ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করতে রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে
প্রথম দুই ওয়ানডে জিতে উড়ছিল বাংলাদেশ। আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর বাংলাদেশের সামনে আসে ভারতকে প্রথমবারের মতো কোনো ফরম্যাটে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ। সেই লক্ষ্য নিয়েই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামে তারা। কিন্তু এই ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করতে নেমে ভারতের শাসনে দিশেহারা ঘরের মাঠের দলটি। ইশান কিশানের ইতিহাস গড়া ডাবল সেঞ্চুরি ও বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় গড়েছে ভারত।
শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা ভারত ৮ উইকেটে ৪০৯ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়েছে। ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসের এটা চতুর্থ সর্বোচ্চ সংগ্রহ। বোলারদের দুঃস্বপ্নের দিনে কয়েকটি অস্বস্তির রেকর্ডে নাম উঠেছে বাংলাদেশের। প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে কোনো দলের বিপক্ষে ৪০০ রান হজম করলো তারা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল ইংল্যান্ডের। ২০০৫ সালে নটিংহ্যামে ৩৯১ রান করে ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠের বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড ছিল ভারতেরই। ২০১১ বিশ্বকাপে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে ৩৭০ রান তোলে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
কোহলিদের হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামলেও এক ইনিংস পেই তা বিবর্ণ হয়ে উঠেছে। ৪১০ রানের বিশাল লক্ষ্য পাড়ি দিয়ে জয় পাওয়া যে অনেক দূরের পথ, সেটা বলাই বাহুল্য। এ ছাড়া এতো রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সফল রান তাড়া ৩১৯ রানের। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২২ রান তুলে জেতে তারা। এ ছাড়া ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহই ৩৩৩ রান, ২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
ভারতকে রান পাহাড়ে তোলার পথে নেতা হয়ে ব্যাট চালান ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ইশান কিশান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম ও সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেন। খেলেন ১৩১ বলে ২৪টি চার ও ১০টি ছক্কায় ২১০ রানের ইনিংস। এই ইনিংস খেলার পথে বিরাট কোহলির সঙ্গে ২৯০ রানের জুটি গড়েন তিনি। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো উইকেটে যেকোনে দলের সর্বোচ্চ রানের জুটি।
ভারতের হয়ে কিশানের পর কেবল কোহলি রান করতে পেরেছেন। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান ৯১ বলে ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন। ওয়ানডেতে এটা তার ৪৪তম সেঞ্চুরি। এ ছাড়া ওয়াশিংটন সুন্দর ৩৭ ও অক্ষর প্যাটেল ২০ রান করেন। শেষ দিকে গিয়ে দ্রুত উইকেট হারায় সফরকারীরা, না হলে সংগ্রহ আরও বড় হতে পারতো।
বাংলাদেশের বোলারদের ওপর দিয়ে এদিন ঝড় বয়ে যায়। বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনকে বেশি পরীক্ষা দিতে হয়েছে। তাসকিন ২ উইকেট পেলেও ৯ ওভারে খরচা করেন ৮৯ রান। এবাদত ৯ ওভারে ৮০ রানে ২ উইকেট নেন। সবচেয়ে কম রান খরচা করেছেন এক উইকেট নেওয়া মুস্তাফিজর রহমান। ১০ ওভারে ৬৬ রান তিনি।
ব্যাটিং ঝড়ের মাঝে সাকিব আল হাসানও ভালো করেছেন। অভিজ্ঞ এই স্পিনার ১০ ওভারে ৬৮ রানে ২ উইকেট নেন। ১ উইকেট নেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ ১০ ওভারে খরচা করেন ৭৬ রান। আফিফ হোসেন ধ্রুব এক ওভারে ১৪ রান খরচা করেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দেন ১১ রান।