২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা যাওয়া হচ্ছে না, চলবে অনুশীলন
কোয়ারেন্টিন জটিলতায় ঝুলে গেছে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরের ভাগ্য। শেষ পর্যন্ত সফরটি হয় কিনা, তা নিয়ে আছে যথেষ্ট শঙ্কা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনামাফিক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের কথাই বলে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। অন্যদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) তাদের আগের অবস্থানে। শ্রীলঙ্কার শর্ত মেনে সফর সম্ভব নয়, এটা বেশ আগেই জানিয়ে দিয়েছে বিসিবি।
সিরিজটি আয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে বেশ আগে থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। কোয়ারেন্টিনের সময় কমানোসহ স্বাস্থ্য বিধি শিথিল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধও করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। কিন্তু কোনো ফল আসেনি। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কথা বলার ১০ দিন পরও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি শ্রীলঙ্কা। সিদ্ধান্ত আসতে লেগে যেতে পারে আরও কয়েকদিন। সব মিলিয়ে এখনও অন্ধকারেই সিরিজটির ভাগ্য।
এদিকে বাংলাদেশের সফর করার সময়ও চলে এসেছে। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। কিন্তু সিরিজটি এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় পেছাতে পারে বাংলাদেশের সফর করার তারিখ। আর এই সম্ভাবনাই বেশি বলে জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
শ্রীলঙ্কা সফরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত জাতীয় দলের অনুশীলন চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিসিবির জৈব সুরক্ষিত বলয়ের মধ্যে থেকেই অনুশীলন চালিয়ে যাবেন ক্রিকেটাররা। বিকল্প হিসেবে তখন আয়োজন করা হবে ঘরোয়া ক্রিকেট। এমনকি শ্রীলঙ্কা সফর হলেও বিসিবির ঘরোয়া ক্রিকেট আয়োজনের পরিকল্পনা আছে বলে জানান নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
সফরের সময় পেছানো সম্পর্কে তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত পাইনি। অবশ্য ২৭ তারিখকে ধরেই আমাদের প্রস্তুতি, সবকিছু এগোচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে বিষয়টি একটু চ্যালেঞ্জিং হবে ২৭ তারিখে ভ্রমণ করা। ভিসা ও অন্যান্য জটিলতা তো রয়েছেই। সেক্ষেত্রে মানিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হলে আমরা সেটা করে নিব।'
বুধবারও সফর নিয়ে বিশেষ কোনো বার্তা দিতে পারেননি বিসিবির প্রধান নির্বাহী। এখনও চিঠি চালাচালি চলছে বলে জানালেন তিনি। নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'তারা যে স্বাস্থ্য বিধি পাঠিয়েছিল, সেখানে কিছু বাধা ছিল। সেগুলো তারা যদি রেখে দেয়, তাহলে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে সফরটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।'
'এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছুদিন ধরে যোগাযোগ হয়েছে। সর্বশেষ যে পরিস্থিতি সেটা হচ্ছে আমরা নির্দিষ্ট কিছু বিষয় জানিয়েছি তাদের। এ জিনিসগুলো জানার পর তারা বলেছে তাদের যে কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্স আছে বা অন্যান্য যে কর্তৃপক্ষ আছে, তাদের সাথে কথা বলে শিথিল করার ব্যাপারে কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই তারা আমাদের বিষয়গুলো নিয়ে জানাবে।' যোগ করেন তিনি।
বিষয়টি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করছে না জানিয়ে প্রধান নির্বাহী বলেন, 'পুরো বিষয়টি কিন্তু শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের উপর নির্ভর করছে না। এটা তাদের সরকার এবং কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্সের সিদ্ধান্ত। আমরা যতটা জেনেছি, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট তাদের সাথে যোগাযোগ করে বোঝানোর চেষ্টা করছে আমাদের অবস্থান নিয়ে।'
সিরিজ নিয়ে যে সিদ্ধান্তই আসুক, আপাতত সেদিকে নজর দিয়ে কাজ থামাচ্ছে না বিসিবি। চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে সব ধরনের প্রস্তুতি। চূড়ান্ত সিন্ধান্তের আগ পর্যন্ত জৈব সুরক্ষিত বলয়ে থেকে অনুশীলন করে যাবেন ক্রিকেটাররা। তিনি বলেন, 'আমাদের অভ্যন্তরীণ কিছু পরিকল্পনা তো অবশ্যই আছে। এই সিরিজ যদি না হয় সেক্ষেত্রে আমাদের অন্য পরিকল্পনা আছে। অনুশীলন আমরা নিয়মিত রাখব সফরের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত।'
'অনুশীলনসহ অন্যান্য বিষয়গুলো যেভাবে চলছে, এভাবেই রাখব। সিরিজ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসতে পারে। তবে এই সিরিজটা যদি আয়োজনও হয়, এরপরও ঘরোয়া লিগ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে।' যোগ করেন প্রধান নির্বাহী।