চুক্তি বাড়িয়েও ডমিঙ্গোর ব্যাপারে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিসিবি
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হতশ্রী পারফরম্যান্সের কারণে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর গদিটাও নড়বড়ে হেয়ে গেছে। কোচের পদে তিনি থাকছেন কিনা, এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা হয়ে আসছে। যদিও বিসিবির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা আসেনি। অবশেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানালেন, বিশ্বকাপের আগেই ডমিঙ্গোর সঙ্গে চুক্তি বাড়িয়েছে বিসিবি।
আপাতত সেই চুক্তিই বহাল থাকছে। যদিও তাতে ডমিঙ্গোর চাকরি নিশ্চিত হচ্ছে না। দুই সদস্যের রিভিউ কমিটির কাছ থেকে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছে বিসিবি। প্রতিবেদন পাওয়ার আগ পর্যন্ত ডমিঙ্গোর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। আগামী বছরের জানুয়ারিতে প্রতিবেদন পাওয়ার পর ডমিঙ্গোর ভাগ্য নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নাজমুল হাসান।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের ব্যর্থতার জেরে স্টিভ রোডসকে বরখাস্ত করার পর ২০১৯ সালের আগস্টে দুই বছরের চুক্তিতে রাসেল ডমিঙ্গোকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় বিসিবি। মাঝে দলের বাজে পারফরম্যান্সে ডমিঙ্গোকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলে বিসিবি। কিন্তু ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে অনেকটা খুশি হয়েই বিশ্বকাপের আগে তার সঙ্গে আরও দুই বছরের চুক্তি করে বিসিবি।
যদিও বিশ্বকাপে হতাশার পারফরম্যান্সের পর ডমিঙ্গোর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। গঠন করা হয় রিভিউ কমিটি। কিন্তু ডমিঙ্গোর বিপক্ষে কোনো অভিযোগও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। শনিবার সংবাদমাধ্যমকে নাজমুল হাসান বলেন, 'বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে রাসেল ডমিঙ্গো আমাদের কাছে লেখে যে ও খুব ভালো একটা প্রস্তাব পেয়েছে। ও চলে যেতে চায়। ও জানতে চাচ্ছিল আমরা তাকে এক্সটেন্ড করব কি করব না।'
'যদি এক্সটেন্ড না করি তাহলে ঝুঁকির মধ্যে ও থাকবে না। যেহেতু কোভিড পরিস্থিতি, তাহলে ও ওই জায়গায় কথা দিয়ে দেবে। তখন আমরা অনেক খোঁজাখুজি করেছিলাম। পরে দেখলাম এই সময়ের মধ্যে কোন কোচ পাবো না। দ্বিতীয় হচ্ছে যদি পাইও ঠিক বিশ্বকাপের আগে আগে নতুন কোচ আনব কিনা, সেটা নিয়েও দ্বিধা দ্বন্দে ছিলাম। বেশিরভাগ কোচ যাদের দেখছিলাম, আরা আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত বুকড।'
এ কারণে ডমিঙ্গোর সঙ্গে চুক্তি বাড়ানো হয়। তবে চুক্তি বাড়ালেও জানুয়ারিতে তার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানান বিসিবি সভাপতি, 'বেশ কিছু বিষয় মাথায় নিয়ে বোর্ড চিন্তা করেছে যে তাকে এক্সটেনশন দিয়ে দেওয়া হোক। আমরা এক্সটেনশন দিয়ে দিয়েছি। এটা একটা অংশ। এই মুহূর্তে যদি জিজ্ঞেস করেন, তাকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা কী; তাহলে বলব তাকে নিয়ে আগে যে চিন্তা ভাবনা ছিল, তাই আছে। আমরা বিশ্বকাপের রিপোর্টের অপেক্ষা করছি।'
তদন্ত কমিটির কাছ থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে কোচদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, 'ইনফরমালি আমি জালাল (জালাল ইউনূস) ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আহামরি তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এটাতে আমি অবাক হইনি। আমি জানতাম এ রকমই হবে। সমস্যা যদি থাকে, এইগুলা এত সহজে বের হবে না। আমরা যদি আপনাদের নিয়ে কমিটি করি। আর আপনারা খেলোয়াড়দের ডাকেন। আর খেলোয়াড়রা যদি বলে কোচ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, তাহলে আপনি কী ব্যবস্থা করবেন। আপনার কি কিছু করার আছে?'
বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের কারণেই ডমিঙ্গোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জানিয়ে বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, 'এই প্রশ্নগুলো আপনারা করছেন আসলে বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের জন্য। বিশ্বকাপের আগে সিরিজগুলো হয়েছে তখন কিন্তু এই প্রশ্ন করেননি। দল পারফর্ম করছিল, ভালো করছিল। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের পর কথাগুলো এসেছে।'