তাইজুল যখন ‘ডাবল’ সাকিব
ঘরের মাঠে স্পিন আক্রমণে সব সময়ই শক্তিশালী বাংলাদেশ। সব ফরম্যাটেই বাংলাদেশের একাদশে থাকে স্পিনের আধিক্য। যেখানে নেতার ভূমিকায় থাকেন সাকিব আল হাসান। চোটের কারণে এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে নেই সাকিব। টি-টোয়েন্টির পর চট্টগ্রাম টেস্টেও খেলছেন না বিশ্বের অন্যতম এই অলরাউন্ডার। অনেকেই সাকিবের অভাবের কথা বলেছিলেন, কিন্তু তাইজুল ইসলাম তার স্পিন ঘূর্ণিতে সব ভুলিয়ে দিয়েছেন।
বিনা উইকেটে ১৪৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ২৮৬ রানে। এদিন ১৪১ রানে ১০ উইকেট হারায় সফরকারীরা। এর মধ্যে তাইজুলের উইকেটই ৭টি। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে তাইজুল জানালেন, তাকে সাকিবের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বাজে ব্যাটিং, নিজের বোলিং অ্যাকশন, বিরতিতে মনোযোগ ধরে রাখাসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
প্রশ্ন: বোলিং দারুণ হয়েছে। এমন দিনে ব্যাটাসম্যানদের ব্যর্থতা কতটা হতাশার?
তাইজুল ইসলাম: ব্যাপারটা হতাশার মতো করে নিলে হবে না। হতাশ হচ্ছি না। ক্রিকেট খেলাটাই এমন। কেউ তো আর ইচ্ছে করে আউট হতে চায় না। প্রথম ইনিংসেও আমাদের ৪টা উইকেট দ্রুত পড়ে গিয়েছিল। তারপরও আমরা আল্লাহর রহমতে ঘুরে দাঁড়াই। দ্বিতীয় ইনিংসেও আমরা এমনটাই আশা করছি।
প্রশ্ন: আপনি বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তন করেছিলেন। কিন্তু আবারও পুরনো অ্যাকশনে ফিরে এসেছেন। প্রক্রিয়াটা কেমন ছিল?
তাইজুল: এটা সত্যি যে আমি আমার পুরনো অ্যাকশনেই সফল। আমি আসলে চেষ্টা করছিলাম ওটা করা যায় কিনা। কিন্তু অ্যাকশন যে চেঞ্জ করা যাবে না, করলে যে অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, এমনটা হয়নি। আমি অনেক বড় সাহায্য পেয়েছি সোহেল ভাইয়ের (স্পিন বোলিং কোচ) কাছ থেকে। আমি যখন পুরনো অ্যাকশনে ফিরতে চেয়েছি, সোহেল ভাইয়ের কারণে সেটা তাড়াতাড়ি হয়েছে। উনি আমার অ্যাকশন সম্পর্কে ভালো জানেন। তাই খুব একটা সমস্যা হয়নি।
প্রশ্ন: উপরের ব্যাটসম্যানদের দ্রুত আউট করলেও শেষের ব্যাটসম্যানরা ভোগায়। এখানে বাংলাদেশ সফল হচ্ছে না কেন? এটা কি মানসিক কোনো বাধা?
তাইজুল: এটা তেমন কিছু নয়। অনেক ম্যাচেই এমন হয়েছে। শেষের দিকে যেসব টেল এন্ডার থাকে, তারা রান করে ফেলে। এটা আসলে হতে পারে, অনেক সময় হয়। ওই সময় আসলে অন্যরকম হয়। ব্যাটসম্যানদের মতো টেল এন্ডাররা খেলে না। টেস্ট ক্রিকেটের ফিল্ডিং সেটআপ অন্যরকম থাকে। এই কারণেই আসলে এই জিনিসটা হয়। অনেক বড় দলেরও এমন হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: আপনি শুধু টেস্ট খেলেন, মাঝে বড় বিরতি থাকে। মনোযোগ ধরে রাখেন কীভাবে?
তাইজুল: আমরা যখন খেলি, আমাদের প্রক্রিয়া একই থাকতে হয়। আমাদের যত ভালো প্রক্রিয়া থাকবে, ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো ততোটা সহজ হবে। যখন জাতীয় লিগ খেলি, যেভাবে, যেখানেই খেলি না কেন, আমরা ওই প্রক্রিয়া ঠিক রাখার চেষ্টা করি। আমরা অনেক দিন পর পর টেস্ট খেলি, এটা সত্যি কথা। বিরতি থাকার কারণে হয়তো একটু সমস্যা হয়। বেশি টেস্ট খেলতে পারলে আমরা ভালো করতে পারতাম।
প্রশ্ন: সাকিব আল হাসান না থাকলে দলে আপনার ভূমিকা কেমন থাকে?
তাইজুল: শুধু আজ না, অনেকগুলো ম্যাচেই সাকিব ভাই ছাড়া আমি খেলছি। সাকিব ভাই থাকলে আমার ভূমিকা এক রকম হয়, সাকিব ভাই না থাকলে আরেক রকম হয়। এটা হওয়াটা স্বাভাবিক। যেহেতু সাকিব ভাই নেই, তাই সাকিব ভাইয়ের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে। আগে যেটা বললাম। রান চেকেরও একটা চাপ থাকে, উইকেট নেওয়ারও চাপ থাকে। উইকেটও নিতে হবে, রানও চেক দিতে হবে, এই ভূমিকাটা আমাকে পালন করতে হয়।