তালেবান বনাম আইএসআইএস-এর গোপন যুদ্ধের ইতিহাস
তালেবানদের গুলিতে নিহত হওয়ার ঠিক দু'দিন আগে, আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের (আইএসআইএস-কে) এক সময়কার নেতা আবু ওমর খোরাসানি, আফগান কারাগারের সাক্ষাৎকার ঘরে বসে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছিলেন, "তারা যদি ভালো মুসলিম হয়, তবে তারা আমাকে ছেড়ে দেবে।"
খোরাসানি তালেবানের ক্ষমতা দখলকে পরিবর্তনের এক নতুন ধারা হিসেবে দেখেছিলেন। কারণ, বহু বছর ধরে তালেবান এবং আইএস-কে; উভয় সংগঠনই আফগানিস্তানকে অবিশ্বাসীদের হাত থেকে মুক্ত করার শপথ নিয়েছিল।
গত সপ্তাহে তালেবান যোদ্ধারা কাবুল দখল করে নেওয়ার পর দেশটির কারাগারের নিয়ন্ত্রণও নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়। শত শত বন্দিকে মুক্তি দিলেও খোরাসানি এবং তার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আরও আট সদস্যকে হত্যা করে তারা।
তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানে যেমন মার্কিন জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে দুই দশক ধরে লড়াই করে এসেছে, ঠিক তেমনি তারা আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও আরও একটি পৃথক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
আইএসআইএস-কে নামে পরিচিত, ইসলামিক স্টেটের আফগান বাহিনী, আফগানিস্তানের কিছু অংশকে মধ্যপ্রাচ্যের মতো করে বিস্তৃত খেলাফতের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছে।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য দেশসহ মার্কিন জোট বাহিনীর সহায়তায় তালেবানরা আইএস-কে'এর বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে পেরেছে। আইএস-কে আফগানিস্তানে তাদের ঘাঁটি থেকে বিতাড়িত হয়েছে এবং এর যোদ্ধারা আত্মগোপনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ফলে চলতি মাসে তালেবানরা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেখানে তালেবান শক্তির সামনে আইএস-কে'এর প্রতিরোধ সক্ষমতা খুব সামান্য হিসেবেই দেখা দিয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার, কাবুল বিমানবন্দরের পাশে এবং ব্যারন হোটেলে ভিড়ের মধ্যে দুটি বিস্ফোরণ হামলা চালিয়ে আইএস-কে তাদের উপস্থিতির জানান দিয়েছে আবারও। মার্কিন বাহিনীর সদস্যরা সেই হামলার কিছুটা আভাস আগে থেকেই পেয়েছিল এবং মার্কিন ও অন্যান্য বিদেশী নাগরিকসহ আফগানিস্তান ছাড়তে চায় এমন মানুষদের তারা আগেই সতর্ক করেছিল।
পেন্টাগন জানিয়েছে, কমপক্ষে ৯০ জন আফগান এবং ১৩ জন মার্কিন সেনা সদস্য নিহত হয়েছে সেই বিস্ফোরণে। মার্কিন কর্মকর্তারা এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেটের আঞ্চলিক সহযোগী আইএস-কে কেই দায়ী করেছেন। অন্যদিকে, ইসলামিক স্টেটও তাদের আমাক নিউজ সংস্থার এক প্রতিবেদনে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের উপস্থিতি এভাবে অব্যাহত থাকলে তালেবান গোষ্ঠী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলো থেকেও আন্তর্জাতিক সহায়তা পেতে পারে, যা ইসলামিক স্টেট তাদের নিজেদের জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখছে।
রাশিয়া, চীন এবং ইরান ইতোমধ্যেই বলেছে, তারা তালেবান দলকে আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার মূল ভিত্তি হিসেবে দেখছে। এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পরও তারা কাবুলে দূতাবাস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবারের হামলার পর এক সংবাদ সম্মেলনে, মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের মেরিন কর্পস জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেন, বিমানবন্দরে আসার পর আফগানদের স্ক্রিনিং করার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের হাতে দিয়েছে। এ কাজের জন্য মার্কিন বাহিনী তালেবানদের উপরেই নির্ভর করছে।
তিনি বলেন, "আমরা যতটা সম্ভব আমাদের সুরক্ষার জন্য তালেবানদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি।"
১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আক্রমণ করে, তখন তালেবানদের অল্প কিছু মিত্র ছিল। আল কায়েদাকে সমর্থন করে তালেবান গোষ্ঠী সে সময় পাশ্চিমাদের রোষানলে পড়াসহ আঞ্চলিক শক্তি রাশিয়া ও ইরানের কাছ থেকেই বিরোধিতার শিকার হয়েছিল।
সেই ঘটনার পর তালেবান এবং আল -কায়েদার মধ্যে সংহতির সম্পর্ক এক অস্বস্তিকর পর্যায়ে পৌঁছায়। ১৯৯০'র দশকের শেষের দিকে, আফগানিস্তানকে 'অপারেটিং বেস' হিসেবে ব্যবহার করায় অনেক তালেবান সদস্যই ওসামা বিন লাদেনের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।
২০০১ সালে তালেবানের ক্ষমতাচ্যুতির পর কাবুল থেকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল কর্তৃক উদ্ধার করা একটি কম্পিউটারের তথ্য থেকে জানা যায়, আল কায়েদার সদস্যরা প্রায়ই তাদের আফগান মিত্রদেরকে নিরক্ষর এবং কুরআন বোঝার অযোগ্য বলে মনে করতো। তালেবান সদস্যরা পাল্টা জবাবে, আল কায়েদার কিছু সদস্যকে পশ্চিমাদের সঙ্গে সমস্যা বাড়ানোয় এবং তাদের দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিছিন্ন করে ফেলার অভিযোগ এনেছিল।
তবে, ১১ সেপ্টেম্বরের মার্কিন অভিযান এ অঞ্চলে নতুন এক সমীকরণ সৃষ্টি করে দেয়। কারণ এসময় উভয় সংগঠনের নেতারাই আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।
ইসলাম ধর্মের একজন একাডেমিক গবেষক এবং 'আল-কায়েদা ইন আফগানিস্তান' বইয়ের লেখক অ্যান স্টেনারসেন বলেছেন, তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমর সম্ভাব্য হামলার খবর আগে থেকে জানতে পারেননি এবং বিন লাদেন ও তিনি যখন পাকিস্তানে লুকিয়ে ছিলেন তাদের দুজনের সম্পর্ক বেশ ভালোই ছিল।
২০১১ সালে মার্কিন বাহিনী বিন লাদেনকে হত্যা করার পর, তার পাকিস্তানের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা নথিপত্রগুলোয় আল কায়েদা নেতা এবং ওমরের মধ্যে সামান্য যোগাযোগের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
তালেবান এবং আল কায়েদা যুদ্ধক্ষেত্রে একসঙ্গে শক্তিশালী বন্ধন গড়ে তুলেছিল, কারণ উভয়ই দলের শত্রুই ছিল মার্কিন দখলদার বাহিনীর।
২০০১ সালের পর তালেবানরা পুনরায় সংগঠিত হতে যখন কয়েক বছর সময় নিয়েছিল, তখন আল কায়েদা ২০০৪ সালে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের গজনি প্রদেশে মার্কিন সৈন্যদের উপর প্রথম সফল হামলা চালায়। সেই হামলায় আধুনিক প্রযুক্তির বিস্ফোরক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। তালেবানের একজন সাবেক কমান্ডার যিনি মার্কিন ও সরকারি সৈন্যদের সঙ্গে সেখানে লড়াই করেছিলেন, তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালের মধ্যে, তালেবান ও আল-কায়েদা উভয় দলের সদস্যরাই একসঙ্গে কমান্ড গঠনের প্রস্তুতি নিয়েছিল। দুই গ্রুপের সম্মিলিত বাহিনী মার্কিন সমর্থিত সরকার এবং পশ্চিমা জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে 'হিট অ্যান্ড রান হামলা' (গেরিলা হামলা পদ্ধতি), বোমা হামলা এবং 'টার্গেট কিলিং'-এর মাধ্যমে সন্ত্রাসী অভিযান চালায়।
তবে, ২০১৫ সালে আল-কায়েদার সামর্থ্য কমতে থাকে এবং এর মাঝ দিয়ে ইসলামিক স্টেটের উত্থান তাদের কর্মকাণ্ডের গতিশীলতার মোড় বদলে দেয়। নতুন গোষ্ঠী সিরিয়া ও ইরাকের কিছু এলাকা দখল করে নিয়ে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করে এবং আফগানিস্তান, ইরান এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্য এশিয়ার কিছু অংশ জুড়ে 'খোরাসান' নামের একটি প্রদেশ তৈরির জন্য যোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানায়।
মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার অসন্তুষ্ট কিছু তালেবান সদস্য এবং সিরিয়া ও ইরাকের কিছু স্বেচ্ছাসেবী জঙ্গিদের নিয়ে এই দল গড়ে ওঠে। আফগানিস্তানের ভেতরেই ইসলামিক স্টেটের দুটি আস্তানা রয়েছে; একটি পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে এবং অন্যটি, উত্তরাঞ্চলীয় জৌজজান প্রদেশে।
খোরাসানি তার মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে নেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "তালেবানরা আইএস-কে-এর আগমনকে স্বাগত জানায়নি। তারা ইসলামিক স্টেটকে বাধা হিসেবেই দেখেছিল। ইসলামিক স্টেট আরও উচ্চাভিলাষী বৈশ্বিক এক লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে, যেখন তালেবানরা শুধুমাত্র আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চেয়েছিল। দেশের বাইরে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীকে সাহায্য করার ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ নেই।"
ইসলামিক স্টেটের বিকল্প নাম ব্যবহার করে খোরাসানি বলেন, "দায়েশের নেতৃত্ব স্বাধীন, দায়েশের লক্ষ্য স্বাধীন। আমাদের একটি বৈশ্বিক কর্ম পরিকল্পনা রয়েছে; তাই যখন লোকেরা জিজ্ঞাসা করে, তখন এটা প্রকৃতপক্ষেই ইসলাম এবং সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, এবং আমরা অবশ্যই বেশি আকর্ষণীয়।"
অন্যান্য দেশগুলোও তালেবানকে ইসলামিক স্টেটের বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে একটি সম্ভাব্য বাধা হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।
মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির মধ্য এশিয়া বিশেষজ্ঞ এবং অধ্যাপক ইভান সাফ্রানচুকের মতে, আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও তালেবানকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রাখা রাশিয়া এই গোষ্ঠীর সঙ্গে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় আগে থেকেই আলোচনা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, "এসব আলোচনা বা যোগাযোগের পিছনে একটি বড় কারণ হতে পারে আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের উত্থান।"
যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের অস্ত্র সরবরাহের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। তবে, রাশিয়া সেই অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। মার্কিন গোয়েন্দাদের মতে ইরানও অস্ত্র সরবরাহ করেছে। অন্যদিকে, চীন এ বছর আলাদাভাবে একটি উচ্চ পর্যায়ের তালেবান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনাও করেছে।
খোরাসানি বলেছিলেন, আফগানিস্তানে আইএসআইএস-এর শাখা আইএসআইএস-কে খোলার সময়ই তিনি দলটিতে যোগদান করেন। তিনি আঞ্চলিক গভর্নর হয়ে উঠেছিলেন, যা ছিল দলটির তৎকালীন আঞ্চলিক সর্বোচ্চ পদ।
ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের মতো, আফগানিস্তানেও এই দলটি ভয়াবহ মৃত্যুদণ্ডের ভিডিও চিত্র, বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এবং তাদের শাসনের বিরোধিতা করে, এমন স্থানীয়দের বিরুদ্ধে চরম সহিংসতার জন্য কুখ্যাত হয়ে ওঠে।
নানগারহারে, গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় খোরাসানি গ্রামের প্রবীণদের এবং স্থানীয়দের চোখ বেঁধে পাহাড়ের ধারে বিস্ফোরকের স্তূপের উপরে বসিয়ে হত্যা করেছিল। ভয়ঙ্কর সেই হত্যার ভিডিও চিত্র দলটি প্রকাশও করেছিল কিছুদিন পরে।
খোরাসানি বলেন, ভিডিওতে যাদের মৃত্যুদণ্ড দিতে দেখা গেছে, তারা সবাই অপরাধী।
তিনি বলেন, ইসলামিক স্টেটের চালানো হামলা প্রায়ই তালেবানকেও উপকৃত করেছে, যদিও তারা পরস্পর শত্রু।
তিনি আরও বলেন, "গত বছর জালালাবাদের একটি কারাগার ভাঙা হয়েছিল ইসলামিক স্টেটের নেতৃত্বে। সেই অপারেশন চালায় ৪ জন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এবং ১১ জন বন্দুকধারী। তাদের অবদানেই শত বন্দি সে দিন মুক্তি পেয়েছিল। আর সেই বন্দিদের মধ্যে তালেবান এবং ইসলামিক স্টেট উভয়েরই সদস্য ছিল।
খোরাসানি বলেন, ২০১৭ সালে তালেবান এবং ইসলামিক স্টেটের মধ্যে জোউজজানে একটি শোডাউন হয়েছিল, যেখানে তালেবানের একজন কমান্ডার এবং তার যোদ্ধারা ইসলামিক স্টেটের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদীর প্রতি আনুগত্যের শপথ নেয়। তাদের সঙ্গে 'ইসলামিক মুভমেন্ট অব উজবেকিস্তান' নামে একটি উজবেক জঙ্গি গোষ্ঠীও যোগ দেয়। এবং তারা একসঙ্গে প্রদেশের দুটি উপত্যকা দখল করে, সেখানে ইসলামিক স্টেটের পতাকা উত্তোলন করেন।
তিনি যে যুদ্ধের বর্ণনা দিয়েছেন তা মার্কিন বাহিনীর ভাষ্য অনুযায়ী অনেকটা এরকম- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আফগান সরকার এবং তালেবান বাহিনী কয়েক মাস ধরে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের উপর আক্রমণ চালিয়ে আসছিলো। ফলে পরের বছর শত শত ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সরকারি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
খোরাসানি বলেন, "প্রত্যেকেই তালেবানকে আমাদের বিরুদ্ধে সমর্থন করেছিল। তারা কেন জিততে পেরেছে তা কারও অজানা নয়।"
ওই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছিল, তাদের আস্তানায় বোমা হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন কমান্ডারসহ ৯০ জনেরও বেশি জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছিল। তবে, খোরাসানি এর বিরোধিতা করে বলেন, ওই সময় আস্তানাটি খালি ছিল।
মার্কিন সমর্থিত আফগান সরকারের সাবেক কর্মকর্তাদের মতে, নতুন আন্তর্জাতিক শত্রু হিসেবে ইসলামিক স্টেটের উত্থান তালেবানদের বৈশ্বিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এই প্রচেষ্টা তালেবানের বহু বছরের সন্ত্রাসী পরিচয় থেকে নিজেকে মুক্ত করার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।
দোহা চুক্তির বাস্তবায়ন সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতেই গত বছর আফগান কারাগার থেকে ৫ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আফগান সরকারের সাবেক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাক্তন বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কারণেই তালেবান বাহিনীর শক্তি হঠাৎ বেড়ে যায় এবং যুদ্ধের ময়দানে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ দখল করে।
এছাড়া, দোহা চুক্তির অংশ হিসেবে তালেবান গোষ্ঠী পশ্চিমা বাহিনীর উপর আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
অন্যদিকে, খোরাসানি জানান, আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট যোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ায়, তিনি গত বছর নানগারহার ছেড়ে চলে যান। তবে, ২০২০ সালের মে মাসে কাবুলের বাইরে একটি বাড়িতে থেকে মার্কিন ও আফগান বাহিনীর সম্মিলিত অভিযানে তিনি গ্রেফতার হন।
তিনি বলেন, বিচারক তাকে ৮০০ বছরের কারাদণ্ডসহ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।
তবে, তালেবান বাহিনী সবার আগে তার মৃত্যুদণ্ডই কার্যকর করেছে।
- সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল