ভ্যাকসিনের দাবিতে হুমকির মুখে দেশ ছাড়লেন সেরাম সিইও
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য ভারতের বেশ কিছু 'প্রভাবশালী' ব্যক্তির আক্রমণাত্মক কল ও হুমকির মুখে দেশ ছেড়েছেন সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনেওয়ালা।
ভারতের বর্তমান কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভ্যাকসিন উৎপাদনে কতোটা চাপের মুখে আছেন এনিয়ে কথা বলেন তিনি।
দ্য টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই চাপ তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার বড় কারণ ছিল। যদিও গত সপ্তাহেই তাকে 'ওয়াই' ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেয় ভারত সরকার।
"সবচেয়ে বাজে ব্যাপার ছিল ফোন কলগুলো। ভারতের 'চূড়ান্ত ক্ষমতাধর কিছু ব্যক্তিও কল করেন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রধান- এধরনের অনেকেই কল করেছেন। তারা তৎক্ষণাৎ ভ্যাকসিনের সরবরাহ চেয়েছেন," বলেন পুনেওয়ালা।
তার ভাষ্যে "হুমকি বললেও কম বলা হবে, তাদের প্রত্যাশা ও একইসঙ্গে আক্রমণের মাত্রা কল্পনাতীত,"
"আমি বেশ কিছুদিন লন্ডনেই থাকবো, কারণ আমি ওই পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে চাই না। সবকিছুর দায়িত্ব আমার কাঁধে বর্তাচ্ছে, কিন্তু আমার একার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব নয়। যখন আপনি শুধু আপনার নিজের কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করছেন... কিন্তু এসব বিভিন্ন ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে না পারায়..না পারলে তারা কী করবেন তা কল্পনাও করতে চাইনা- আমি এ ধরনের পরিস্থিতিতে আর পড়তে চাই না," ওই সাক্ষাৎকারে বলেন পুনেওয়ালা।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ভারতের বাইরে ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেও তিনি লন্ডনে থাকছেন।
ভারতের বাইরে যুক্তরাজ্যেই ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু হবে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "আগামী সপ্তাহেই একটি ঘোষণা আসবে,"
সংবাদপত্রটির তথ্যানুযায়ী, সেরাম ইনস্টিউটিউট বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ১.৫ বিলিয়ন ডোজ থেকে বাড়িয়ে ২.৫ বিলিয়ন ডোজ করেছে। এ কাজে খরচ হয়েছে ৮০ কোটি ডলার। এ বছরের জানুয়ারিতে ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন প্রাপ্তির সময়কালে ৫ কোটি ডোজ কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন মজুদ করে সেরাম।
যুক্তরাজ্যসহ ৬৮টি দেশে ভ্যাকসিন রপ্তানি শুরু করেছিল কোম্পানিটি। তবে সম্প্রতি ভারতের মহামারির পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দেশীয় চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ভ্যাকসিন রপ্তানি স্থগিত করা হয়।
"যেখান থেকে সম্ভব সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। ভারতের পরিস্থিতি এতো খারাপের দিকে যাবে, আমার মনে হয় না এমনকি সৃষ্টিকর্তাও তা বুঝতে পেরেছিলেন," সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি।