৮২ জন কোচকে মাশরাফির আর্থিক সহায়তা
ঢাকা মেট্রোর ৮২ জন ক্রিকেট কোচকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রত্যেককে তিন হাজার টাকা করে 'ঈদ উপহার' দিয়েছেন বাংলাদেশের সফলতম এই অধিনায়ক। মাশরাফির নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন থেকে এই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আবাহনী মাঠে ঢাকা মেট্রোর ৮২ জন কোচের হাতে মাশরাফির উপহার তুলে দেওয়া হয়। ঈদের আগেই এই উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল মাশরাফির। কিন্তু তালিকা তৈরি করতে সময় লেগে যাওয়ায় সেটা হয়নি। ব্যক্তিগত কাজে উপস্থিত হতে না পারলেও ফোনে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান মাশরাফি।
করোনাভাইরাস দুর্গতদের সাহায্যে নিজের দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত ব্রেসলেটটি কিছুদিন আগে নিলামে তোলেন মাশরাফি। স্টেইনলেস স্টিলের ব্রেসলেটটি ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। মাশরাফি তখনই জানিয়েছিলেন, এখান থেকে ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে নড়াইলবাসীর জন্য।
বাকি ১৫ লাখ টাকা ঢাকা মেট্রোর কোচদের আর্থিক সহায়তা, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সাহায্যে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও বিনামূল্যে রক্তদাতাদের সংগঠনের উন্নয়নে খরচ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন মাশরাফি।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই কাজ করে আসছেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি ও তার 'নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন'। সরকারি অনুদান ছাড়াও নিজ অর্থায়নে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে আসছেন তিনি। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কয়েকদিনের মধ্যেই কর্মহীন হয়ে পড়েন নড়াইলের রিকশা-ভ্যানচালক, রাস্তার পাশের চা বিক্রেতা, হকাররা। এমন তিনশ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেন মাশরাফি।
এরপর কর্মহীন মানুষদের সাহায্যে বিসিবি থেকে পাওয়া এক মাসের বেতনের অর্ধেকটা দান করেন মাশরাফি। কদিন পর নিজ অর্থায়নে নড়াইলে ১ হাজার ২০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেন তিনি।
নিজ অর্থায়নে নড়াইলের ডাক্তার ও সংবাদকর্মীদের জন্য ৫০০ পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন ইক্যুয়েপমেন্ট) দেন মাশরাফি। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে তার নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম।
নড়াইল সদর হাসপাতালের গেটে জীবাণুনাশক কক্ষ স্থাপন করে মাশরাফির নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন। এরপর চিকিৎসকদের সুরক্ষায় 'ডক্টরস সেফটি চেম্বার' বানিয়ে দেন মাশরাফি। নড়াইল কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বন্দিদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে সাবান, মাস্ক, গ্লাভস এবং স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
এরপর তামিম, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মিলে টিম বয়দের এক লাখ টাকা করে দেন মাশরাফি। সর্বশেষ নিজের বহুদিনের সঙ্গী প্রিয় ব্রেসলেটটি মাতবতার সেবায় উৎসর্গ করেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।