অবশেষে স্থগিত আইপিএল
ভারতে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই, উল্টো অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। মরণঘাতী এই ভাইরাসটি থাবা বসিয়েছে আইপিএলেও। কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুজন ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে তাদের ম্যাচটি পিছিয়ে যায়।
এমন ঘটনার পর আইপিএলের ভাগ্য শঙ্কায় পড়ে যায়। সেই শঙ্কা সত্যি হতে সময় লাগলো না। করোনাভাইরাসের প্রকোপে আইপিএল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘোষণা দেয় বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।
সোমবার কলকাতার দুই ক্রিকেটার বরুণ চক্রবর্তী ও সন্দীপ ওয়ারিয়ারের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। এ ছাড়া কলকাতার আরও কয়েকজন ক্রিকেটার ও স্টাফ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে একজনকে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কালই।
এই এক ঘটনায় বিসিসিআই যখন আসর চালিয়ে নেওয়ার জন্য নতুন উপায়ের খোঁজে, করোনাভাইরাস ততোক্ষণে আইপিএলে বাসা বেধে ফেলেছে। কলকাতার দুই ক্রিকেটারের পর চেন্নাই সুপার কিংসের তিন জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে।
এরপর আরও দুই দলের ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হন। আট দলের টুর্নামেন্টে চার দলেই করোনার হানা, বিসিসিআই তাই আর ঝুঁকি নেয়নি। ক্রিকেটার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে আইপিএলের এবারের আসর স্থগিত করতে বাধ্য হয় ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের কথা বলা হলেও বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশালকে (এএনআই) তিনি বলেছেন, এই মৌসুমে আর আইপিএল হচ্ছে না। এবারের মৌসুমের জন্য স্থগিত করা হয়েছে আসরটি।
আইপিএলের সভাপতি ব্রিজেশ প্যাটেল জানিয়েছেন, ক্রিকেটার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে আইপিএলের এবারের আসর স্থগিত করা হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে আইপিএল সভাপতিও জানিয়েছেন, এই মৌসুমের জন্যই আইপিএল স্থগিত করা হয়েছে।
বিসিসিআই তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'ক্রিকেটার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফসহ আইপিএল সংশ্লিষ্ট কারও স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে নিতে চায় না বিসিসিআই। সবার স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইপিএলে অংশগ্রহণকারীদের সুরক্ষিত ও নিরাপদে ফেরার ব্যবস্থা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বিসিসিআই।'
ভারতে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিভিন্ন প্রদেশে কারফিউ জারি করা হচ্ছিল। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছিল আকাশ পথ। তখনই আইপিএল ছেড়ে দেশে ফিরে যান অস্ট্রেলিয়ার তিন ক্রিকেটার। দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় তাড়াহুড়ো করে দেশে ফেরেন অ্যান্ড্রু টাই, অ্যাডাম জ্যাম্পা ও কেন রিচার্ডসন।
করোনার প্রকোপ বেড়েই যাচ্ছিল, কিন্তু এর মাঝেই চলছিল আইপিএল। এ নিয়ে কম সমােলাচনা হচ্ছিল না। যদিও আইপিএল কর্তৃপক্ষ আসরটি চালিয়ে নেওয়ার কথাই জানিয়েছিল। কিন্তু দলগুলোর ওপর করোনার হানায় সেই সিদ্ধান্তে থাকতে পারলো না তারা। আইপিএল বন্ধে দিল্লির উচ্চ আদালতে সোমবার মামলা করা হয়। এর একদিন পরই স্থগিত করা হলো আসরটি।