দীর্ঘদিন মানসিক চাপে ছিলেন তামিম
দীর্ঘদিন মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না। বাসার মধ্যেই ঘোরাঘুরি। চিকিৎসা করাতে লন্ডনে যেতে হয়েছিল, গত কয়েক মাসের মধ্যে বাইরে বের হওয়া বলতে এতোটুকুই। এভাবে সময় কাটাতে কাটাতে প্রচন্ড মানসিক চাপে পড়ে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। চারটা মাস ভালো কাটেনি তার। রোববার থেকে একক অনুশীলনে যোগ দেওয়া বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক এমনই জানালেন।
দেশের চারটি ভেন্যুতে গত ১৯ জুলাই থেকে শুরু হয় একক অনুশীলন। ঈদের ছুটির পর দ্বিতীয় দফায় শুরু হওয়া অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। রোববার থেকে শুরু করেছেন তামিম ও মুস্তাফিজুর রহমান। তামিম আরও আগেই একক অনুশীলন শুরু করতে পারতেন। কিন্তু চিকিৎসা করিয়ে লন্ডন থেকে ফেরার পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয় অভিজ্ঞ এই ওপেনারকে।
দ্বিতীয় দিনের অনুশীলনের শুরুতে মিরপুর স্টেডিয়ামের মূল মাঠে রানিং করেন তামিম। এরপর জিম করেন দেশসেরা এই ওপেনার। ১১টা থেকে ১১টা ৪৫ পর্যন্ত মিরপুর স্টেডিয়ামের ইনডোরে ব্যাটিং অনুশীলন করেন তামিম।
অনুশীলন শেষে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার বলেন, 'এই ৩-৪ মাস অনেক কঠিন ছিল। হয়তো আমরা বাসায় ছিলাম, পরিবারের সাথে ছিলাম, কিন্তু মানসিক একটা চাপের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। বাসা থেকে বের হতে পারছিলাম না। সাধারণত সফর থেকে এসে ৭-৮ দিনের একটা ছুটি পাই। আমরা অনেক জায়গায় যেতে পারি বা কিছু করতে পারি। কিন্তু এই সময়ে সেটার সুযোগ ছিল না।'
শুধু নিজেকে নিয়েই নয়, পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও ভাবিয়েছে তামিমকে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তামিমের মাসহ বড় ভাই নাফিস ইকবাল ও তার স্ত্রী। ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, 'এই চার মাস স্বাস্থ্য ইস্যুতে চিন্তিত ছিল পরিবারের সদস্যরা। এই চার মাস অনেক কঠিন ছিল। অবশেষে যে জিনিসটা আমরা পছন্দ করি, তা খেলাধুলা। সেটা শুরু হয়েছে। যা অনেক ভালো ব্যাপার।'
লম্বা বিরতির পর ব্যাটিং করতেই ভুলে যাবেন বলে মনে করেছিলেন তামিম। কিন্তু ততটা খারাপ অবস্থা হয়নি, 'অনেকদিন পর অনুশীলন শুরু করলাম, প্রায় ৪-৫ মাস পর। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে যতটা হতাশার হবে মনে করছিলাম, আশ্চর্যজনকভাবে অতটা খারাপ মনে হয়নি। ব্যাটিং মোটামুটি ঠিকই আছে।'
করোনাকালে বাসায় অনুশীলন করেছেন বলে ফিটনেসও ভালো অবস্থায় আছে বলে জানান তামিম, 'ফিটনেসের দিক থেকেও মোটামুটি ভালো আছে। কিন্তু ট্রেডমিল বলেন বা বাসায় যতো কাজ করি, রোদে বা মাঠে করাটা ভিন্ন ব্যাপার। মানিয়ে নিতে হয়তো আরও সপ্তাহ খানেক লাগবে।'
মানসিক চাপ বয়ে বেড়ানোর সময় বিসিবির আয়োজন করা সেশন কাজে দিয়েছে বলে মনে করেন তামিম। মনোবিদ আলী খানের সেশনে অংশ নেওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান বলেন, 'এই চার মাসে বিসিবিও আমাদের কিছু সেশন ঠিক করে দিয়েছিল, মানসিকভাবে যেন আমরা ভালো অবস্থায় থাকি। আমিও দুই-তিনটা সেশন করেছি। এসব আমাকে ভালো সাহায্য করেছে। কিন্তু যেটা বলেছি, এই চার মাস কোনোভাবেই সহজ ছিল না।'
কঠিন সময় পেছনে ফেলে মাঠে ফিরেছেন তামিম। শ্রীলঙ্কা সফরের আগে মানসিক দিক থেকেও ভালো অবস্থায় ফিরতে চান তিনি, 'আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, এখান থেকে বের হয়ে এসে যতো তাড়াতাড়ি আমরা মানসিকভাবে ভালো অবস্থায় যেতে পারি। কারণ আমাদের একটা বড় সফর আসছে সামনে। আর আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ভালো সুযোগ আছে।'