হামলার আশঙ্কা: কাবুলের হোটেল ব্যবহারে নিজেদের নাগরিকদের সতর্ক করল আমেরিকা ও বৃটেন
আফগানিস্তানের হোটেলগুলো এড়িয়ে চলার জন্য নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন। সদ্য আইএসকেপি (আইএসআইএস-কে) -এর হামলায় কুন্দুজ মসজিদে শতাধিক মানুষ হতাহতের পর এই বার্তা আসলো।
গত আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানে ইসলামী আমিরাত ঘোষণা করে তালেবান। দেশটিতে চলমান মানবিক বিপর্যয় এড়াতে এবং অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সহায়তা চাইছে তারা।
'নিরাপত্তা হুমকি'র কথা উল্লেখ করে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, "সেরেনা হোটেল বা তার কাছাকাছি থাকা মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে সে জায়গা ত্যাগ করতে হবে।"
ব্রিটেনের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস যোগ করেছে, "আফগানিস্তানে ঝুঁকি বাড়তে থাকায় সেখানকার হোটেলগুলোতে, বিশেষ করে কাবুলে কাউকে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।"
তালেবানরা আফগানিস্তান দখলের পর অনেকেই দেশটি ছেড়ে চলে গেলেও বেশ কিছু সাংবাদিক এবং সাহায্যকর্মী এখনও রাজধানীতে রয়ে গেছেন।
কাবুলের সুপরিচিত সেরেনা হোটেলে অবস্থান করছেন তাদের মধ্যে অনেকেই। এর আগে দু'বার তালেবানদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু এই বিলাসবহুল হোটেলটি এখন রয়েছে বেশ ঝুঁকিতে।
২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে, এই হোটেলে হামলা চালায় চার কিশোর বন্দুকধারী। সে হামলায় এএফপির একজন সাংবাদিক এবং তার পরিবারের সদস্যসহ মোট নয়জনকে হত্যা করা হয়।
এরও আগে ২০০৮ সালে, সেরেনা হোটেলে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ছয়জন নিহত হয়।
মার্কিন সহায়তার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা চলছে
আগস্টে আফগানিস্তান থেকে বিদেশী নাগরিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ আফগানদেরকে সরিয়ে নেওয়ার সময় একটি আসন্ন হুমকি সম্পর্কে সতর্কবার্তা জারি করেছিল ন্যাটো দেশগুলো। কাবুল বিমানবন্দর থেকে সকলকে দূরে থাকার উপদেশ দিয়েছিল তারা।
এর ঘণ্টাখানেক পরেই, বিমানবন্দরের একটি গেটের পাশে ভিড়ের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরিত হয়। আফগান বেসামরিক নাগরিকের পাশাপাশি ১৩ জন আমেরিকান সেনা নিহত হন সে হামলায়।
সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিল আইএসকেপি। এরপর গত শুক্রবার নামাজের সময় কুন্দুজের মসজিদে আরেকটি বোমা হামলা চালানো হয়। মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর থেকে এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।
এদিকে, গত সপ্তাহ শেষে কাতারের দোহায় প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, এ বৈঠকে নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মার্কিন সহ অন্যান্য বিদেশী নাগরিক এবং আফগানদের নিরাপদ প্রস্থানের পাশাপাশি নারীদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ সহ মানবাধিকারের উপর জোর দিয়েছে তারা।
তিনি বলেন, সরাসরি "আফগান জনগণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী মানবিক সহায়তার বিধান" নিয়েও আলোচনা করেছে উভয়পক্ষ।
প্রাইস এক বিবৃতিতে বলেন, "মার্কিন প্রতিনিধিদলের সাথে আলোচনাটি স্পষ্ট এবং পেশাদার ছিল। তবে, তালেবানকে তাদের কাজের মাধ্যমে বিচার করা হবে, কথার মাধ্যমে নয়।"
এ বিষয়ে তালেবান জানিয়েছে, আফগানিস্তানে সাহায্য পাঠাতে সম্মত হয়েছে আমেরিকা। তবে, যুক্তরাষ্ট্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে কেবল আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া, তাদের যেকোনো রকমের সহায়তা শুধুমাত্র আফগান জনগণের কাছেই যাবে, তালেবান সরকারের কাছে নয়।
- সূত্র: আল-জাজিরা