আট ফুটবলারের প্রিমিয়ার লিগে খেলা আটকে দিল ব্রাজিল
কাজটা যেন প্রতিহিংসামূলকভাবেই করলো ব্রাজিল। আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতিতে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের ছাড়েনি প্রিমিয়ার লিগ। এবার ফিফার একটি আইন অনুসরণ করে প্রিমিয়ার লিগের ব্রাজিলিয়ানদের উপর পাঁচ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রাজিল ফুটবল কর্তৃপক্ষ।
আসছে সপ্তাহে লিগের ম্যাচে তাই ক্লাবের হয়ে মাঠে নামতে পারবেন না ফিরমিনো, অ্যালিসন বেকার, এডারসন, ফ্যাবিনিয়ো, গ্যাব্রিয়াল জেসুসসহ মোট আট ব্রাজিলিয়ান।
এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ধরা হয়েছে ১০ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অর্থাৎ সপ্তাহান্তের লিগ ম্যাচের পাশাপাশি মৌসুমের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচেও থিয়াগো সিলভা ও ফ্রেডকে পাবে না যথাক্রমে চেলসি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
যুক্তরাজ্য সরকারের করোনাকালীন ভ্রমণ নীতিমালায় বর্তমানে রেড লিস্টে আছে ব্রাজিল। যে কারণে ব্রাজিল থেকে ফেরত সবাইকেই যুক্তরাজ্যে এসে ১০ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে। ফুটবলারদের ক্ষেত্রেও কোনো ব্যতিক্রম নেই।
প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো তাই এই কোয়ারেন্টিনের বাধ্যবাধকতার জন্য নিজেদের ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক বিরতিতে দেশের হয়ে খেলার অনুমতি দেয়নি।
এদিকের ফিফার একটি আইন অনুযায়ী, কোনো ক্লাব তাদের খেলোয়াড়কে জাতীয় দলের হয়ে খেলার অনুমতি না দিলে জাতীয় দলের অধিকার আছে আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে সেই খেলোয়াড়কে পাঁচ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার।
এই আইনের বলেই প্রিমিয়ার লিগের আট ফুটবলারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রাজিল। তবে লিভারপুল তাদের মূল একাদশের তিনজন (অ্যালিসন, ফ্যাবিনিয়ো, ফিরমিনো) এবং ম্যান সিটি দুইজনকে (এডারসন, জেসুস) হারালেও এভারটনের রিচার্লিসনের উপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি ব্রাজিল।
জানা গেছে, রিচার্লিসনকে অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার এভারটনের প্রতি সদয় হয়েছে ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো নিজে যুক্তরাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন ফুটবলারদের ক্ষেত্রে এই কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা শিথিল করতে। কিন্তু এতে কান দেয়নি যুক্তরাজ্য প্রশাসন।
আর্জেন্টিনা অবশ্য ঠিকই তাদের প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়দের উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তারা যুক্তরাজ্য প্রশাসনের আইনে একটি 'প্লটহোল' বের করতে সামর্থ্য হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে এমি মার্টিনেজসহ আর্জেন্টিনার চার প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলার আশ্রয় নিবে ক্রোয়েশিয়ার একটি ছোট দ্বীপে। সেখান থেকে পরে রওনা দিবে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে। যার ফলে কোয়ারেন্টিনের বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য হবে না তাদের ক্ষেত্রে।
অবশ্য এই চতুরতা প্রদর্শনের জন্যও কম কথা শুনতে হয়নি আর্জেন্টিনার। রোববার ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচটিই পণ্ড হয়ে গিয়েছে এই কারণে। যদিও আর্জেন্টিনা শিবিরের অনেকের দাবি, নিজেদের প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়দের আনতে পারেনি বলেই সেদিন গণ্ডগোল করেছিল ব্রাজিল।
সূত্র: বিবিসি।