জীবাণুমুক্ত হওয়ার মিশনে বিসিবি
করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি অবস্থায় সময় কেটেছে। অবশেষে তুলে দেওয়া হয়েছে লকডাউন, সরব হচ্ছে শহর। ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হচ্ছে অফিস-আদালতসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চালু হচ্ছে গণপরিবহন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। খেলা যখনই মাঠে ফিরুক, সব সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে চায় বিসিবি।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নির্দেশনা দেওয়া আছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিসিবি। প্রস্তুতির প্রথম ধাপ হিসেবে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান।
যদিও এটা বেশ আগেই শুরু হয়েছে। ঈদের আগে থেকেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে বিসিবিতে। লকডাউনের মাঝেও নিয়মিত মাঠের পরিচর্যা করা হয়েছে। গ্রাউন্ডসম্যানদের বিসিবিতেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যেন তারা নিয়মিতভাবে মাঠের পরিচর্যা করতে পারেন।
মাঠ সব সময়ই প্রস্তুত ছিল। এবার মাঠের বাইরের পরিবেশ ঝকঝকে-তকতকে করার কাজে মন লাগিয়েছে বিসিবি। বিসিবির কার্যালয়, ড্রেসিং রুম, অফিসের অন্যান্য রুম, ইনডোর ও একাডেমিতে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ।
করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতেই হচ্ছে, আছে ডেঙ্গু নিয়েও বাড়তি সতর্কতা। নিয়মিতভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল বাতেন।
বিসিবিকে জীবাণুমুক্ত করা বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে আব্দুল বাতেন বলেন, 'আমাদের মাঠের পরিচর্যা তো ছিলই। গ্রাউন্ডসম্যানদের বিসিবিতেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। তাদের দিয়ে আমরা নিয়মিতভাবে পরিচর্যা করে এসেছি। এখন সব খুলে দেওয়া হবে, খেলাধুলা হবে। তো আমাদের একটা প্রস্তুতি চলছে। আইসিসির গাইডলাইন অনুসারে আমাদের সবকিছু। তারা গাইডলাইন দেবে, ওই হিসেবে আমাদের চলবে।'
মাঠের বাইরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধের ব্যাপারে তিনি বলেন, 'পরিচ্ছতাকর্মীরা পরিষ্কার করছেন। আমাদের দুটি ইস্যু। একটি করোনাভাইরাস এবং আরেকটি ডেঙ্গু। দুটি ব্যাপারেই আমরা সতর্ক। ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের একটা কমিটি আছে। তারা নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করছে, স্প্রে করছে। আমরা কোথাও পানি জমতে দিই না। নিয়মিত ইন্সফেকশনও হচ্ছে।'
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীও জানিয়েছেন আইসিসির নির্দেশনার কথা। তিনি বলেন, 'এই অবস্থা একটা সময় শেষ হবে। আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। সেটার জন্য প্রস্তুত থাকা দরকার। এ কারণেই এই প্রস্তুতি। আইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সময় মতো যেন প্রস্তুত থাকা যায়, এ কারণেই কাজ এগিয়ে রাখা।'
বেশ কড়াকড়ি ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে বিসিবিতে। লকডাউনের সময়ের মতো এখনও বিসিবিতে প্রবেশ সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। বাইরের কোনো মানুষকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে কাজে নিয়জিত কর্মচারীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা বিসিবিতেই করা হয়েছে।
এসব কাজ শেষেই যে বিসিবি মুখরিত হয়ে উঠবে বা মাঠে খেলা ফিরবে, তেমন নয়। সব প্রস্তুত হলে সবার আগে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি বিবেচনা করা হবে। পরিস্থিতি ভালো মনে হলে অনুশীলনের পরিকল্পনা করবে বিসিবি। এরআগে বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বোর্ড সভাতেই সবকিছু চূড়ান্ত হবে বলে বিসিবি থেকে জানা গেছে।