উচ্ছ্বাসে-আনন্দে অভিষেকের অপেক্ষায় তিন তরুণ তুর্কি
ভবিষ্যতের জন্য তার দিকে যে নজর দিয়ে রেখেছে বিসিবি, সেটা জানতেন শরিফুল ইসলাম। তবে এতো দ্রুত ওয়ানডে দলে ডাক পেয়ে যাবেন, তা ভাবেননি বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার। বাঁহাতি এই পেসারের আনন্দ তাই বাধভাঙা। জাতীয় দলের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি খেলা তরুণ গতি তারকা হাসান মাহমুদের কাছেও ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়া অপ্রত্যাশিত।
৪টি টি-টোয়েন্টি খেলা ডানহাতি অলরাউন্ডার মাহেদী হাসান অনেকদিন ধরেই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। ডাক মিলে যাওয়ায় উচ্ছ্বাসের কমতি নেই তারও। তবে এই তিন তরুণের কেউ-ই উচ্ছ্বাসের জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন না। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে খেলার আগে সতর্ক থাকছেন তারা। ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা শরিফুল, হাসান ও মাহেদী তাদের ভাবনার কথা জানিয়েছেন।
শরিফুল ইসলাম
অনেক ভালো লাগছে খবরটা শোনার পর। অনেক খুশি লাগছিল যে আমি প্রথমবারের মত জাতীয় দলের স্কোয়াডে আছি। ভালো কিছু করার চেষ্টা করব। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের পর প্রেসিডেন্টস কাপ, বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে মোটামুটি ভালো খেলেছি। সেরা একাদশে যদি জায়গা পাই, তাহলে সেই পারফরম্যান্স দেওয়ার চেষ্টা করব। জায়গা ধরে রাখার চেষ্টা করব।
যখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলতাম বা যখন থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি, তখন থেকেই ভাবতাম যে সাকিব ভাই, মুশফিক ভাই, রিয়াদ ভাই, তামিম ভাই, মুস্তাফিজ ভাইদের সাথে যদি খেলতে পারি, থাকতে পারি। এটা স্বপ্ন ছিল, সেটা পূরণ হয়েছে। চেষ্টা করব পারফর্ম করে নিয়মিতভাবে তাদের সাথে থাকার জন্য।
সিনিয়ররা আমার ভুল ধরিয়ে দিচ্ছেন, নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য যেটা করা দরকার, সেটা শেখাচ্ছেন। গেমের ভেতরে সেটা যেন প্রভাব না ফেলে, তার জন্য প্র্যাকটিসেই একবারে সব কিছু ধরিয়ে দিচ্ছেন। ভুল সঠিক করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ চেষ্টা করছি।
মাহেদী হাসান
অবশ্যই পরিশ্রম করে আসছি বাংলাদেশ দলে খেলার জন্য। আগে তো আমার টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে, এখন ওয়ানডেতে সুযোগ এসেছে। দলে ডাক পাওয়া অনুপ্রেরণা, চাপ নয়। আমরা যেহেতু ক্রিকেটার, চাপ নেওয়ার কিছু নেই। যেহেতু আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি, চেষ্টা করছি, এটা আমাদের অনেক কিছু। চাপ নিলে সেটা ম্যাচে প্রভাব পড়ে, ম্যাচের বাইরে চাপ ওরকম আসে না।
যদি সেরা একাদশে সুযোগ হয়, নিজের সেরাটা দেয়ার অবশ্যই চেষ্টা থাকবে। যেহেতু আমি বোলিং করতে পারি, ব্যাটিং করতে পারি, যে জায়গায় যেখানে সুযোগ আসে, চেষ্টা করব কাজে লাগানোর। যেহেতু আমি অলরাউন্ডার, চেষ্টা থাকবে তিন ফরম্যাটে ভালো করার জন্য। আমার তরফ থেকে শতভাগ চেষ্টা থাকবে।
হাসান মাহমুদ
যেদিন থেকে খেলা শুরু করেছি, সেদিন থেকেই জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন ছিল। এখন সুযোগ পেয়েছি, আমি আমার সর্বোচ্চটা চেষ্টা করব। সিনিয়রদের অনুপ্রেরণা অবশ্যই কাজ করে। দেশি-বিদেশি যে ক্রিকেটারই হোক, সবাইকে দেখে দেখেই এতটুকু এগোনো। আর এখন যেহেতু আছি, সিনিয়রদের দেখে অবশ্যই অনুপ্রাণিত হই।
লক্ষ্য অবশ্যই ভালো করার। নিজের সেরাটা দেওয়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের সেরাটাই দিতে হবে। এটা দিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু হবে। যখন যে ফরম্যাটেই খেলি, নিজের সেরাটা দিব। শুধু প্রক্রিয়া বজায় রাখার চেষ্টা করব, নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করব।
জেলা কোচ আছেন মনির হোসেন। তারপর ডিভিশন কোচ, এরপর ন্যাশনাল ক্রিকেটে এখানে এসেছি, এখানে কোচ আছেন, সবাই খুব হেল্পফুল। অনেক দিন ধরে পেস বোলিং কোচ জাকি স্যারের তত্ত্বাবধানে বোলিং অনুশীলন হয়েছে। জুয়েল স্যারও ছিলেন। সবাই খুব সাহায্য করেছেন।
ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটা অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যে সুযোগটা আছে, সেটা কাজে লাগানো খুবই দরকার। সেই জন্য সবার দোয়া লাগবে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।