করোনার নতুন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধেও ‘কার্যকর’ ফাইজারের টিকা
ফাইজার এবং বায়োনটেকের কোভিড-১৯- টিকা যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের অত্যন্ত সংক্রামক নতুন ধরনটির মিউটেশনের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে সক্ষম বলে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালিত করেছে ফাইজার এবং ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের মেডিকেল শাখার বিজ্ঞানীরা। তবে এখন পর্যন্ত গবেষণাটির 'পিয়ার রিভিউ' হয়নি। গবেষকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই টিকা স্পাইক প্রোটিনের তথাকথিত এন৫০১ওয়াই মিউটেশনের মাধ্যমে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় করতে কার্যকর।
ফাইজারের অন্যতম শীর্ষ ভাইরাল টিকা বিজ্ঞানী ফিল ডরমিৎজার বলেন, এই মিউটেশন বৃহত্তর সংক্রমণের জন্য দায়ী হতে পারে এবং উদ্বেগ ছিল যে এই টিকার ফলে ভাইরাসটি এড়িয়ে যেতে পারে অ্যান্টিবডি নিউট্রালাইজেশন থেকেও।
যাদের এই টিকা দেওয়া হয়েছে তাদের শরীর থেকে নেওয়া রক্তের উপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষণার ফলাফল কিছুটা সীমিত কারণ গবেষণাটি করোনার নতুন স্ট্রেইনের সবগুলো মিউটেশনের উপর চালানো হয়নি।
ডরমিৎজার বলেন, এটা উৎসাহব্যঞ্জক যে এই টিকা মিউটেশনের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে মনে হচ্ছে এবং এর আগেও ফাইজার কোম্পানি আরো ১৫টি মিউটেশন সেট পরীক্ষা করেছিল।
"সুতরাং আমরা এ পর্যন্ত ১৬টি ভিন্ন ভিন্ন মিউটেশন সেট পরীক্ষা করেছি, এবং এগুলোর কোনটিই সত্যিই কোন উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। এটা সুখবর বটে। তবে তার মানে এই নয় যে ১৭ তম বার পরীক্ষা করলে কোনো প্রভাব ফেলবে না।"
গবেষকরা পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করেছেন এটা জানতে যে, এই টিকা যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনা ভাইরাসের অন্যান্য মিউটেশনের বিরুদ্ধে কার্যকর কিনা। তারা আশা করছেন যে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ সংক্রান্ত আরো তথ্য পাওয়া যাবে।
বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ, যে টিকা চালু করা হচ্ছে তা নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের রক্ষা করতে সক্ষম নাও হতে পারে, বিশেষ করে যে ধরনের ভাইরাস দক্ষিণ আফ্রিকায় আবির্ভূত হয়েছে- তার থেকে।
রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলুলার মাইক্রোবায়োলজির সহযোগী অধ্যাপক সাইমন ক্লার্ক চলতি সপ্তাহে বলেছেন যে, যদিও উভয় ধরনের নতুন ভাইরাসের ভেতর কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া ভাইরাসে 'অতিরিক্ত মিউটেশন আছে' যার ভেতর ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত ছিল স্পাইক প্রোটিন।
ফাইজার, বায়োএনটেক এবং মডার্নার টিকা, যা কৃত্রিম বার্তাবাহক আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি, প্রয়োজনে এগুলো ভাইরাসের নতুন মিউটেশন মোকাবেলা করার জন্য দ্রুত সামঞ্জস্য করতে পারে।
বিজ্ঞানীদের দাবী, মিউটেশনের সাথে সামঞ্জস্য তৈরি হতে টিকার সময় লেগে যেতে পারে ছয় সপ্তাহের মতো।
সূত্র- রয়টার্স