আফ্রিকায় ভ্যাকসিন উৎপাদনের কারখানা স্থাপন করবে মডার্না
মডার্না ইনকরপোরেশন পরিকল্পনা করছে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে আফ্রিকায় একটি কারখানা স্থাপন করার। সেখানে নিজস্ব কোভিড শট সহ প্রতি বছর ৫০০ মিলিয়ন ডোজ এমআরএনএ ভ্যাকসিন তৈরি করবে তারা।
আফ্রিকা মহাদেশে ওষুধ উৎপাদনের জন্য ওষুধ খাতের উপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে এই সিদ্ধান্ত নিল মডার্না।
কারখানাটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেতে দুই থেকে চার বছর সময় লাগতে পারে।
মডার্নার প্রস্তাবিত কারখানায় ওষুধ প্যাকেজিং ও বোতলজাত করার সক্ষমতাও থাকবে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবে যে কোন দেশের কোন স্থানে তারা কারখানাটি স্থাপন করবে। জানা গেছে, মডার্নার করা শর্ট লিস্টে এই মুহূর্তে সম্ভাব্য পাঁচটি আফ্রিকান দেশের নাম রয়েছে।
'আমরা আশা করছি এই স্থাপনায় আমাদের এমআরএনএ ভ্যাকসিন পোর্টফোলিওর অধীনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য অতিরিক্ত পণ্য উৎপাদন করা যাবে,' বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টেফানি ব্যানসেল।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে আফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে বতসোয়ানাকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের চুক্তি রয়েছে মডার্নার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র মডার্নাকে তাদের ভ্যাকসিন সাহায্য প্রদানের তালিকায় রেখেছে, যার ফলে নাইজেরিয়ারও কথা রয়েছে মডার্নার ভ্যাকসিন পাওয়ার।
বিগত কিছুদিন ধরে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের বিতর্ক চলছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের উপর থেকে বুদ্ধিবৃত্তিক স্বত্ব তুলে নেওয়ার যেন দ্রুত চলমান করোনা মহামারি শেষ করা যায় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে আরও বেশি কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়া যায়। ইতোমধ্যেই বিশ্বের ধনী দেশগুলো চলতি বছরের ভ্যাকসিন সরবরাহ কিনে নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাবে সায় দিয়েছে, কিন্তু প্রস্তাবটি বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। তাদের দাবি, যেকোনো প্রযুক্তিগত স্থানান্তর পর্যবেক্ষণের সুযোগ তাদেরকে দিতে হবে, কেননা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের উৎপাদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল।
এর আগে গত জুলাই মাসে ফাইজার ও তাদের সহযোগী বায়োএনটেক দক্ষিণ আফ্রিকার বায়োভ্যাকের সঙ্গে একটি চুক্তি করে যে তারা আফ্রিকায় প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়তা করবে।
কিন্তু মডার্নাই আফ্রিকা মহাদেশে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণকারী প্রথম কোম্পানি। এখন পর্যন্ত তারা ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেশ কিছুদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মডার্না ও ফাইজার-বায়োএনটেক যেন একসঙ্গে কাজ করে তাদের আফ্রিকান টেক ট্রান্সফার হাবের পরিকল্পনায়।
গত মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, মডার্নার সঙ্গে তাদের আলোচনা খুব বেশিদূর এগোয়নি।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্ক ৩০ বছরের কম বয়সীদের জন্য মডার্না ভ্যাকসিনের ব্যবহার স্থগিত করেছে। অপ্রকাশিত নর্ডিক একটি গবেষণার প্রতিবেদনে সম্ভাব্য বিরল কার্ডিওভাস্কুলার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানতে পেরে এ সিদ্ধান্ত নেয় দেশ তিনটি।
সূত্র : দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও রয়টার্স