‘বেশি খাওয়া-দাওয়া হবেই, তাই এখন থেকেই রানিং’
ঈদের দুদিন আগে থেকে মিলেছে ছুটি। আরও বেশ কয়েকদিন ছুটি কাটানোর সুযোগ আছে গত ১৯ জুলাই থেকে একক অনুশীলন শুরু করা ক্রিকেটারদের। আগামী ৮-৯ আগস্ট থেকে আবার একক অনুশীলন শুরু হবে। ততদিন পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু ছুটি আছে বলেই বসে নেই সবাই। অনেকেই নিজেদের মতো করে ফিটনেসের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঈদের পরের দিনই মাঠে নেমে পড়েছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র ও তরুণ পেসার খালেদ আহমেদ। রোববার সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে রানিং করেছেন এই দুই ক্রিকেটার। এ ছাড়া বরাবরের মতো বাসায় ফিটনেস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
রোববার সকালে সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে লক্ষ্য নির্ধারণ করে দৌড়েছেন এনামুল জুনিয়র ও খালেদ। ২২ মিনিটে চার কিলোমিটার দৌড়ানোর লক্ষ্য ছিল তাদের। যা তারা ২১ মিনিটেই শেষ করেছেন।
কেমন ছিল রানিং? দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এটা জানানোর আগে ঈদ উদযাপন নিয়ে কথা বললেন এনামুল জুনিয়র। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক বলেন, 'অন্য ঈদের থেকে একটু আলাদা ছিল। কারণ বেশি বাইরে যাওয়া যায়নি। মসজিদে নামাজ পড়েছি, এই তো।'
কোরবানির ঈদ বলে খাওয়া-দাওয়া বেশি হচ্ছে, এ কারণেই ফিটনেস নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এনামুল জুনিয়র বলেন, 'সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে রানিং করেছি। যেহেতু কোরবানির ঈদ, খাওয়া-দাওয়া একটু বেশি হবেই। এ কারণেই রানিং করলাম। আমার বাসার পাশেই মাঠ। খালেদ এসেছিল, দুজন মিলে রানিং করলাম। ২২ মিনিটে ৪ কিলোমিটার শেষ করার লক্ষ্য ছিল আমাদের। ২১ মিনিটেই শেষ করতে পেরেছি আমরা।'
করোনাভাইরাসের কারণে লম্বা বিরতি পড়লেও ইতিবাচক দিক খুঁজে পাচ্ছেন এনামুল জুনিয়র। এই বিরতিতে ক্রিকেটাররা নিজেদের ফিটনেস অন্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে বিশ্বাস তার, 'এখন সবাই সচেতন। মুশফিক দেখলাম ট্রেডমিলে রানিং করছে। লকডাউন শেষে খেলা শুরুর সময় বাংলাদেশ ফিটনেসে ভালো একটা দল পাবে। এটা আমার বিশ্বাস। কারণ সবাই ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করছে।'
'সবাই সময়টাকে কাজে লাগিয়েছে। এতো সময় ধরে ফিটনেস নিয়ে কাজ করার সময় কখনও হয় না। প্রচুর খেলা থাকায় এমন সময় পাওয়া যায় না। খেলার মাঝে মাঝে ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে হয়েছে আগে। এখন সবাই ফ্রি ছিল। সবাইকে থেকে দেখে ফিট লাগছে, চিকন লাগছে। রিয়াদ তো পুরো হ্যাঙার হয়ে গেছে দেখলাম।'
খালেদ নিজের বানানো একটি রুটিন মেনে সব কাজ করছেন। সেটারই অংশ হিসেবে রোববার সকালে রানিং করেছেন তিনি। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'অনুশীলনের বাইরেও আমার একটা রুটিন আছে। সে মোতাবেক চলছি। আজকের সূচিতে আমার রানিং ছিল। সেই রানিং করলাম আজ। এনাম ভাই (এনামুল জুনিয়র) এসেছিলেন, দুজন মিলে রানিং করলাম। এনাম ভাইও অনেক ফিট এখন।'
বেশি খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে সচেতন খালেদও, 'গরুর মাংস যদি খাই, তাহলে ফিটনেস নষ্ট হয়ে যাবে। ঈদের আগের দিনও আমি জিম করেছি। ঈদের দিনটা আমি বিশ্রাম করেছি। ফিটনেসের কাজ মিস হলে ফিটনেস আগের জায়গায় চলে যায়। এ কারণেই ফিটনেস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমার করা রুটিন অনুযায়ী কাল বাসায় জিম আছে।'
ফিটনেস নিয়ে সব সময়ই সচেতন মুশফিকুর রহিম। লকডাউন চলাকালে নিয়মিত বাসায় ফিটনেসের কাজ করেছেন দেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। এমনকি রোজার মধ্যেও একইভাবে ঘাম ঝরিয়ে গেছেন তিনি। তাই ঈদের ছুটিতেও বসে নেই তিনি। টেড্রমিলে দৌড়ানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে মুশফিক লিখেছেন, 'ঈদ স্পেশাল ওয়ার্কআউট।'
১০ জন ক্রিকেটার গত ১৯ জুলাই থেকে ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু করে। ব্যক্তিগত অনুশীলনের ব্যবস্থা করা বিসিবি শুরুতে সাতদিনের সূচি তৈরি করে। ২৬ জুলাই অনুশীলন শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ক্রিকেটারদের আবদনের প্রেক্ষিতে আরও দুদিন বাড়ানো হয়। বাড়ে ক্রিকেটার সংখ্যাও। সর্বশেষ ১৩ জন ক্রিকেটার দেশের চারটি ভেন্যুতে একক অনুশীলন করেছেন।