প্রত্যাশার চাপ বুঝতে পারছেন শামীম
ছোটদের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম কান্ডারি তিনি। যুব বিশ্বকাপ জিতে দলের সঙ্গে বীরের বেশে দেশে ফেরা শামীম হোসেন পাটোয়ারীর পরের সময়টা কেটেছে স্বপ্নের মতো। হাই পারফরম্যান্স ইউনিট (এইচপি), ঘরোয়া ক্রিকেট হয়ে দেড় বছরের মধ্যেই জাতীয় দলে তরুণ এই ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ে সফরে অভিষেকেই ঝড় তুলে বার্তা দিয়েছিলেন- শাসন করতে আসছেন তিনি।
পরের ম্যাচে মেলে সেটার প্রমাণ, ৩১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দলের জয়ে রাখেন বড় অবদান। এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো সময় যায়নি শামীমের, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু শামীমের ব্যাটিংয়ের বারুদ, ফিল্ডিংয়ের ক্ষিপ্ততা আর বোলিং সামর্থ্য তো প্রমাণিতই। তাই কিছু না ভেবেই তাকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে।
তাকে নিয়ে যে কোচ, অধিনায়কের অনেক আশা, সেটা জানা আছে শামীম পাটোয়ারীর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘিরে ক্রিকেটভক্তদের প্রত্যাশার চাপও টের পাচ্ছেন ২১ বছর বয়সী তরুণ এই ক্রিকেটার। বড়দের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো অংশ নেওয়ার আগে সোমবার নিজের বিশ্বকাপ ভাবনা, জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা, বিশ্বকাপ চ্যালেঞ্জসহ আরও অনেক কিছু নিয়ে কথা বলেছেন শামীম।
প্রশ্ন: জাতীয় দলে আসতে না আসতেই আপনাকে নিয়ে প্রত্যাশা তৈরি হয়ে গেছে। বিশ্বকাপে আপনার দিকে নজর থাকবে, প্রত্যাশার এই চাপ বুঝতে পারছেন?
শামীম হোসেন পাটোয়ারী: হ্যাঁ। যেহেতু বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছি, সবার আশা থাকে দেশকে ভালো কিছু দেওয়ার জন্য। আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন। পরিকল্পনা সাজিয়েছেন?
শামীম: যেহেতু আমি প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছি, আমি এখনও ওইভাবে বিশ্বকাপে আমার লক্ষ্য ঠিক করিনি। দলের সাথে যাচ্ছি, এটাই আমার কাছে বড় কিছু। সিনিয়রদের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে।
প্রশ্ন: বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স করাটা কতো চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন?
শামীম: এটা অনেক বড় একটা মঞ্চ। এখানে অনেক বড় বড় খেলোয়াড়রা থাকবেন। আমি মনে করি এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ হবে।
প্রশ্ন: যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য আপনি। ওই অভিজ্ঞতা বড়দের বিশ্বকাপে কাজে দেবে?
শামীম: যেহেতু আমরা একটা বিশ্বকাপ জিতেছি। আমার ধারণা আমরা আরও বড় কিছু ডিজার্ভ করি।
প্রশ্ন: অনূর্ধ্ব-১৯ এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে পার্থক্য নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, সেটা কেমন?
শামীম: ওখানে দেশের জন্য খেলেছি। এখানেও দেশের জন্য খেলছি। একটু ভিন্নতা তো থাকবেই। এটা মূল জাতীয় দল, আর ওটা অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দল। এখানে একটু ভিন্নতা আসাটাই স্বাভাবিক।
প্রশ্ন: জৈব সুরক্ষা বলয়ের ধকল কাটিয়ে উঠতে কষ্ট হয়ে কিনা?
শামীম: জৈব সুরক্ষা বলয়ে অনেক বিরক্ত অনুভব করছি। এভাবে থেকে খেলাতে একটু সমস্যা হয়। একটা খেলোয়াড় যখন মুক্ত থাকবে, তখন সে অবশ্যই ভালো করবে।
প্রশ্ন: মিরপুরের উইকেটে খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সেভাবে নেওয়া হয়নি বলে মনে করেন অনেকেই। বিশ্বকাপে কঠিন হয়ে যাবে কিনা?
শামীম: হ্যাঁ, উইকেট আমাদেরকে ফেভার করে। আপনারা সবাই দেখেছেন উইকেটটা একটু ভিন্ন ছিল। যেহেতু বিশ্বকাপ, তো উইকেটটা ভালো হবে এটাই স্বাভাবিক। যারা সিনিয়র খেলোয়াড় আছে আমি আশাবাদী সবাই ভালো করবে। আমাদের মূল ব্যাটসম্যানরা কিন্তু ভালো করেনি, বিশ্বকাপে গিয়ে সবাই ভালো করবে।
প্রশ্ন: অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কাছ থেকে কেমন সমর্থন পান?
শামীম: রিয়াদ ভাই সাপোর্ট করেন। জুনিয়র খেলোয়াড়দের অনেক বেশি সাপোর্ট করেন। আমাদেরকে ফ্রিভাবে খেলতে দেন।
প্রশ্ন: দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সাথে কতোটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন?
শামীম: ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল সাকিব ভাইদের সাথে খেলব। এখন আল্লাহর রহমতে ওনাদের সাথে খেলছি। অনেক ভালো লাগছে। ওনাদের সাথে এখন মুক্তভাবে খেলছি। সিনিয়র খেলোয়াড়রা আমাদের মতো জুনিয়রদের অনেক সাপোর্ট করেন।
প্রশ্ন: এতো অল্প সময়ে বিশ্বকাপ দলে যাক পাওয়ার ব্যাপারটি আপনার কাছে কেমন?
শামীম: নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। টানা তিনটা সিরিজ জিতলাম, পাশাপাশি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছি।