পাকিস্তানে প্রতি তিন পাইলটের একজনই 'ভুয়া'
পাকিস্তানে প্রতি ৩ পাইলটের একজনের লাইসেন্সই নকল। এ কথা জানিয়েছে সে দেশের বিমান মন্ত্রণালয়।
বুধবার পাকিস্তানের বিমানমন্ত্রী গুলাম সারওয়ার খান জাতীয় সংসদে বলেন, তার দেশের ৩০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক পাইলটের লাইসেন্স ভুয়া; তারা বিমান চালানোর যোগ্যতা অর্জন করেননি।
তিনি বলেন, দেশটির ২৬২ জন পাইলট পরীক্ষায় নিজে অংশ নেননি; বরং টাকার বিনিময়ে অন্য লোক তাদের পক্ষে পরীক্ষা দিয়েছে। ওই পাইলটদের 'ফ্লাইং' অভিজ্ঞতাও নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইস-সহ (পিআইএ) দেশটির ডমেস্টিক এয়ারলাইনগুলোতে ৮৬০ জন পাইলট কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। খবর সিএনএনের।
এ বিষয়ে নড়েচড়ে উঠেছে পিআইবি। নকল লাইসেন্সধারী সব পাইলটকে কর্মচ্যূত করেছে তারা। এয়ারলাইন্সটির মুখপাত্র আবদুল্লাহ খান বলেন, 'নকল লাইসেন্সের ব্যাপারটি শুধু পিআইএ নয়, দেশের পুরো এয়ারলাইন ইন্ডাস্ট্রিতেই ছড়িয়ে পড়েছে।'
২২ মে করাচিতে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৯৭ জনের প্রাণহানির ঘটনার তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে বুধবার এ কথা বলেন তিনি। লাহোর থেকে করাচি আসার পথে বিধ্বস্ত পিআইএ'র ওই বিমানে যাত্রী ও ক্রুর মধ্যে দুজন ছাড়া বাকি কেউ প্রাণে বাঁচেননি।
ওই বিমানের দুই পাইলটের লাইসেন্স নকল ছিল কি না, সে ব্যাপারটি অবশ্য স্পষ্ট করেননি খান। প্রতিবেদন বলছে, আবাসিক এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে পাইলট দুজন করোনাভাইরাস নিয়ে আলাপ করছিলেন; এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের দেওয়া সতর্কবার্তা তারা বারবার এড়িয়ে গেছেন।
খান বলেন, "ওড়ার পর থেকে পুরোটা পথে পাইলট দুজন করোনাভাইরাস নিয়ে আলাপ করছিলেন। দায়িত্বে মনোযোগ ছিল না তাদের। করোনাভাইরাসের কী অবস্থা, কীভাবে তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন- এই নিয়ে আলাপে মগ্ন ছিলেন 'অতি-আত্মবিশ্বাসী' ওই দুই পাইলট।"
দুর্ঘটনার আগ মুহূর্তে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা পাইলট দুজনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিমানটা বেশি উঁচুতে রয়েছে, এ অবস্থায় অবতরণের চেষ্টা করা ঠিক হবে না। 'কিন্তু সেইসব নির্দেশনা কানে তোলেননি ক্যাপ্টেন,' প্রতিবেদন অনুসারে দাবি খানের।
ল্যান্ডিং গিয়ার 'লোয়ারিং' না করেই বিমান অবতরণের চেষ্টা চালান দুই পাইলট। প্রতিবেদনে বলা হয়, এর ফলে রানওয়ের সারফেসে এয়ারক্র্যাফটির ইঞ্জিন স্পর্শ করে। রানওয়েতে ইঞ্জিনের ঘষা খেয়ে আগুনের স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে, আর ইঞ্জিনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়।
পাইলটরা এ সময়ে বিমানটি আবারও শূন্যে তুলতে থাকেন; কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত ইঞ্জিনের কারণে সেটি বিধ্বস্ত হয়।