মারিউপোল স্টিলওয়ার্কস: 'আহত ও মৃত ব্যক্তিতে ভরা আমাদের বাঙ্কার’
মারিউপোলে অবরুদ্ধ স্টিলওয়ার্কে আটকে থাকা ইউক্রেনীয়রা সেখানকার ধসে পড়া ভবনের নীচে আটকা পড়েছেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন সেখানে অবস্থানরত এক ডিফেন্ডার।
মারিউপোলের শেষ প্রতিরোধ ঘাঁটি আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানায় ঢোকার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই প্ল্যান্টেই অবস্থান নেওয়া বিতর্কিত আজভ রেজিমেন্টের স্যাটোস্লাভ পালামার বলেন, "যতক্ষণ আমরা এখানে আছি, ততক্ষণ মারিউপোল ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।"
এদিকে, টেলিভিশনে প্রচারিত এক সভায় পুতিন বলেন কারখানার মধ্যে জঞ্জাল বেয়ে ভেতরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
এর পরিবর্তে তিনি পুরো শিল্প অঞ্চলটি ঘেরাওয়ের নির্দেশ দিয়েছেন যেন একটা মাছিও বের হতে না পারে।
পুতিন বলেন, বিশাল ওই শিল্পাঞ্চলে ঢুকে পড়া বাস্তবসম্মত কাজ হবে না। সেখানে দুই হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা রয়েছে। আজভস্তাইলে ঢুকলে রুশ সেনাদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
কয়েক সপ্তাহের ভারী বোমাবর্ষণ এবং তুমুল লড়াইয়ে মারিউপোলের বেশিরভাগ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজভ বন্দরের সমুদ্র দখল করা রাশিয়ানদের একটি প্রধান লক্ষ্য।
ক্যাপ্টেন পালামার বলেন, রাশিয়ানরা যুদ্ধজাহাজ থেকে ইস্পাত প্ল্যান্টে গুলি চালায় এবং বাঙ্কার-ধ্বংসকারী বোমা ফেলে।
"আজভস্তাইল অঞ্চলের সব ভবন কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। বাঙ্কারের ভেতর আমাদের সাথে থাকা অনেকেই আহত। এছাড়া, মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছে বেশ কিছু বেসামরিক লোক," বলেন ক্যাপ্টেন পালামার।
মারিউপোলে কতজন ইউক্রেনীয় ডিফেন্ডার রয়ে গেছে জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন পালামার উত্তর দেন "আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট"।
কিন্তু, তার এই তথ্য যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরশহর মারিউপোলেই যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি। রুশ সেনারা শুরু থেকেই এই শহরের দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে।
মারিউপোল সম্পূর্ণভাবে দখল করতে পারলে কৌশলগত দিক থেকে ইউক্রেনকে একেবারে কোণঠাসা করতে পারবে রাশিয়া। কারণ দেশটির পূর্বাঞ্চল রয়েছে মস্কোপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে। ফলে দখল করতে পারলে সহজেই ওই শহরের সঙ্গে রুশ দখলে থাকা ক্রিমিয়া অঞ্চলকে সংযুক্ত করতে পারে মস্কো।
- সূত্র- বিবিসি