রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাতে ভারতকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
রাশিয়ার ওপর থেকে ভারতের অস্ত্র নির্ভরতা কমাতে প্রতিরক্ষা খাতে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করতে চলেছে বাইডেন প্রশাসন। এই প্যাকেজ বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার তালিকায় ইজরায়েল ও মিশরের পরে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ হবে ভারত। তবে কবে নাগাদ এই প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে এবং কী ধরনের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কিনেছে ভারত। বিষয়টি সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের চিন্তার কারণ হয়ে না দাঁড়ালেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কে কিছুটা উদ্বিগ্ন আমেরিকা। রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল কেনার বিষয়টিও ভারতকে ভেবে দেখার অনুরোধ করেছিল ওয়াশিংটন। আর অস্ত্র কেনার প্রশ্নে সরাসরি সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণার পরিকল্পনার কথা জানালো হোয়াইট হাউস।
ভারত সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কেনে রাশিয়ার কাছ থেকে। তবে 'স্টকহোম পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট' থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে রাশিয়ার থেকে অস্ত্র কেনা কিছুটা হলেও কমেছে ভারতের। তবুও মস্কোই নয়াদিল্লির সব চেয়ে বড় প্রতিরক্ষামিত্র।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, ইউক্রেন আক্রমণ করা সত্ত্বেও মস্কোর প্রতি ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব কমেনি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আনা একাধিক রাশিয়া-বিরোধী প্রস্তাবে ভোট দেয়নি নয়াদিল্লি। প্রসঙ্গত, আগামী সপ্তাহে টোকিওতে কোয়াড-এর বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আসন্ন জুলাইয়ে জি-৭ বৈঠকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে।।
এদিকে, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, সহজতর প্রযুক্তির পাশাপাশি ভারতের এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্তে অটল থাকার অন্যতম কারণ ছিল, কম দাম। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্র সচিব ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের ভারত সফরের পরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পশ্চিমা অস্ত্রের প্রতি ভারতের অনীহার কারণ হিসেবে একই যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়া থেকে অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম না কেনার জন্য নয়াদিল্লির ওপর ধারাবাহিক ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিকল্পের মূল্য চড়া হওয়ার কারণেই তা কার্যকর হচ্ছে না। ভারতের পক্ষ থেকেও এই যুক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। দামের পাশাপাশি, যৌথ উদ্যোগে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় রাশিয়ার শর্ত অনেক সহজ বলে দাবি করে ভারত।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ, টাইমস অফ ইন্ডিয়া