মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় বাড়ছে মৃত্যুর আশঙ্কা
রুশ বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে আজভস্টল ইস্পাত কারখানার নিচে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন মারিউপোলের হাজার খানেক মানুষ। বন্দর শহরটি রাশিয়ার দখলে যাওয়ার পরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোনো হামলা যেন না করা হয় সেখানে। শুধু কারখানা থেকে বের হওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হোক। একটি মাছিও যেনো সেখান থেকে বের হতে না পারে।
এমন পরিস্থিতিতে বদ্ধ কারখানায় আটকা পড়ে পর্যাপ্ত অক্সিজেন, খাবার ও জরুরি চিকিৎসার অভাবে বন্দীদের জীবন নিয়ে আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। তাদের সেই উদ্বেগ অনেকটা সত্যি হতে দেখা গেছে সম্প্রতি প্রকাশিত মারিউপোল শহরের কিছু ভিডিও এবং ছবিতে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শহরের উত্তরে ইলিচ লোহা ও ইস্পাত কারখানার আশেপাশে বেশ কয়েকটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তাদের পোশাক দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তারা বেসামরিক মানুষ ছিলেন। ভিডিও দেখে অন্তত ২৩টি মরদেহ চিহ্নিত করেছে বিবিসি।
পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর মারিউপোল। সংঘাতের শুরু থেকেই শহরটি দখল করতে মরিয়া ছিল রাশিয়া। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনী ও সাধারণ মানুষের প্রতিরোধে প্রায় দুইমাস সময় লেগেছে রাশিয়ার লক্ষ্যপূরণে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি, ডনবাসে যাতে কোনো প্রাণ না বাঁচে, তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর রাশিয়া।
আজ রোববার ডনবাস এলাকায় পোপাসনায় দুটি উদ্ধারকারী বাস পাঠানো হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজভস্তাল ইস্পাত কারখানা থেকে এ পর্যন্ত ২০ জন বেসামরিক লোকেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আজভ রেজিমেন্টের ডেপুটি কমান্ডার সিয়াতোস্লাভ পালামার বলেন, "নারী ও শিশুসহ ২০ জন বেসামরিক নাগরিককে একটি সুরক্ষিত জায়গায় পাঠানো হয়েছে এবং আমরা আশা করছি, তাদেরকে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল জাপোরিঝিয়াতে সরিয়ে নেওয়া হবে।"
এদিকে ইউক্রেন প্রশাসন জানিয়েছে, পুরো ডনবাস এলাকায় হামলা অব্যাহত রয়েছে। উত্তর-পূর্বে খারকিভ শহরেও হামলা চলছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিজেরাও ঘোষণা করেছে, তারা ডনবাস এলাকায় একাধিক ইউক্রেনীয় সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের আজ ৬৬তম দিন। আজও দেশজুড়ে চলছে রুশ-ইউক্রেনীয় বাহিনীর সংঘাত। রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই সংঘাতকে যুদ্ধ নয় বরং বলা হচ্ছে, 'বিশেষ সামরিক অভিযান'। তবে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার এ দাবি মানতে নারাজ। তারা এটিকে যুদ্ধই বলছে। সেইসঙ্গে পশ্চিমের আশঙ্কা আসন্ন ৯ মে, রাশিয়ার বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে 'সর্বাত্মক যুদ্ধ' ঘোষণা করতে পারে ক্রেমলিন।
- সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, ডেইলি মেইল