লাল আভার ওষ্ঠরঞ্জক, যেভাবে মন কাড়ল
আগাথা ক্রিস্টির সেই বিশ্বখ্যাত ছোটখাটো গড়নের বিশেষ গোঁফধারী বেলজিয়ান ডিটেকটিভ এরকূল পোয়ারো নারীর ফ্যাশন জগৎ সম্পর্কে অত্যন্ত জ্ঞানবান। কোন নারীর চরিত্রের সাথে কোন রঙের আভার লিপস্টিক জুতসই হবে, তিনি বেশ বলে দিতে পারেন। আবার লিপস্টিকের রঙের আভা বিবেচনায় নিয়ে শনাক্ত করতে পারেন গুরুতর অপরাধটি সংঘটিত করেছে কোন লিপস্টিকধারী। খুনের রহস্য উদঘাটনে আগাথা ক্রিস্টির উপন্যাসের অর্ধেক পেরিয়ে যাবার পর যখন জানা গেল ভিকটিম কখনো লিপস্টিক পরতেন না, কাহিনীর হঠাৎ বাঁকবদল ঘটল; এসে গেল এক লিপস্টিক ক্লু। সত্যজিৎ রায়ের মহানগরের নায়িকা লিপস্টিক লাগিয়েই অফিস করেন কিন্তু বাড়ি ফেরার আগে ভালো করে ঠোঁট মুখে নেন, যেন তার রক্ষণশীল মধ্যবিত্ত পরিবারটি হঠাৎ তার ওপর চটে না যায়। লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরকা নামে একটি সিনেমা হয়েছে, এ নয়ে বিতর্কও হয়েছে।
লাল লিপস্টিকের নারীকে অন্ধকারের সমাজ অঙ্কশায়িনী করলেও দিনের বেলায় প্রত্যাখ্যান করেছে—সেই লাল লিপস্টিকই আবার নারীর জন্য সার্বজনীন ভোটাধিকারে অংশগ্রহণের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নারী স্বাধীনতা আন্দোলনের বর্ণ প্রকাশিত হয়েছে লাল লিপস্টিক। নারীর জন্য লিপস্টিক সাংস্কৃতিক চিহ্ন- নারীর ক্সেুয়ালিটি, সেনসুয়ালিটি, ফেমিনিনিটি এবং আশা-আখাঙ্খার প্রতীক মনে করা হয়েছে লিপস্টিককে। বঙ্গীয় বিবেচনায় 'এফ' শব্দের মতো কিছু অশ্লীল পঙক্তি থাকলেও স্পিড গ্যাঙ্গের রেড লিপস্টিক গানটা উপেক্ষা করার উপায় নেই। নারীরী যোগাযোগ নেই প্রেমিক রাস্তায়, যোগাযোগ কেবলই ফোনে। কাতর অনুরোধ।
But I am on the road on I am never home Baby, kiss the phone with red lipstick.
ফোনটাতে লাল লিপস্টিকের চুম্বন লাগিয়ে দাও।
কলঙ্কিনীর ভূষণ
রাতের আধারে গ্রিক এলিটরা যাদের শয্যাসহ লাভ করে পরম তৃপ্তি পেতেন। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই তাদের বলতেন কলঙ্কিনী। এই বাংলাতেও তাই এবং এখনো সেই চর্চা বহাল রয়েছে।
প্রাচীন গ্রিসে লিপস্টিক মাখানো ঠোঁটের নারীকে এক কথায় বলা হতো বাজারের নারী। এটাও সত্যিই সেকালের বারবনিতার যৌনকর্মী শব্দটি মাত্র কয়েক দশকের পুরোনো) সাজসজ্জার অন্যতম উপাদান ছিল ওষ্ঠ বিরঞ্জক লিপস্টিক। একটি সাধারণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয় পৃথিবীর ৫৫ ভাগ কৈশোবোতীর্ণ নারী লিপস্টিক ব্যবহার করে থাকে। প্রাচীন মিশরে পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। সেখানে নারীর পাশাপাশি পুরুষও ওষ্ঠ রাঙ্গাতে পছন্দ করত। তাদের প্রিয় রঙ্গের আভা ছিল ম্যাজেস্টা, লালচে কালো এবং লাল। সাম্রাজ্যেও নারী পুরুষ উভয়ই ঠোঁট রাঙ্গানোর প্রসাধন ব্যবহার করত। ফলে নারী পুরুষের পার্থক্য নির্ধারণ নয় বরং তা ব্যবহারকারীর সামাজিক শ্রেণী নির্ধারণ করত। গরীব রোমানদের ঠোট রেড ওয়াইন নির্ভর হয়ে উঠে। এই লালচে ধরণটা বেশি সময় টিকে থাকত না, তুলনামূলকভাবে এটা কম বিষাক্ত হতো—ফলে বরং তাদেরই বিজয়ী মনে করা যায়। প্রাচীন মেসোপটোমিয়ায় মনিমুক্তোর গুঁড়ো মিশিয়ে বিরজ্ঞনের গুরুত্ব বাড়ানো হতো।
লিপিস্টিকের এগ্রিসটেনশিয়াল ক্রাইসিস
অস্তিত্বের সঙ্কটের চেয়ে ভয়ঙ্কর কিছু নেই। অস্তিত্ব সঙ্কট ডাইনোসোরকেও প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীতে পরিণত করেছে। সেই সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছিল লিপস্টিক বিশ্বব্যাধি কোভিড ১৯ পৃথিবীকে গ্রাস করে নেয়। ঠোঁট যদি মুখোশে ঢাকাই পড়ে থাকে তাহলে লিপস্টিক লাগানোর কী দরকার? বাধ্যতামূলক মুখোশ পরা যদি অব্যাহত থাকত লিপস্টিক ইন্ডাস্ট্রির লালবাতি জ¦লা ঘনিয়ে আসত। ্কটি অনুমিত হিসেবে দেখানো হয়েছে একজন সাধারণ আমেরিকান নারী একজীবনে ১৭৮০ ডলারের লিপস্টিক কিনে থাকেন। মুখোশ বহাল যখন চলতে থাকে নেল পালিশ ও বিক্রি বেড়ে যায়। সেই সাথে বিক্রি বাড়ে চক্ষু সজ্জা সরঞ্জামের। আই শ্যাডো ও নেইল ভার্নিশ কিছুটা ঘাটতি মেটালেও এসব কখনো লিপস্টিকের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারে না।
'লিপস্টিক আন্ডার মাই মাস্ক' বলে কেউ কেউ বিশ্বব্যাধিকালে জানাল দিয়েছেন তারা লিপস্টিক ছাড়েননি। তবুও খবর বেরিয়েছে লিপস্টিক ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হবার পথে। কিংবা লিপস্টিক কারখানায় তালা ঝুলছে কিংবা লিপস্টিক কারিগর এখন ম্যাচিং মুখোশ তৈরির কারখানায় যোগ দিয়েছে। লিপস্টিক থাকবে তো? এ প্রশ্ন আর ধ্বনিত হচ্ছে না, অস্তিত্বের সঙ্কট কেটে গেছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে এবার আশ্বস্ত করতে হবে নাক-মুখ ঢেকে রাখার মতো প্যান্ডেমিক বা বিশ্বব্যাধি আর আসবে না।
লিপস্টিক মৃত্যু
৩ নভেম্বর ১৯৩০। যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের ম্যারাথন কাউন্টি নরমাল স্কুলের মিস ওথেলা উইঙ্গার কাছাকাছি বাবার বাড়িতে একটি পার্টিতে যাবার প্রস্তুতি নিলেন, লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙ্গালেন।
হঠাৎ মনে হলো তার ঠোঁট জ্বলে যাচ্ছে, যন্ত্রণা হচ্ছে, যন্ত্রণা ক্রমেই বাড়ছে এবং অসহ্য হয়ে উঠছে। জ¦ালাপোড়া থুতনি ও গলায় নেমে এসেছে, সাথে যন্ত্রনাও। দ্রুত ডাক্তারের কাছে নেওয়া হলো। ডাক্তার দেখলেন ঠোঁট, চিবুক ও গলা ফুলে গেছে, মুখে ঘা দেখা দিয়েছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে। তারপর জ¦র। উত্তাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। ডাক্তার সমস্যা সনাক্ত করতে পারলেন না। দু'দিন পর ওথেলা উইঙ্গার মারা যায়।
মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে বোর্ড বসে। প্যাথোলোজিস্ট তার লিপস্টিক পরীক্ষা করেন। মিস উইঙ্গার এমন একটি পেপার ম্যাচ লিপস্টিক ব্যবহার করেছেন যা বাজার পায়নি বাজারে তখন ছিলও না। ব্যবসায়ের বিজ্ঞাপনের জন্য কিছু পেপার ম্যাচ লিপস্টিক এক সময় বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল। মিস উইঙ্গার প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করবেন বলে রেখে দিয়েছিলেন। এটা কেমন ছিল অনুমান করতে পারেন—বড় আকৃতির একটি ম্যাচ বক্সে গোটা দশেক ম্যাচের কাঠি—কাঠির অগ্রভাগে লিপস্টিক। কিন্তু জমিয়ে রাখা এই প্যাকেটের পেপার ম্যাচ লিপস্টিকে একটি মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার উদ্ভব ও সংক্রমণ ঘটে। এতেই রোগ সনাক্ত করার আগেই তার মৃত্যু ঘটে। পরে এ ধরনের লিপস্টিক বাজার থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়।
লিপস্টিক প্রেমিকার লিপস্টিক
লিপস্টিকের একটি ঘাতক উপাদা শিসা। মানে ভালোবেসে চুমু খেতে গিয়ে লিপস্টিক লেপ্টে দিল বলে শিশুটির পিঠে দু'চার ঘা পড়ত্ েপারে, কিন্তু তার চেয়ে ভয়ঙ্কর কিছুও ঘটেছে ফ্যাশান দুরস্তা মা তা হয়তো বিবেচনাতেই আনছেন না।
শিশুটি লেড পয়জন শিসা জাত বিষও যে একই সঙ্গে ভক্ষণ করল। শুধু শিশুর নয়, কিছু শিসাবিষ মা তো ভক্ষণ করে চলেছে। শিসা থেকে উদ্ভুত নিউট্রোক্সিন শিশুর ভাষা শেখা ও পড়াশোনা করাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে সব লিপস্টিকেই শিসা আছে এমন নয়। কালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় দেখা গেছে সেখানকার নারীরা দিনে ২ থেকে ১৪ বার ঠোঁটে লিপস্টিক ঘষে থাকেন। এই প্রক্রিয়ায় গড়ে ৮৭ মিলিগ্রাম লিপস্টিক তাদের শরীর শোষণ করে থাকে। লাল এবং গাড় রঙের লিপস্টিকে সবচেয়ে বেশি মাত্রার শিসা ও অন্য ধাতব থেকে থাকে। এসব ক্ষেত্রে অন্তত নিজেকে রক্ষা করার জন্য ঠোঁটের উপর লিপস্টিক প্রতিরোধক একটি বেস ব্যবহার করে তার উপর লিপস্টিক প্রয়োগ ঝুকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
ন্যুড লিপস্টিক না রেড লিপস্টিক
ন্যুড লিপস্টিক শুনে অকারণ উত্তেজনার প্রয়োজন নেই, ক্ষুব্ধ হওয়ার নয়। ন্যুড লিপস্টিকের সাথে নগ্নতার সম্পর্ক নেই। ন্যুড লিপস্টিকের রঙ ও আভা ব্যবহারকারীর ঠোঁটের রঙের সবচেয়ে কাছাকাছি—ঠোঁটের ন্যাচারাল কালার যে লিপস্টিকে প্রতিফলিত সেটাই ন্যুড লিপস্টিক। এই ধরনের লিপস্টিকের প্রতি আগ্রহ কোনো কোনো নারীর গড় শতকের পঞ্চাশের দশকেও ছিল, কিন্তু নব্বইয়ের দশকে এসে হঠাৎ এর জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। অনেক নারীর কসমেটিক ব্যাগেই দু'একটি স্টিক জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়। বাদামি থেকে গোলাপি অনেক ধরনেরই হয়ে থাকে। কেনার সময় আয়নায় নিজের ঠোঁট একবার দেখে লিপস্টিক মিলিয়ে নিলেই হলো। নব্বইয়ের দশকে নারীদের একাংশেরও মনে হয় হয়েছে পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের হারাতে উদয়াস্ত ব্যস্ত থাকতে থাকতে তাদের ফেমিনিনিটি নারীত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। ন্যুড লিপস্টিক তাদের স্বাভাবিক অবস্থাটা ফিরিযে দিচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে নারীকে তার 'স্কিন টোন' ভালো করে জানতে ও বুঝতে হবে। ফর্সা স্কিন টোনের জন্য গোলাপি আভার লিপস্টিক—যেমন 'ওহ মাই গুয়াভা' মাঝারি স্কিন টোনের জন্য নটি কিংবা 'চাই লাভ ইউ' আর গাড় ত্বকের জন্য বার্সিলোনা বা 'ওহ লা লা' লিপস্টিকের ব্যবস্থাপত্র কোনো কোনো প্রসাধন বিশেষজ্ঞ দিয়ে থাকেন। ২০২৩ এর বসন্তে সাধারণ ঠোঁটধারীর আগ্রহ বেড়েছে 'বাবলগাম পিচ' 'প্যাস্টেল পার্পল' এবং মিউটেড পিচ বর্ণের প্রতি। এ সময় কোভিডকালের বিবর্ণ দশ কাটাতে সামনে এসেছে 'ব্রাইট অ্যান্ড বোল্ড'। আওয়াজ ওঠেছে: বোল্ডার ডার্কার বেটার। বেগনি রঙ ফিরে এসেছে ডেয়ারিং। পার্পল হিসেবে। রেড লিপস্টিক আন্দোলন ও নারীর গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় বিংশ শতকের শুরুতে মিলেমিশে যায়। মার্কিন মেকআপ শিল্পের উদ্যোক্তা এলিজাবেথ আর্ডেন ১৯১২ সালে ১৫০০০ আন্দোলনকারী 'রেড ডোর বেড' লিপস্টিক টিউব উপহার দেন এবং তারা ঠোঁট লাল করে নিউ ইয়র্কের রাস্তায় মার্চ করেন।
লাল লিপস্টিক আন্দোলন
১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালের ম্যাসকিউলিন কোড অব পাওয়ার গুঁড়িয়ে দিতে বিদ্রোহী নারীরা লাল লিপস্টিক ধারন করেন। জার্মান নাৎসি প্রধান এডলফ হিটলার লাল লিপস্টিক ভয়ঙ্কর অপছন্দ করতেন। সুতরাং হিটলারের বিরুদ্ধে নারীর যুগপৎ দেশপ্রেম এবং নারীত্ব প্রকাশের প্রতীক হিসেবে তারা লাল লিপস্টিকই ধারন করলেন। ফেমিনিজম আন্দোলনে থার্ড ওয়েভ—তৃতীয় ঢেউ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় লিপস্টিক ফেমিনিজম। ফেমিনিজমের দ্বিতীয় ঢেউ আন্দোলন হিসেবে পাশ্চাত্যে ১৯৬০-এর দশকে বিরাজ করেছে—এই ঢেউ আমেরিকার তথা ইউরোপের সৌন্দর্য শিল্পকে চ্যালেঞ্জ করেছে, অনেক নারীত্বজ্ঞাপন পোশাক ও সাজগোজ প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ব্র্যাসিয়ার, ফলস আইল্যাশ, নারী ম্যাগাজিন। তারা অসনাতন পোশাক ও লোমবহুল পা নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। উলস্টোনক্র্যাফট এর যুগে তিনি নারীর রূপ দেখানো প্রবণতা প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানানো হয়েছে। সিমন দ্য বুভেয়র নারীকে তার শরীরের বাইরে নিয়ে আসতে চেয়েছেন, নিজস্ব অন্তর্নিহিত শক্তিতে উত্থিত হবার আহ্বান জানিয়েছেন।
লিপস্টিক ও বারবণিতাবৃত্তির সম্পর্ক ১৯২০-এর দশকেই বর্জিত। এলিজাবেথ আর্ডেনের লাল লিপস্টিক প্রণোদনা আন্দোলনে গতি এনেছে। ১৪৫৩ সালে লাল লিপস্টিককে নারী সেক্সুয়ালির সার্বভৌমত্ব প্রকাশিথ হয়েছে। মেরিলিন সমরো লাল লিপস্টিককেও ধরে নেওয়া হয়েছে আন্দোলনেরই অংশ। ২০১৭-তে নারীর আন্দোলন 'আই অ্যাম হোয়াট আই মেকআপ'। নতুন সহস্রাব্দে হলিউডের সিনেমা লিপস্টিক ফেমিনিজমকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে এসেছে। লাল লিপস্টিক শুধু নারীর ঠোঁটের লালবর্ণ নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে তার স্বাধীনতার আন্দোলন প্রত্যাশার বিশ্ব।
বলা হয়ে থাকে, কিশোরীর ঠোঁটে লাল লিপস্টিক লাগিয়ে দাও সে বিশ্বজয় করবে।