মালয়েশিয়াকে গুঁড়িয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব থেকে বাংলাদেশের দাপট শুরু। একের পর এক ম্যাচ জিততে থাকে জাতীয় নারী ক্রিকেট দল। ঘরের মাঠে এশিয়া কাপেও উড়ন্ত সূচনা হয় নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের। কিন্তু উড়তে থাকা বাংলাদেশকে মাটিতে নামায় পাকিস্তান। যদিও পরের ম্যাচেই আবারও চেনা দাপটে বাংলাদেশের মেয়েরা। মুর্শিদা খাতুন ও অধিনায়ক নিগারের হাফ সেঞ্চুরির পর অভিষিক্ত ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণার হ্যাটট্রিকে মালয়েশিয়াকে গুঁড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ৮৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে রানের হিসেবে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় ২৪৯ রানে। ২০১৯ দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে ২৫৫ রান তুলে মালদ্বীপকে মাত্র ৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচে দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে আছে বাংলাদেশ। সমান পয়েন্ট নিয়েও রান রেটের ব্যবধানে এগিয়ে দুই নম্বরে পাকিস্তান। তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে শীর্ষে আছে এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশিবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। ৮ অক্টোবর নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। মুর্শিদা ও ম্যাচসেরা নিগারের হাফ সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ১২৯ রান তোলে স্বাগতিকরা। জবাবে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়া ফারিহা এবং ফাহিমা, সানজিদা ও রুমানার দারুণ বোলিংয়ে ১৮.৫ ওভারে মাত্র ৪১ রানেই গুটিয়ে যায় মালয়েশিয়ার ইনিংস। দলটির কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। দুজন ব্যাটার সর্বোচ্চ ৯ রান করে করেন।
১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নামা থাইল্যান্ড সাবধানী শুরু করে। ৫.১ ওভারে মাত্র ১৩ রান তোলে তারা। কিন্তু সাবধানতা কাজে আসেনি। ষষ্ঠ ওভারে তাদেরকে দিক ভুলিয়ে দেন ফারিহা। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বাংলাদেশের বাঁহাতি এই মিডিয়াম পেসার টানা তিন উইকেট তুলে নিয়ে পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। যা অভিষেকে বাংলাদেশের প্রথম ও বিশ্বে দ্বিতীয়। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। প্রথম হ্যাটট্রিক করেন ফাহিমা খাতুন।
১৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে অন্ধকারে পড়ে যাওয়া থাইল্যান্ড আর আলোর পথ খুঁজে নিতে পারেনি। এই সুযোগে ফাহিমা, সানজিদা, রুমানাও চেপে ধরেন প্রতিপক্ষকে। এরপর নিয়মিত ধারায় উইকেট হারিয়ে ৪১ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। থাইল্যান্ডের কেউ ১০ রানের গন্ডিও পেরোতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৯ রান করে করেন এলসা হান্টার ও নূর আরিয়ানা।
হ্যাটট্রিকে অভিষেক রাঙানো ফারিহা ৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে ৩টি উইকেট নেন। ফাহিমা ৩ ওভারে ৮ রানে ২টি, সানজিদা ২ ওভারে ৪ রানে ২টি ও রুমানা ২ ওভারে ১ রানে ২টি উইকেট নেন। বাকি উইকেটটি নেন সালমা, ২.৫ ওভারে তার খরচা ৪ রান।
এর আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের হয়ে মূলত দুজন রান করেন। ওপেনার মুর্শিদা ৫৪ বলে ৬টি চারে ৫৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। নিগার ছিলেন মারকুটে মেজাজে। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩৪ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৩ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেন। ফারজানা ১০, রিতু মনি ২ ও ফাহিমা ৫ রান করেন। থাইল্যান্ডের সাশা আজমি, মাহিরাহ ইসমাইল ও উইনিফ্রেড দুরাইসিঙ্গাম একটি করে উইকেট নেন।