অশ্রুসিক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলন ছাড়লেন ওসাকা
ফ্রেঞ্চ ওপেনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানানোর পর নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে গত সোমবার (১৬ই আগস্ট) কান্নায় ভেঙে পড়েন জাপানের টেনিস তারকা নাওমি ওসাকা। বিতর্কিত প্রশ্নকারী সাংবাদিককে পরবর্তীতে 'বুলি' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ওসাকার এজেন্ট।
সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে রাজি না হওয়ায় শাস্তি ঘোষণা করা হলে এ বছরের ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ওসাকা। গণমাধ্যমের কিছু প্রশ্ন তার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বলে জানিয়েছিলেন ২৩ বছর বয়সী এই টেনিস তারকা।
সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে সিনসিনাতি এনকোয়ারারের এক প্রতিবেদক ওসাকাকে প্রশ্ন করেন, 'আপনি আমাদের সাথে কথা বলার জন্য পাগল না, বিশেষ করে এই ফরম্যাটে। এরপরও একটি মিডিয়া প্লাটফর্ম থাকার জন্য আপনি অনেক বাইরের সুবিধা পাচ্ছেন। আপনি এই দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রাখেন কীভাবে?'
ওসাকা দুবার সেই প্রতিবেদককে তার প্রশ্নটি স্পষ্ট করার আহ্বান জানান এবং অনুষ্ঠানের সঞ্চালক পরবর্তী প্রশ্নে যাওয়ার প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
জাপানী-হাইতিয়ান বংশোদ্ভূত ওসাকা বলেন, 'আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই আমার প্রতি মিডিয়ার অনেক আগ্রহ ছিল। আমার ধারণা, আমার জন্ম-পরিচিতির প্রভাব আছে এর মধ্যে।'
'এমন অনেক কিছুই আছে, যেমন মাঝে মাঝে আমার করা কোনো টুইট বা আমার বলা সামান্য কোনো কথা থেকে অনেক সংবাদ-প্রবন্ধ লেখা শুরু হয়ে যায়। আমি চাইলেই সেটা থামাতে পারি না। আমি ঠিক জানি না এই দুইয়ের মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য রাখতে হয়। আমি বলব, আপনাদের মতো আমিও চেষ্টা করছি একটা রাস্তা বের করতে।' যোগ করেন ওসাকা।
এরপর আরেকজন প্রতিবেদক হার্ড কোর্ট মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি এবং এই সপ্তাহের ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড সাউদার্ন ওপেন থেকে প্রাপ্ত অর্থ হাইতির ভূমিকম্প ত্রাণ প্রচেষ্টায় দান করার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে ওসাকাকে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।
তখন সঞ্চালক অনুষ্ঠান থামিয়ে দেন। ওসাকা চোখ মুছতে মুছতে রুম ত্যাগ করলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলন শেষ করতে আবারও ফিরে আসেন।
ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর ওসাকা জানিয়েছিলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছেন তিনি। এরপর নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য রোলা গাঁরো এবং উইম্বলডন থেকেও সরে দাঁড়িয়েছিলেন টেনিসের বর্তমান 'নাম্বার টু'।
রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ওসাকার এজেন্ট স্টুয়ার্ট ডুগুইড প্রতিবেদকের জিজ্ঞাসাবাদের ধরনকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। দুগুইড বলেন, 'সিনসিনাটি এনকোয়ারারের ওই বুলির মতো লোকজনের জন্যই খেলোয়াড়-মিডিয়া সম্পর্ক এখন এতো খারাপ।'
ওসাকা তার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সবার মনোযোগ আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তার সহকর্মী ক্রীড়াবিদরা এই ব্যাপারে তাকে সাহায্য করেছে।
তিনি বলেন, 'অলিম্পিকে অন্য অ্যাথলেটরা আমাকে এসে বলছিল যে, আমি যেটা করেছি তাতে তারা খুবই খুশি হয়েছে। তাদের সেই কথা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া ছিল। আমি যা করেছি, তা নিয়ে আমি গর্বিত। আমি মনে করি, এটা করা খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল।'