অন্যান্য দেশে ৬ কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের মজুদ থেকে অক্সফোর্ড/অ্যস্ট্রাজেনেকার ৬ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন অন্যান্য দেশগুলোকে সরবরাহ করা হবে। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। ফেডারেল নিরাপত্তা পর্যালোচনার পর সামনের মাসগুলোতে ভ্যাকসিন রপ্তানি করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের অনুমোদন না দিলেও ভ্যাকসিনটির কোটি কোটি ডোজ মজুদ করা হয়েছে। অন্যান্য দেশগুলোর যখন হন্য হয়ে ভ্যাকসিন পাওয়ার চেষ্টা করছে, মার্কিন সরকার ভ্যাকসিন মজুদের কারণে নানামুখী সমালোচনার মুখে পড়ে।
গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মেক্সিকো ও কানাডায় ৪ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন। এ দুটি দেশেই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি ব্যাবহারের অনুমোদন আছে। ভারতের চলমান সংকটের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহের ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
গত সোমবার হোয়াইট হাউজ জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) ভ্যাকসিনটির পর্যালোচনা শেষ করার পর ১০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
আরও ৫ কোটি ডোজ উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে আছে বলেও জানানো হয়। এক সংবাদ সম্মেলনে হয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি জানান, রপ্তানির আগে এফডিএ'র কর্মকর্তারা ভ্যাকসিনটির গুণাগুণ পরীক্ষা করে দেখবেন।
"আমাদের পরিকল্পনা ও কারা এটি পাবেন এব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে এখন আমরা পরিকল্পনা পর্যায়ে আছি," বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ করা হবে।
গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপে অক্সিজেন, ভ্যাকসিন তৈরির কাঁচামাল ও বিভিন্ন ওষুধসহ জরুরি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভারতে অক্সিজেন, কোভিড টেস্ট, পিপিই ও অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভির সরবরাহের ব্যাপারেও কাজ চলছে।
এফডিএ এখন পর্যন্ত ফাইজার/বায়োএনটেক, মডার্না ও জনসন অ্যান্ড জনসন- এ তিনটি ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ ভ্যাকসিনগুলোর মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা মেটানো সম্ভব, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের প্রয়োজন পড়বে না দেশটিতে।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৫৩ শতাংশেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মহামারি ব্যবস্থাপনায় অনেক ঘাটতি থাকলেও নিরবচ্ছিন্নভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন হয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিনের ডোজ মজুদ আছে, অন্যান্য দেশেও সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন কূটনীতিতে এগিয়ে থাকার পথ প্রশস্ত হতে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভ্যাকসিন উৎপাদন নয়, বরং দেশটির সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করাই বড় চ্যালেঞ্জ এমনটাই প্রতীয়মান হচ্ছে।
- সূত্র: বিবিসি