারের কয়েক বছরের স্থিতিশীলতার অবসান করে মার্কিন ডলার আরও দামি হতে থাকায় এমন চিন্তাভাবনার কথা এখন শোনা যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যেকোনো আপদবিপদ থেকে একটি দেশের শক্তিশালী সুরক্ষা কবচ হিসেবে বিবেচিত হয় বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ। বাংলাদেশে যা এখন পড়তির দিকে থাকায় ডলার কেনা বা বেচার মাধ্যমে বাজারকে স্থিতিশীল রাখার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকাও সীমিত হয়ে পড়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে আমদানি চাহিদা তলানিতে ঠেকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংক থেকে ডলার ক্রয় করে। এর মাধ্যমে গত বছরের আগস্ট মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিতে সক্ষম হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাড়তি আমদানির কারণে ডলারের চাহিদা বাড়লে, সে অনুযায়ী ডলার বিক্রি শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ প্রক্রিয়ায় শুধু এপ্রিল মাসেই ব্যাংকগুলোর কাছে ৫২১ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত নয় মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক এভাবে চার বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে জানিয়েছেন এর একজন নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
ফেব্রুয়ারিতে ৪৫.৮ বিলিয়ন থেকে মার্চে রিজার্ভ ৪৪.১৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে যাওয়ায় আপাতত কিছুটা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। টিবিএসকে কয়েকটি ব্যাংকের ট্রেজারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ডলারের আবেদন তারা করেছেন, তার পর্যাপ্ত পরিমাণ তারা পাচ্ছেন না।
মঙ্গলবারে (১০ মে) এশীয় ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে দেওয়া অর্থ পরিশোধ করা হলে রিজার্ভ আরও ২ বিলিয়ন ডলার কমবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন যা করতে পারে
মুদ্রাস্ফীতি গড়ে ৫-৬ শতাংশ থাকায় এটি নিয়ে বিশেষ চিন্তা করতে হয়নি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সরকারি হিসাব আর বাস্তবতা মিলছে না। এমনটা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি মনে করেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে আদত মুদ্রাস্ফীতি হয়তো অনেক বেশি।
'মুদ্রামান থেকে মুদ্রাস্ফীতি বেশি হলে তখন মুদ্রার মূল্যমান হ্রাস করাটাই একটি স্বাভাবিক পন্থা। এটি করা হয় যাতে রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগী সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু বাংলাদেশে এমনটা হচ্ছে না। আর কর্তৃপক্ষ পুরো ব্যাপারটিকে আলাদা আলাদাভাবে দেখভালের চেষ্টা করছে,' নিজের পর্যবেক্ষণ জানান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
'এখনই সময় আমাদের মুদ্রাস্ফীতি, প্রতিযোগিতার অবস্থা, ও বিনিময় হার নিয়ে চিন্তা করা,' বলেন তিনি।
তিনি আরও মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি খাতে ঋণ বৃদ্ধির দিকটিও খতিয়ে দেখা উচিত। এ অর্থগুলো উৎপাদনমুখী খাতসমূহে গিয়েছে কিনা সেটার খোঁজ নেওয়া উচিত।
'মুদ্রানীতি নিয়ে সতর্ক হওয়া ও সুদহার নিয়ে পুনরায় ভাবার সময় এসেছে', বলেন সাবেক এ গভর্নর। কোমল মুদ্রানীতিতে কেবল বড় বড় ব্যবসায়ীরাই লাভবান হন, ছোট পুঁজির মানুষেরা কম সুদে আসলে ঋণ নিতে পারেন না বলে জানান তিনি।
ডলারের দাম ও সংযত বাজারের মধ্যকার বিস্তৃত শূন্যস্থান বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা কোনো ভালো লক্ষণ নয়। তিনি পরামর্শ দেন, কর্তৃপক্ষের উচিত দেশ থেকে টাকা বাইরে পাচার হয়ে গিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা।
'এখন অবস্থা পর্যবেক্ষণের আসায় আর বসে থাকলে হবে না। শ্রীলঙ্কার সংকট ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে গত ৪-৫ বছরে। কারণ দেশটি সময়মতো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি আশা করি, বাংলাদেশও সে পথে হাঁটবে না।'
সুদহার বাড়ালে আমদানি চাহিদা কমে যায় এবং এভাবে ডলারের চাহিদা ও মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
তবে নমনীয় মুদ্রানীতি বন্ধ করলে ও প্রধান পলিসি রেটগুলো বাড়ালে ব্যবসার জন্য অর্থের মূল্য আরও বেড়ে যাওয়ার দিকটিও চিন্তা করতে হবে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, পলিসি রেট নিয়ে অবশ্যই পুনর্বার ভাবতে হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, ব্যবসাকে করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্য আরও অনেক ফ্যাক্টরের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
'যদি অন্যান্য অসুবিধাগুলো জমাট বেঁধে থাকে, যদি সেগুলোর কোনো পরিবর্তন না ঘটানো হয়, তাহলে কেবল সুদহার কমিয়ে ব্যবসায়-এ শ্রীবৃদ্ধি করা সম্ভব নয়,' মনে করেন তিনি।
এটা ডলারের কোনো সংকট নয়, বরং এটা টাকার ওপর একটি চাপ যা আরও কিছু সময় ধরে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।
আমদানির ক্রমবৃদ্ধি রপ্তানির উত্থানকে অতিক্রম করেছে এবং বাণিজ্য ঘাটতিতে বাড়িয়ে তুলেছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ানোর প্রচেষ্টার পাশাপাশি দেশের মুদ্রাকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করতে শক্তিশালী বৈদেশিক বিনিয়োগও জরুরি বলে মনে করেন এই ব্যাংকার।
তবে বাংলাদেশের এ মুহূর্তে প্রধান সুদহারগুলো বাড়ানো উচিত বলে তিনি মনে করেন না।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র হুমায়ূন কবির দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে বলেন, কোভিডের সময়ে আমাদের আমদানির পরিমাণ কম ছিল, সে সময়ে ব্যাংকগুলোতে থাকা অতিরিক্ত ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক কিনে নিয়েছে। যার ফলে গত বছরের আগস্টে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। এর পর থেকে কোভিড স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরায় দেশের আমদানি বেড়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। যার কারণে ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ডলার ছাড় করায় রিজার্ভ কিছুটা কমেছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের রিজার্ভকে স্বাভাবিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট না বাড়িয়েই কিছু পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে পারে, রেপো ও ব্যাংক রেট বাড়াতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তেমনটাই করছে।
এছাড়া বিভিন্ন ধরণের বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ মার্জিন রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। এছাড়া চাহিদা-যোগানের ওপর ভিত্তি করে সময়ে সময়ে ডলারের দাম বাড়ানো হয়েছে। যার ফলে আমদানি কিছুটা কম হবে। এছাড়া বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়বে।