ধনী-দরিদ্রের বিয়েতে কমবে বৈষম্য : ইন্দোনেশিয় মন্ত্রী
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মোট জাতীয় উৎপাদনের গড়ে বেশ শক্তিশালী অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার। ২০১৭ সালে দেশটির মোট জিডিপি ছিল ১ লাখ ১৬০ কোটি ডলার। কিন্তু প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতোই ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার এই যুগে দেশটির বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী উন্নয়নের প্রকৃত সুফল বঞ্চিত।
এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের হিসাবে ইন্দোনেশিয়ায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ এখনও দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন। আর দৈনিক ১ দশমিক ৯০ ডলার খরচ করতে সক্ষম মাত্র ৫ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫টি। এসব তথ্য ২০১৮ সালের হলেও এতে সুবিধা বঞ্চিতদের অবস্থান স্পষ্ট।
এই অবস্থায় দারিদ্র্য হার কমাতে ধনী নাগরিকদের প্রতি দরিদ্রদের বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন ইন্দোনেশিয় মানব সম্পদ উন্নয়ন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী মুহাজির এফেন্দি।
মন্ত্রী বলেন, দরিদ্ররা নিজেদের মধ্যে বিয়ে করতে থাকলে শুধু দরিদ্র পরিবারের সংখ্যাই বাড়বে। ২০১৯ সালের হিসেবে দেশের মোট ৫ কোটি ৭১ লাখ পরিবারের মাঝে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। আর দারিদ্র্য সীমার কাছাকাছি বসবাস করে আরও ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ বা দেড় কোটি পরিবার।
জাকার্তা পোস্ট জানায়, পরিস্থিতি উন্নয়নে মুজাহির এফেন্দি দেশটির ধর্মমন্ত্রী ফাখরুল রাজির প্রতি এক ফতোয়া জারির পরামর্শ দেন। ওই ফতোয়ায় দরিদ্রদের ধনী এবং ধনীদের দরিদ্র জীবনসঙ্গী খোঁজার তাগিদ দেওয়া হবে। খবর স্ট্রেইটস টাইমসের।
এর পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর চালু করা কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল অবিবাহিত যুগলদের বিবাহ সনদ দেওয়ার আহবান জানান।
উইডোডো সরকারের আলোচিত উদ্যোগের আওতায় দম্পত্তিদের বাস্তবভিত্তিক কর্মপ্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
মানবসম্পদ মন্ত্রী মুজাহির এফেন্দি বলেন, বিবাহিত যুগলদের পাশাপাশি বিবাহে ইচ্ছুক যুগলদেরও এই পরিকল্পনার আওতায় আনা হলে দেশে দারিদ্র্য কবলিত পরিবারের সংখ্যায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
মানবসম্পদ মন্ত্রীর ফতোয়া জারির প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার উলেমা কাউইন্সিল (এমইউআই)। সংস্থাটি সেদেশে ফতোয়া জারির দায়িত্ব পালন করে। এক বিবৃতিতে মন্ত্রীর পরামর্শকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মহৎ প্রস্তাব বলে উল্লেখ করেন এমইউআই মহাসচিব আনোয়ার আব্বাস।