মিথ্যা অভিযোগে ২৬ বছর জেল খাটলেন তিনি
নর্থ ক্যারোলিনার এক ব্যক্তিকে ভুলভাবে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় আজ থেকে প্রায় ২৮ বছর আগে। মিথ্যা অভিযোগ কাঁধে নিয়ে দীর্ঘ ২৬ বছর জেল খাটার পর, ২০১৯ সালের আগস্টে কারাগার থেকে মুক্তি পান ডোন্টে শার্প।
১৯৯৪ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "মামলা থেকে আমার পরিবারের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে। এটি আমার ও আমার পরিবারের কাঁধ থেকে একটি বোঝা নেমে যাওয়ার মতোই।"
শার্পকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পরেও সম্পূর্ণ ক্ষমা পেতে তার কতো বছর সময় লাগতে পারে, সেই গল্পটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন বিবিসির এক সাংবাদিক।
গভর্নর রয় কুপার ক্ষমা ঘোষণা করে এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি মামলাটি সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করেছেন এবং শার্পের মতো আরও যারা ভুলভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাদের 'সেই অবিচার সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হবে'।
পূর্ণ ক্ষমার সঙ্গে রাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের জন্যও আবেদন করতে পারবেন শার্প।
তিনি বলেন, "আমার স্বাধীনতা ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়া নির্দোষ ব্যাক্তিরা কারাগারে আছেন।"
"আমি সেখানে ছিলাম এবং আমি জানি সেখানে এমন ব্যক্তিরা আছেন যারা নির্দোষ", তিনি আরও বলেন।
জর্জ র্যাডক্লিফকে হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন শার্প। তবে বিচারের কয়েক মাস পর, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যদাতা, প্রত্যক্ষদর্শী এক কিশোরী তার সাক্ষ্য ফিরিয়ে নেন। এরপরেও কারাগার থেকে মুক্তি পেতে দুই দশকেরও বেশি সময় লেগেছে শার্পের।
এই গ্রীষ্মের শুরুতে বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শার্প জানান, আমেরিকার ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ত্রুটি ঠিক করতে তিনি তার বাকি জীবন উৎসর্গ করবেন।
ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি অফ এক্সোনেরেশনস-এর তথ্যমতে, ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৮৮৭ জনেরও বেশি লোককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তবে শার্পকে মুক্তি দেওয়ার দায়িত্ব ছিল নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর রয় কুপারের হাতে। বছরের পর বছর ধরে শার্পের সমর্থকদের পিটিশন স্বাক্ষরের পর আজ গভর্নর কুপার তার ক্ষমার আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন।
আইনজীবী ক্যাটলিন সোয়াইন বলেছেন, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার শার্পের এই যুদ্ধই প্রমাণ করে, উত্তর ক্যারোলিনাসহ সারা দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার আরও ভালো উপায় থাকতে হবে।
শার্পকে নির্দোষ প্রমাণ করার দুই দশকের এই লড়াইয়ে জড়িত ছিল তার পুরো পরিবার, আইনজীবী, ধর্মযাজক ও অসংখ্য সমর্থক।
তার কাছে স্বাধীনতার অর্থ কী এমন প্রশ্নের জবাবে শার্প বলেন, যেই নির্দোষ মানুষগুলো এখনও কারাগারে রয়ে গেছেন, তিনি এখন তাদেরকে মুক্ত করার উপায় খুঁজছেন।
তিনি বলেন, "আমাদের বিচার ব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং দ্রুতই এটি পরিবর্তন করা দরকার"।
সূত্র: বিবিসি