এ বছর হচ্ছে না প্রিমিয়ার লিগ
কদিন আগেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন, প্রিমিয়ার লিগ শুরু সম্ভব। গেম ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছ থেকে আশ্বস্ত হয়েই এমনটি বলেন বিসিবি সভাপতি। কিন্তু এই কদিনে বদলে গেছে বাস্তবতা। খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে নেই আশাব্যঞ্জক কোনো খবর। উল্টো তিনি জানালেন, এ বছর প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন করা সম্ভব নয়।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে গত মার্চে স্থগিত হয়ে যায় প্রিমিয়ার লিগ। সাত মাস পর মিরপুর স্টেডিয়ামে ম্যাচ ফেরায় অসাপ্ত প্রিমিয়ার লিগ মাঠে গড়ানোর সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছিলেন অনেকেই। প্রিমিয়ার লিগ শুরু হওয়া নিয়ে আশায় ছিলেন ক্রিকেটাররাও। কিন্তু বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ জানালেন, বাস্তবতার বিচারে লিগ শুরুর মতো অবস্থা নেই।
আগামী বছরের জানুয়ারিতে প্রিমিয়ার লিগ শুরুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। এমন হলে প্রিমিয়ার লিগের একটি আসর হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। আগামী বছর যদি অসমাপ্ত প্রিমিয়ার লিগ শুরু করা হয়, একই বছর নিশ্চয়ই টুর্নামেন্টের আরেকটি আসর আয়োজন করা হবে না। আবার নতুন আসর আয়োজন করলেও এ বছরের আসরটি শেষ করা হবে না।
খালেদ মাহমুদ বলেন, 'এ বছর আসলে সম্ভব না। আমরা শুরু করলে জানুয়ারিতে করতে পারি।' প্রিমিয়ার লিগ শুরু না হওয়ার অন্যতম কারণ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। ৫টি দল নিয়ে আগামী মাসের শেষে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার পরিকল্পনা বিসিবির। যে টুর্নামেন্টের নাম হতে পারে কর্পোরেট টি-টোয়েন্টি। এই টুর্নামেন্টের কারণে প্রিমিয়ার লিগ শুরুর সম্ভাবনা কমে এসেছে।
এ নিয়ে খালেদ মাহমুদ বলেন, 'টি-টোয়েন্টি লিগটা নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটা নভেম্বরে শুরু করলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হবে। সে পর্যন্ত তো আগে যাই, তার পরে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোকে অনুশীলন করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের খেলোয়াড়দের একত্রিত করতে হবে। সে হিসেবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ বা ১০ তারিখের আগে মনে হয় না সম্ভব হবে।'
প্রিমিয়ার লিগ আয়োজনের পথে স্বাস্থ্য বিধিও বড় একটি বাধা। ১২টি দলের ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, সাপোর্ট স্টাফ, আম্পায়ারদের ভ্রমণ ও সুরক্ষিত আবাসন নিশ্চিত করা সহজ মনে করছে না বিসিবি। এ ছাড়া ভেন্যুসহ আরও বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত করে জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করা বিসিবির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এসব কারণেই প্রিমিয়ার লিগ শুরু করার ক্ষেত্রে সাবধানী দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
খালেদ মাহমুদের ভাষায়, 'জিনিসটা আসলে জটিল, খুব কঠিন। এখানে মাত্র ৩ টা দল বায়ো বাবলে থেকে খেলছে, পরবর্তীতে আমরা ৫-৬ টা দল নিয়ে একটা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট করতে যাচ্ছি। তারপর প্রিমিয়ার লিগ, আপনি দেখেন ওখানে ১২টি দল। যদি প্রতিটি দলে ১৫ জন করে খেলোয়াড়, কোচ, ম্যানেজমেন্টসহ ধরি অন্তত ২০ জন। প্রায় ২৭০ জনের মতো লোককে একসাথে আবাসনের ব্যবস্থা করার মতো জায়গা কোথায় আছে, এটা একটা বড় প্রশ্ন আমাদের জন্য।'
'এটা নিয়ে কাজ করছি, বিকেএসপির সাথে কথা বলছি, ওখানে কতজনকে আমরা ব্যবস্থা করতে পারি। এটাই আমরা চেষ্টা করছি, কোথায় করতে পারি, বায়ো-বাবলের ব্যাপার আছে। আমরা যদি সিঙ্গেল লিগও করি, আরও ১০টা করে ম্যাচ বাকি আছে, কতটা সময় লাগবে। সবকিছুই আসলে বিবেচনায় রাখতে হবে। আর ক্লাবগুলো যেহেতু বড় স্টেক হোল্ডার, সিসিডিএম যতক্ষণ পর্যন্ত ক্লাবগুলোর সাথে না বসে, কিছু বলা কঠিন। তাদের সিদ্ধান্তও জরুরী।'
সর্বশেষ ২০১২-১৩ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ অনুষ্ঠিত হয়নি। প্লেয়ার্স বাই চয়েজ জটিলতায় সে বছর দেরি হওয়াতে পরে আর প্রিমিয়ার লিগ শুরু করা সম্ভব হয়নি। সাত বছর পর ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট এই টুর্নামেন্টের আরও একটি আসর ক্যালেন্ডার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।