অস্ট্রেলিয়ায় সংবাদ দেখা এবং শেয়ারে ফেসবুকের নিষেধাজ্ঞা
অস্ট্রেলিয়ান ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে সব ধরণের নিউজ কনটেন্ট দেখা বা শেয়ারের অপশনটি ব্লক করে দিয়েছে ফেসবুক। ফলে মানুষের তথ্য প্রাপ্তির সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা বিবিসি।
বৃহস্পতিবার ঘুম থেকে উঠে অস্ট্রেলিয়াবাসী টের পান তারা স্থানীয় কিংবা বৈশ্বিক, কোন নিউজ সাইটের ফেসবুক পেজে আর ঢুকতে পারছেন না।
শুধু তাই নয়,বৃহস্পতিবার জরুরী ও সরকারী স্বাস্থ্যসেবা সম্বলিত আরও কিছু পেজে'র প্রবেশাধিকারও ব্লক করা ছিল; যদিও টেক জায়ান্ট কোম্পানিটি স্বীকার করে নেয় যে, এটি ভুল ছিল।
অস্ট্রেলিয়া সরকার বলেছে যে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ফেসবুকের "বিশ্বাসযোগ্যতা" হুমকির মুখে পড়ল।
শুধু অস্ট্রেলিয়ার ভেতরে নয়, অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকেও মানুষ ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে অস্ট্রেলিয়ান কোনও সংবাদ বা প্রকাশনা পড়তে পারছেন না।
ফেসবুকের এই পদক্ষেপ অস্ট্রেলিয়ায় প্রস্তাবিত একটি আইনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে গৃহীত হলো; নতুন এই আইন অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ প্রকাশ করার জন্য দেশটির গণমাধ্যমকে অর্থ প্রদান করতে হবে ফেসবুক ও গুগলকে।
গুগল এবং ফেসবুকের মত কোম্পানিগুলো যুক্তি দিয়েছে যে, এ আইনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের কাজের ধারা প্রতিফলিত হয় না। বরং অন্যায়ভাবে তাদের সাইটগুলোকে 'দন্ডের' সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বুধবার সংসদের নিম্নকক্ষে পাস হওয়া আইনটির ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান সরকার জানিয়েছে যে, তারা এটি কার্যকরের কথা ভাবছে।
অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী পল ফ্লেচার এবিসিকে বলেছেন, 'নিজেদের সুনাম এবং অবস্থান সম্পর্কে ফেসবুকের উচিত অত্যন্ত সতর্কভাবে চিন্তা করা"।
মিডিয়া মুঘল রুপার্ট মারডকের নিউজ করপোরেশনকে কনটেন্টের বিনিময়ে গুগল অর্থ পরিশোধের ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ফেইসবুক এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন ফেসবুকের এমন পদক্ষেপ
অস্ট্রেলিয়ার বাজার প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান জানায়, বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং প্রকাশকদের মাঝে মুনাফায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমতার সুযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তারা এ রকম একটি আইন প্রনয়ণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তবে ফেসবুক বলেছে, আইনটি "দুটো কঠিন বিকল্পের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। একটি হচ্ছে, আইনটি মেনে নেয়া যেখানে পারস্পরিক সম্পর্কের বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এবং অন্যটি হলো অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের কার্যক্রম থেকে সংবাদের বিষয়বস্তু প্রদর্শন বন্ধ করা"।
"অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি যে, আমরা পরের পথটি বেছে নিয়েছি"।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রকাশকেরাও তাদের ফেসবুক পেজে কোনো সংবাদ আধেয় প্রকাশ বা শেয়ার করতে পারছেন না। দেশটির জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি এবং সিডনি মর্নিং হেরাল্ড ও দ্য অস্ট্রেলিয়ানের মতো সংবাদপত্রগুলোর ফেসবুকে কোটি কোটি অনুসারী রয়েছেন।