‘‘বিজেপি ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ করে’’ মার্কিন সংস্থার প্রতিবেদন ঘিরে অভিযোগ রাহুল গান্ধির
ভারতে হিন্দুত্ববাদি দল- বিজেপির ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক প্রচার বন্ধে পদক্ষেপ নেয় না ফেসবুক। প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম- ওয়ালস্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন সূত্র ধরে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধি অভিযোগ করেন যে, এতে প্রমাণ হয় সামাজিক গণমাধ্যমটিকে বিজেপি এবং তাদের রাজনৈতিক অঙ্গ:সংগঠন আরএসএস নিয়ন্ত্রণ করছে।
''ফেসবুক হেট-স্পিচ রুলস কলাইড উইথ ইন্ডিয়ান পলিটিক্স- কোম্পানি এক্সিকিউটিভ অপোজড মুভ টু ব্যান কনট্রোভার্সাল পলিটিশিয়ান'' শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতাকর্মীদের বিদ্বেষমূলক এবং বিতর্কিত কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণে ফেসবুকের অনীহা স্পষ্ট। ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার বন্ধে কোম্পানিটি সাম্প্রতিক সময়ে যে নীতিমালা করেছে, বিজেপি নেতাদের পোস্টের ক্ষেত্রে তা এড়িয়ে চলেছে সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি জায়ান্টটি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল তাদের প্রতিবেদনে আরও জানায়, সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির একজন নির্বাহী তাদের জানিয়েছেন, ''বিজেপি কর্মীদের পোস্ট নিয়ন্ত্রণ বা তাদের কাউকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হলে- তাতে ভারতে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'' বর্তমান এবং প্রাক্তন কর্মীদের বরাত দিয়ে নিবন্ধে বলা হয়, বিজেপির প্রতি ফেসবুকের "পক্ষপাতিত্বের বিস্তৃত ধারাবাহিকতা" রয়েছে। খবর এনডিটিভির।
এ অবস্থায় ভারতে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজেপি সরকারের নানা উদ্যোগের ব্যর্থতা নিয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে সোচ্চার রাহুল গান্ধি আজ রোববার (১৬ আগস্ট) এক টুইট করেন।
সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, ''বিজেপি এবং আরএসএস ভারতে বহুল ব্যবহৃত গণমাধ্যম ফেসবুক এবং হোয়াটস অ্যাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। এগুলো ব্যবহার করে তারা বানোয়াট সংবাদ এবং ঘৃণামূলক প্রচারণা চালায়। নির্বাচনী রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে দীর্ঘদিন ধরেই এমন অপ-প্রভাব সৃষ্টি করে আসছে তারা। যদিও শেষপর্যন্ত মার্কিন গণমাধ্যম প্রকৃত সত্যটি ফাঁস করে দিয়েছে।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ওপর শীর্ষ নেতা শশী থারুরও বিষয়টির গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেন।
রিটুইটে তিনি বলেন ''তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি অবশ্যই এই প্রতিবেদনগুলি সম্পর্কে ফেইসবুকের ব্যাখ্যা শুনতে চাইবে। ভারতে ঘৃণাসূচক বার্তা প্রচার নিয়ে তারা কী করছে- সেটাও জানতে চাওয়া হবে।''
এসব কিছুর প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রায় তিন বছর পুরোনো কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ তুলেছেন বিজেপি নেতৃবৃন্দ।
বিজেপি সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, ''হেরে যাওয়া রাজনীতিবিদ যারা নিজ দলের কর্মীদেরই অনুপ্রাণিত করতে পারে না- শুধুমাত্র তারাই বিজেপি এবং আরএসএস পুরো বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করছে- এমন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। গত নির্বাচনের আগে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারিতে আপনাদেরই জড়িত থাকার কথা জানা গিয়েছিল। এখন আবার আমাদের প্রশ্ন করার দুঃসাহস কিভাবে হয়?''
গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লি দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়া বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র তার টুইটে বলেন,''অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, কংগ্রেস আবারো কোনো গুরুতর অপরাধ করে- তা ধামাচাপা দিতে ফেসবুককে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করছে। ভারতে মুক্তবাক এবং গণতান্ত্রিক মতামত চর্চা বাধাগ্রস্ত করার দিক থেকে কংগ্রেসের গোপন অপরাধের পরিমাণ ভাসমান হিমশৈলের সমান। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি ছিল যার চূড়ামাত্র।''